ফলতা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধি-সহ আর্থিক সুবিধার ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার।
ওই অঞ্চলভুক্ত ৫৮টি কারখানার প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিকের স্বার্থে বুধবার কারখানা মালিক, ঠিকাদার এবং শ্রমিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারকে আর্থিক ও আনুষঙ্গিক কিছু সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশেষ আর্থিক এলাকাভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও বাম আমলে ফলতার শ্রমিকেরা আইনসম্মত ভাবে বেতন বা অন্যান্য আর্থিক সুবিধা পেতেন না বলে অভিযোগ শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর। আইনসম্মত ভাবে যাতে শ্রমিকরা আর্থিক সুবিধাগুলি পান, তার ব্যবস্থা করতেই এ দিন ন্যূনতম বেতন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পুজোর বোনাস, বার্ষিক বেতনবৃদ্ধি, এমনকী শ্রমিক পরিবারের জন্য নিখরচায় ইএসআই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পূর্ণেন্দুবাবু জানান।
প্রভিডেন্ট ফান্ড-খাতে এত দিন শ্রমিকদের টাকা বরাদ্দ হত না। এ দিন থেকে দৈনিক প্রভিডেন্ট ফান্ড খাতে টাকা বরাদ্দেরও ব্যবস্থা হয়েছে। দু’তিন মাস অন্তর শ্রমিকদের সেই টাকার পরিমাণ কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেবেন বলে ঠিক হয়েছে। শ্রমিকদের নামের তালিকাও ‘বৈধ’ করতে শ্রমিক ও শ্রমিক-পরিবার পিছু ‘পহেচান কার্ড’ চালু করা হচ্ছে বলে শ্রমমন্ত্রী জানান।
তাঁর বক্তব্য, “১৯৯৩ সাল থেকে রাজ্যের সর্বত্র বলবৎ থাকা শ্রম আইন ফলতার বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকাতেও কার্যকর হবে বলে বিগত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু ফলতায় শ্রম আইন মানাই হত না। এ বার থেকে ওখানকার শ্রমিকদের আর্থিক সব সুবিধাই দেওয়া হবে।” শ্রমিক-স্বার্থ দেখার সঙ্গে ফলতার রাস্তাঘাট-সহ এলাকার সামগ্রিক পরিকাঠামো উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে বলে জানান প্রধান শাসক দল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন। তাঁর বক্তব্য, “গত এক বছর ধরে চেষ্টা করেছি ফলতার বঞ্চিত শ্রমিকদের জন্য আইনসম্মত অধিকার পেতে। ‘শিল্প বাঁচাও, শ্রমিক বাঁচাও’ এই বার্তাটাই শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।” |