রীতিমতো আঁটঘাট বেঁধে ট্রাক নিয়ে পূর্ত দফতরের সামগ্রী লুঠপাট করতে গিয়েছিল জনা কুড়ি দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে কোকওভেন থানা এলাকায় পূর্ত দফতরের গুদামে (স্টক ইয়ার্ড)। টহলদার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় তিন জন। ওই ট্রাকে চেপেই চম্পট দেয় বাকিরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ত দফতরের ওই গুদামে পিচ, পিচের ড্রাম-সহ রাস্তা তৈরির বিভিন্ন উপকরণ মজুত রয়েছে। এ দিন রাত ১২টা নাগাদ পূর্ত দফতরের গুদামের গেটে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করে ট্রাক নিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে জনা ১৭ দুষ্কৃতী। বাইরে পাহারায় ছিল তিন জন। রাতে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের পরিবারগুলিও গুদামের ভিতরেই থাকে। প্রথমে দুষ্কৃতীরা ওই পরিবারগুলির উপরে চড়াও হয়। গয়না, মোবাইল, নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। নিরাপত্তারক্ষীদের হুমকি দেয়, বাধা দিলেই প্রাণে মেরে ফেলা হবে। সেই সময় হঠাৎ কোকওভেন থানার একটি টহলদার জিপ এলাকায় এসে পড়ে। পুলিশকর্মীদের চোখ পড়ে বাইরে থাকা তিন দুষ্কৃতীর দিকে। তারা ধরা পড়ে যায়। খবর যায় থানায়। সেখান থেকে আরও একটি জিপ চলে আসে। সেটি চলে যায় গুদামের অপর দিকে। দু’দিক থেকে পুলিশ গুদামের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করার আগেই ভিতরে থাকা দুষ্কৃতীরা ট্রাকটি নিয়ে গুদাম থেকে বেরিয়ে যায়। পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। স্টেশন ছাড়িয়ে বাঁকুড়া রোড ধরে দ্রুত গতিতে ছুটতে থাকে ট্রাকটি। ডিভিসি ব্যারাজের কাছে থাকা একটি টহলদার জিপকে খবর দেওয়া হয়। জিপে থাকা পুলিশকর্মীরা রাস্তায় লোহার প্রতিবন্ধক ফেলে ট্রাকটিকে আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ট্রাকটি নিয়ম না মেনে বিপজ্জনকভাবে ব্যারাজ দিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, তাদের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দলের বাকিদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
তবে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, দীর্ঘ দিন ধরে খোঁজখবর নিয়েই দুষ্কৃতীরা এ দিন লুঠপাট টালাতে যায়। এর সঙ্গে স্থানীয় দুষ্কৃতীরাও জড়িত বলে মনে করছে পুলিশ। তাদের দাবি, তা না হলে ভিন্ জেলার দুষ্কৃতীদের পক্ষে এ ভাবে ট্রাক নিয়ে দুর্গাপুরে এসে থানার অদূরের সরকারি গুদাম থেকে সম্পত্তি লুঠপাটের চেষ্টা সম্ভব হত না। বুধবার দুপুরে ধৃত তিন দুষ্কৃতীকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। দ্রুত বাকিদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। |