টেমসের তীরে গ্রেটেস্ট শো
লুইস আর আমার সাফল্যই তাতাচ্ছে বোল্টকে
পুরুষদের একশো মিটার ফাইনাল নিয়ে যতটা হইচই হয়েছিল, ততটাই আকর্ষণীয় হল রেসটা। এটাই আমার দেখা সেরা একশো মিটার দৌড়।
আমার বই ‘গোল্ড রাশ’-এর জন্য বছরদুয়েক আগে বোল্টের একটা সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এত কম সময়ের মধ্যে বিশ্বরেকর্ডের মালিক, অলিম্পিক আর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ও কী ভাবে নিজেকে মোটিভেট করবে? বোল্ট আমাকে বলেছিল ওর মোটিভেশনের কোনও অভাব হবে না। কারণ আরও এক বার অলিম্পিক সোনা না জিতলে ও নিজেকে আমার বা কার্ল লুইসের মতো কিংবদন্তি ভাববে না।
বোল্টের আগে একমাত্র লুইস দু’বার একশো মিটারে সোনা জিতেছিল। চারশো মিটারে দুটো সোনা শুধু আমিই জিতেছি। বোল্ট যে এ বার নিজের খেতাব ধরে রাখতে পারবে না তার একটা বড়সড় সম্ভাবনা ছিল বলেই লন্ডনের একশো মিটার নিয়ে এতটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। রেসটা হতাশ করেনি। বোল্ট তো নয়ই।
রবিবার একশো মিটারে কে সোনা জিতবে, বোল্ট না ব্লেকএই প্রশ্নের পাশাপাশি আলোচনার আরও একটা বিষয় ছিল। আর কারা পদক জিতবে? দাবিদারও ছিল বেশ কয়েকজন। আবেগের দিক থেকে টাইসন গে ফেভারিট ছিল। ২০০৭-এ একশো আর দুশো মিটার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ছিল গে। সর্বকালের দ্রুততম পুরুষদের তালিকায় দু’নম্বরে থাকা গে গোটা কেরিয়ারেই চোট নিয়ে ভুগেছে। এই রেসে গে সম্ভবত সবচেয়ে খারাপ জায়গায় শেষ করলচতুর্থ হয়ে। পদকের কাছে এসেও পদক পেল না।
এ বারের ব্রোঞ্জজয়ী জাস্টিন গ্যাটলিন ২০০৪ গেমসে একশো মিটার চ্যাম্পিয়ন ছিল। ২০০৬-এ ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়ে চার বছর নির্বাসিত হয়ে যায়। অনেকেই ভেবেছিল ও আর ট্র্যাকে ফিরতে পারবে না। ফিরলেও বিশ্বমানের ফর্মে ফিরতে পারবে না। আমিও তাই ভাবতাম। কিন্তু গত জুন মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক ট্রায়াল জিতেছে জাস্টিন। রবিবারের রেসেও প্রথম থেকেই ওর পদকের সম্ভাবনা ছিল। একটা সময় মনে হচ্ছিল বোল্ট বা ব্লেক কোনও ভুল করলে জাস্টিন সোনাও পেয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি একটা ভয়ও ছিল, জাস্টিন জিতলে ডোপ কেলেঙ্কারিতে বিধ্বস্ত একজন চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। লন্ডনের পারফরম্যান্স দিয়ে অ্যাথলিট হিসেবে নিজেকে আবার প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে জাস্টিন। এ বার মানুষ হিসেবেও নিজেকে কলঙ্কমুক্ত করার সময় এসেছে। নির্বাসনের পরেও ও যে সাফল্য পেল, সেটাকে ও খেলাধুলোর উন্নতির কাজে লাগাতে পারে। বাচ্চাদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে ওদের সতর্ক করতে পারে।
একশো মিটারের আকর্ষণ শুধু ফাইনালটাতেই ছিল না। ডোয়েন চেম্বার্স আর অ্যাডাম জেমিলি যেমন সেমিফাইনালে উঠেও ফাইনালে যেতে পারল না। চেম্বার্সও ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়ে নির্বাসিত হয়ে ফিরে এসেছে। নিজের কাজের জন্য ক্ষমা চেয়েছে। অনুশোচনাও দেখিয়েছে।
অন্য দিকে মাত্র আঠারো বছরের জেমিলি অল্পের জন্য ফাইনালে উঠতে পারল না। নিজের সেমিফাইনালে ব্লেক আর গে-র পরে তিন নম্বরে শেষ করল। ওর বয়সী একজন অ্যাথলিটের জন্য এটা অসাধারণ ফল। জেমিলির পরিণতিবোধ দেখে আমার খুব ভাল লেগেছে। ১৯৯২ সালে লিনফোর্ড ক্রিস্টি সোনা জেতার পরে গত কুড়ি বছরে ব্রিটেন থেকে প্রচুর প্রতিভাবান তরুণ স্প্রিন্টার এসেছে। কিন্তু ড্যারেন ক্যাম্পবেল আর চেম্বার্সকে বাদ দিলে বড় টুর্নামেন্টে পদকের দাবিদার হতে পারার মতো বিশ্বমানের স্প্রিন্টার তৈরি করতে পারেনি ব্রিটেন। অবশ্য গত দু’বছরে ব্রিটিশ অ্যাথলেটিক্সে অনেক বদল এসেছে। ব্রিটিশ অ্যাথলিটরা এখন শুধু পদকই জিতছে না, সোনার পদক জিতছে। গত এক দশকের সাধারণ মানের পারফরম্যান্সের জায়গায় এসেছে জেতার একটা খিদে। এই নতুন পরিবেশে নিজেকে বিশ্বমানের অ্যাথলিট করে তোলার খুব ভাল সুযোগ পাচ্ছে জেমিলি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.