লন্ডন অলিম্পিক থেকে অনেকটা নিঃশব্দেই নিজের শহরে ফিরলেন শিলিগুড়ির দুই গর্ব সৌম্যজিৎ ঘোষ এবং অঙ্কিতা দাস। সৌম্যজিৎ ফিরেছেন সোমবার দুপুরেই, অঙ্কিতা মঙ্গলবার। সৌম্যজিতের ফেরার খবর অবশ্য এ দিন পৌঁছয় ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মার কাছে। শহরের গর্ব এই খেলোয়াড়ের বাড়িতে গিয়ে পুরসভার তরফে ফুলের তোড়া, মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনা জানান তিনি এবং বস্তি উন্নয়ন বিভাগের মেয়র পারিষদ সঞ্জয় পাঠক। সৌম্যজিতের বাড়ি যাওয়ার পথে খবর পান অঙ্কিতাও কয়েক ঘণ্টা আগে শহরে ফিরেছেন। সৌম্যজিতের বাড়ি থেকে এর পর অঙ্কিতার বাড়িতে গিয়েও একই ভাবে তাঁকে সংবর্ধনা জানিয়ে আসেন তাঁরা। তবে এর বাইরে শহরের গর্ব এই দুই খেলোয়াড়কে নিয়ে অবশ্য হইচই লক্ষ করা যায়নি। গ্রেটার শিলিগুড়ি টেবল টেনিস সংস্থা বা নর্থ বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের মধ্যেও ওই দুই অলিম্পিয়ানের ফেরা নিয়ে উৎসাহ দেখা যায়নি। |
ডেপুটি মেয়র বলেন, “ওঁরা দু’জনেই শহরের গর্ব। অলিম্পিকে ওঁরা যে অংশ নিয়েছেন সেটাই বড় ব্যাপার। আগামীতে ওঁরা আরও বড় সাফল্য পাবে বলে আশা করি।” গ্রেটার শিলিগুড়ি টেবল টেনিস সংস্থা বা নর্থবেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, দু’জনেই শহরের গর্ব। অলিম্পিকে যাওয়ার আগেই তারা ওঁদের সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন। এ দিন না গেলেও তারা সকলেই ওঁদের পাশে রয়েছেন। লন্ডন অলিম্পিকে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে ছিটকে যান সৌম্যজিৎ। অঙ্কিতা প্রথম রাউন্ডেই। অলিম্পিকে যোগ দিয়ে শহরে ফিরলেও তাঁদের বাগডোগরা বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে পরিবারের দুই চার জন ছাড়া কেউ ছিলেন না। প্রথমবার অলিম্পিকে সাফল্য না মিললেও পরবর্তীতে কিছু করে দেখানোর জন্য স্বপ্ন দেখা অবশ্য শুরু করেছেন তাঁরা। বস্তুত, এশিয়াডে বা কমনওয়েলথের মতো কোনও প্রতিযোগিতাতেও তাঁরা দু’জনের কেউ এত দিন খেলেননি। তার আগেই অলিম্পিকে সুযোগ পাওয়া এবং অংশ নেওয়া তাদের তাতিয়েছে। এখন থেকে বিদেশে আরও বেশি করে টুর্নামেন্ট খেলতে চাইছেন তাঁরা। তবে আপাতত সামনে ইন্টার ইন্সস্টিটিউশন প্রতিযোগিতা। আগামী ২২ অগস্ট থেকে কলকাতায় শুরু হচ্ছে। সৌম্যজিৎ এ দিন বিকেলেই কলকাতার উদ্দশে রওনা দেন। অঙ্কিতা ২০ অগস্ট যাবেন বলে জানিয়েছেন। সৌম্যজিৎ বলেন, “অলিম্পিকের মতো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। ভবিষ্যতে অলিম্পিকে সাফল্য পেতে সচেষ্ট হব। তার আগে ২০১৪ সালে কমনওয়েলথ গেমস রয়েছে গ্লাসগোতে। তাতে অংশ নিতে চাই। পদক আনতে চাই। সামনে ইন্টার ইন্সস্টিটিউশন প্রতিযোগিতা। আপাতত সে দিকে মন দিতে চাইছি।” তা সেরেই ৩ সেপ্টেম্বর সুইডেনে পিটার কার্লসনের শিবিরে ফিরে যাবেন সৌম্যজিৎ। এই মূহূর্তে টেবল টেনিসে তার বিশ্ব র্যাঙ্কিং ১৬৮। এ বার অলিম্পিকে প্রথম রাউন্ডে ১০৪ নম্বর র্যাঙ্কিং খেলোয়াড় ব্রাজিলের গস্তাভ সুবয়কে ৪-২ গেমে হারিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় রাউন্ডে ৭৭৯ র্যাঙ্কিংয়ে থাকা উত্তর কোরিয়ার কিংবঙ্গ হাউকের কাছে তাকে হারতে হয়েছে বলে জানান। সৌম্যজিৎ জানান, কিংবং বুদ্ধি দিয়ে খেলেছেন। তা ছাড়া নিজের সেরা খেলাটা সে সময় খেলতে পারেননি বলেই মনে হচ্ছে সৌম্যজিতের। অঙ্কিতা বলেন, “অলিম্পিকে অংশ নিয়ে মনে হয়েছিল এটা আমার কাছে বড় সুযোগ। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী ৮৩ নম্বর র্যাঙ্কিংয়ে থাকা স্পেনের সারা অনেক বেশি অভিজ্ঞ মনে হয়েছে। নিজেও ভাল খেলতে পারিনি।” অঙ্কিতাও তাকিয়ে আছেন পরের অলিম্পিকের দিকে। সৌম্যজিতের মতো তাঁরও লক্ষ্য ২০১৪ কমনওয়েলথে সুযোগ করে নেওয়া। |