‘টোল প্লাজা’ তৈরি হয়ে গিয়েছে অনেক দিন। কিন্তু পরিকল্পনা অনুযায়ী টোল আদায় ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। ফলে পরিত্যক্ত অবস্থায় দীর্ঘ দিন পড়ে রয়েছে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল লিঙ্ক রোডের টোল প্লাজা। অবশেষে সেই টোল প্লাজা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ (এইচডিএ)। শিল্পশহরে সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পর্ষদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও এইচডিএর যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণও এখন থেকে পর্ষদই করবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৯৯৭ সাল নাগাদ মঞ্জুশ্রী মোড় থেকে সিটি সেন্টার হয়ে জাতীয় সড়কে সংযোগকারী ৬৩ কিলোমিটার এই রাস্তা নির্মিত হয়। হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল লিমিটেড (এইচপিএল) গড়ে ওঠার পর এই সড়ক ‘এইচপিএল লিঙ্করোড’ নামেই পরিচিত। ২০০৫ সাল নাগাদ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও এইচডিএ যৌথ ভাবে এই সড়কটিকে প্রশস্ত করে দু’টি লেনের পরিকল্পনা করে। ঠিক হয় বরাদ্দ প্রায় ২৫ কোটি টাকার ৫০ শতাংশ দেবে এইচডিএ এবং বাকি টাকা দেবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় দায়িত্ব অবশ্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষই নেবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১০ সালে এইচপিএল লিঙ্করোড এর সাথেই সিটি সেন্টারের কাছে চারটি ঘর বিশিষ্ট ‘টোল রুম’ তৈরি করা হয়। রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বাবদ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ টোল আদায় করবে বলে ঠিক হয়। যদিও এইচডিএ প্রথম থেকেই টোল আদায়ের বিরুদ্ধে ছিল। উদ্যোগী হননি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষও। তাই দু’বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি ওই টোলপ্লাজা। কারখানার ধুলো ও ঝড়-বৃষ্টিতে ক্রমশই জীর্ণ হয়েছে ‘টোলরুম’গুলি।
এই পরিস্থিতিতে টোলপ্লাজা চালু না করে তা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ। এইচডিএ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য প্রকাশ্যে বলেন, “বোর্ড মিটিংয়ে আমরা ওই টোলপ্লাজা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সাধারণ মানুষ যাতে টোল না দিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে পারেন তাই এই সিদ্ধান্ত।” এই সড়কের যাবতীয় দায়িত্বও এখন থেকে এইচডিএ বহন করবে বলে জানা গিয়েছে। তবে টোল আদায় না করলে রক্ষণাবেক্ষণ কী ভাবে সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে এইচডিএ-র মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক পি উলাগানাথন বলেন, “সড়কটি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ আমরা করব। এজন্য টোল আদায় না করে আমরা সিটি সেন্টারে একটি ট্রাক টার্মিনাস গড়বযা থেকে অর্জিত অর্থ কাজে লাগানো যাবে। তবে ওই চারটি ঘর ভাঙা হবে কি না তা এখনও ঠিক হয়নি।” স্থানীয় বাসিন্দা মিৎসুবিশির কর্মী সুব্রত জানার কথায়, “টোলপ্লাজাটি জীর্ণ হয়ে পড়ে থেকে যে পরিস্থিতি হয়েছিল তার থেকে এই তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভাল। তবে সড়কটি যাতে মেরামত হয় সেটা দেখাটাও জরুরি।” |