|
|
|
|
|
টেমসের তীরে গ্রেটেস্ট শো |
ইতিহাসকে পিছনে ফেলতে তৈরি বোল্ট
সংবাদসংস্থা • লন্ডন |
|
ইতিহাসের হাতছানি।
স্প্রিন্টার কার্ল লুইসকে পিছনে ফেলা।
সর্বকালের সেরা স্প্রিন্টার। জীবন্ত কিংবদন্তি।
লন্ডনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে আটচল্লিশ ঘণ্টা পর যখন দুশো মিটারের রেসে দৌড়তে নামবেন উসেইন বোল্ট, এই তিনটে লাইন যে তাঁর মাথায় ঘুরবে সেটা বোধহয় লিখে ফেলাই যায়। কারণ, লন্ডনে একশোর পর দু’শো মিটারেও যদি সোনা জিতে ফেলেন বোল্ট, স্প্রিন্ট দুনিয়ায় তিনিই হয়ে যাবেন সর্বকালের সেরা। অলিম্পিকের ইতিহাসে ‘ডাবল’ (একশো ও দুশো মিটারে সোনা) করার কৃতিত্ব আজ পর্যন্ত আছে ন’জনের। চার বছর আগের বেজিংয়ে যে রেকর্ড বোল্টের আছে। আর তাঁর আগে শেষ আছে ’৮৮-র সোলে কার্ল লুইসের। কিন্তু পরপর দু’টো অলিম্পিকে ‘ডাবল’? ওটা আজও অধরা। |
|
২০০ মিটার সেমিফাইনালে উঠে ‘কেউ আমাকে হারাতে পারবে না’ |
এবং বৃহস্পতিবার সেই বিরল কৃতিত্বের মুখোমুখি বোল্ট। পারবেন তিনি? পারলে, স্প্রিন্ট দুনিয়ায় লুইস-জেসি ওয়েন্সরা চলে যাবেন পিছনের বেঞ্চে। বোল্ট নিজে লিখবেন নতুন ইতিহাস। নিজেকে বলতে পারবেন, জীবন্ত কিংবদন্তি। আজ হিটে জিততে বিশেষ কোনও সমস্যা হয়নি। ২০.৩৯ সেকেন্ড সময় করে সেমিফাইনালে উঠে গেলেন তিনি। বুধবার সেমিফাইনাল।
প্রস্তুতি বোল্টের আছে। থাকবে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের যুদ্ধ নিয়ে যেন একই সঙ্গে পাল্টা চাপ এবং বিনোদনের ঝুলি নিয়ে আগাম হাজির জামাইকান কিংবদন্তি। যিনি মনস্তাত্বিক চাপ তৈরি করছেন এক নম্বর প্রতিপক্ষের উপর। নামটা যে লন্ডনে একশো মিটার দৌড়ে রুপোজয়ী ইয়োহান ব্লেক, সেটা বলার জন্য পুরস্কার নেই। আর ব্লেককে তাঁর সাবধানবাণীটা এ রকম: দু’শো মিটার নিয়ে স্বপ্ন দেখো না। ওটা আমার পছন্দের ইভেন্ট। ওখানে বাজি আমিই মারব।
“ব্লেককে বলেও দিয়েছি। দু’শো মিটারে ও আমাকে আবার হারাবে, সেটা হতে দেব না। ওটা আমার সবচেয়ে পছন্দের ইভেন্ট,” বলেছেন বোল্ট। ব্লেক পাল্টা কী বলছেন জানার উপায় নেই। কিন্তু লুইসের কটাক্ষ থাকছে। যিনি বোল্টের ‘বাড়বাড়ন্ত’ দেখে দিনকয়েক আগেই শুনিয়ে রেখেছেন, “ও যতই ভাল হোক, করে তো দেখাতে হবে। ই-মেল করে তো আর কেউ ওকে পদক পাঠাবে না।”
জামাইকান কিংবদন্তি সে সব শুনছেন? সহজ উত্তর, পাত্তাই দিচ্ছেন না। উল্টে আছেন নিজের মেজাজে, এবং অদ্ভুত সব কাণ্ডকারখানায় তিনি আপাতত দুনিয়াকে চমকাতে ব্যস্ত। কখনও স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসনের কাছে কাকুতি-মিনতি করছেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ট্রায়ালে তাঁকে ডাকার জন্য! দাবি তুলছেন, একবার সুযোগ পেলেই দেখিয়ে দেবেন ফুটবলেও তিনি কতটা দক্ষ। কখনও আবার দু’শো মিটারের যুদ্ধে নামার বাহাত্তর ঘণ্টা আগে গলায় কাল্পনিক পদক ঝুলিয়ে অলিম্পিক স্টেডিয়ামের পোডিয়ামে উঠে দেখে নিচ্ছেন, দ্বিতীয় সোনা পেলে অনুভূতিটা ঠিক কেমন হবে। |
|
বোল্টে মজে লন্ডন। তাঁকে সামনে পাওয়া যায়নি। অগত্যা কাগজের ছবিই তোলা হচ্ছে। ছবি: উৎপল সরকার। |
দ্বিতীয় কাজটা গত রাতেই সেরে ফেলেছেন বোল্ট। চমকটা তোলা ছিল মঙ্গলবার সকালের জন্য। যখন সাংবাদিকদের হঠাৎ বলে বসলেন, লন্ডনে তিনি বেশ কিছু দিন আছেন। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ম্যানেজার ফার্গুসন যদি তাঁকে একবার ট্রায়ালে ডাকেন, দু’বার ভাববেন না। টুইটারে তাঁর নাকি কথা হয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ফুটবলার রিও ফার্দিনান্দের সঙ্গে। ফার্দিনান্দই নাকি কথা দিয়েছেন, সব ব্যবস্থা করে দেবেন। “লোকে ভাববে ইয়ার্কি মারছি। কিন্তু ফার্গুসন যদি বলেন, চলে এসো ট্রায়ালে, তা হলে না বলা কঠিন হবে,” বলেছেন সাড়ে ছ’ফুটের জামাইকান। বিশ্বের দ্রুততম ব্যক্তির এমন মন্তব্যের পর লন্ডনের কাগজগুলোর আর বসে থাকা সম্ভব? শিরোনাম তো বটেই, কোথাও কোথাও বোল্টকে টিমে রাখলে ফার্গুসনের ফর্মেশন কেমন দাঁড়াতে পারে সে সবই ছাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
লন্ডনে একশো মিটার তিনি দৌড়েছেন ৯.৬৩ সেকেন্ডে। সোনাও জিতেছেন। ফুটবল মাঠে তাঁর গতি কেমন হতে পারে, এর পর সন্দেহ থাকার কথা নয়। কিন্তু আশ্চর্য হতে হবে তাঁর পরের মন্তব্যে। “আমি চ্যালেঞ্জটাই নিতে পারতাম না যদি ভাল ফুটবলার না হতাম। দৌড়ে বাকিদের তো পিছনে ফেলবই, কিন্তু ফুটবলটাও ভাল খেলব বলেই আমার ধারণা,” বলে দিয়েছেন বোল্ট।
‘জীবন্ত’ কিংবদন্তি হওয়ার প্রাক্-মুহূর্তে তাঁর মতো এমন অদ্ভুত ভাবে জীবনকে ক’জন দেখতে পারেন, জানার উপায় নেই। তবে ক’জনই বা পারেন উসেইন বোল্ট হতে?
|
|
জেসি ওয়েন্স (১৯৩৬)
অলিম্পিক সোনা:
১০০, ২০০, ৪ * ১০০ রিলে, লং জাম্প |
কার্ল লুইস (১৯৮৪-১৯৯৬)
অলিম্পিক সোনা:
১০০, ২০০, ৪ * ১০০, লং জাম্প (১৯৮৪)
১০০, লং জাম্প (১৯৮৮)
৪ * ১০০, লং জাম্প (১৯৯২)
লং জাম্প (১৯৯৬) |
উসেইন বোল্ট (২০০৮-২০১২)
অলিম্পিক সোনা
১০০, ২০০, ৪ * ১০০(২০০৮)
১০০, ? (২০১২) |
|
|
|
|
|
|