পাহাড়ি রাস্তায় বাঁক নিতে গিয়ে সোজা ১০০ ফুট নীচের খাদে আছড়ে পড়ল বাসটি। প্রায় সব যাত্রীই তখন ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২৭ জনের ঘুম আর ভাঙল না। ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। পরে মারা গেলেন আরও চারজন। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১।
আজ ভোরে, মেঘালয়-অসম সীমানায়, জয়ন্তিয়া হিল জেলার তমসেং গ্রামের কাছে ঘটনাটি ঘটে। ২০০৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রায় একই জায়গায়, একই ভাবে খাদে গড়িয়ে পড়েছিল আর একটি বাস। সে বার মারা গিয়েছিলেন ১০ জন।
পূর্ব জয়ন্তীয়া হিলের পুলিশ সুপার এম কে খার জানান, গুয়াহাটি থেকে আগরতলার দিকে যাচ্ছিল বাসটি। ভোর ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে, শিলং থেকে দেড়শো কিলোমিটার দূরে, থংসেং পাহাড়ে বাঁক নিতে গিয়ে চালক উত্তম দেবনাথ নিয়ন্ত্রণ হারান। পাহাড় থেকে খাদে গড়িয়ে পড়ে বাসটি। পুলিশ, দমকল ও স্থানীয় বাসিন্দারা বাস থেকে ৫৮ জনকে বার করেন। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই চালক ও দুই মহিলা-সহ ২৭ জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান চারজন। |
দুর্ঘটনায় জখম ২৭ জনকে পূর্ব জয়ন্তিয়ার ক্ল্যারিয়েট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ দিকে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হরিয়ানার দুই শিশুকে। তাদের নাম মণীশা ও ঝলক। বাবা-মা-ঠাকুরমার সঙ্গে তারা আগরতলা যাচ্ছিল। দুর্ঘটনায় তিন জনেরই মৃত্যু হয়েছে। শিশু দু’টিই তাদের পরিবারের লোকজনকে শনাক্ত করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
২০০৯ সালের দুর্ঘটনার পরেই, বাসের ছাদে মালপত্র বহন করা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা মানাই হত না। এই বাসটির মাথায়ও মালপত্র ঠাসা ছিল। সেই সঙ্গে ৪২ জনের বাসে, যাত্রী ও চালক মিলিয়ে ৫৮ জন ছিলেন। জখম যাত্রীরা জানিয়েছেন, বাসটি বেপরোয়া ভাবে চালানো হচ্ছিল। ত্রিপুরার পরিবহণমন্ত্রী মানিক দে জানান, ঊনকোটি জেলার জেলাশাসকের নেতৃত্বে একটি সরকারি দল ঘটনাস্থলে গিয়েছে। এই এলাকায় প্রায় প্রতি বছরই দুর্ঘটনা ঘটে। সরকারি প্রতিনিধিরা ফিরলে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানা যাবে। ত্রিপুরা সরকার কন্ট্রোল রুম খুললেও সেখান থেকে চালকের নাম ছাড়া আর কোনও কিছুই জানানো হয়নি। আজ সন্ধ্যা নাগাদ জখম আট যাত্রীকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, এই আটজনের মধ্যে ত্রিপুরার বাসিন্দা চারজন। বাকি চারজনের বাড়ি উত্তরপ্রদেশ, কোচবিহার, গুয়াহাটি ও হাইলাকান্দিতে। |