দুই শরিকে চাপানউতোর
খড়্গপুরে তৃণমূলের পুরবোর্ডকে চরম হুঁশিয়ারি কংগ্রেসের
তৃণমূল পরিচালিত খড়্গপুর পুরবোর্ডকে ‘চরমপত্র’ দিল কংগ্রেস। দলীয় কাউন্সিলররা পুরপ্রধান জহরলাল পালকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন,‘সতর্ক হন। না-হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।’ কংগ্রেসের এই পদক্ষেপ নিয়ে অনাস্থার জল্পনা উস্কে দিয়েছে। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পান্ডে বলেন, “আমরা পুরপ্রধানকে সতর্ক হতে বলেছি। এই সময়ের মধ্যে বেশ কিছু অনৈতিক কাজকর্ম হয়েছে। অনৈতিক কাজ হলে চুপ করে বসে থাকব না।” তবে কি অনাস্থা আনবে কংগ্রেস? শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাসের মন্তব্য, “এ নিয়ে এখনই কিছু বলছি না। ১৯ মাস শর্ত ছাড়াই আমরা বাইরে থেকে তৃণমূলকে সমর্থন করেছি। তবে অন্যায় দেখলে চুপ করে বসে থাকতে পারব না।” পুরপ্রধান অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “শহরের উন্নয়নে গতি এসেছে। এই পরিবেশ ব্যাহত করতেই চক্রান্ত চলছে।”
১৫ জন কংগ্রেস কাউন্সিলরের সই-সহ ‘চরমপত্র’ দেওয়া হয়েছে পুরপ্রধানকে। ৩ পাতার ‘চরমপত্রে’ পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেছেন। সোমবার বিকেলে এই পত্র জহরবাবুর কাছে পৌঁছেছে। ২০১০ সালের নির্বাচনে জিতে খড়্গপুর পুরসভায় ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। তার আগে একটানা ১৫ বছর পুরবোর্ড ছিল কংগ্রেসের দখলে। ওই বছরের ১৮ জুন কংগ্রেসের সমর্থনে পুরবোর্ড গঠন করে তৃণমূল। পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষনের অভিযোগ এনে গত বছর অবশ্য বোর্ডের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে কংগ্রেস। ৩৫টি আসনের পুরসভা খড়্গপুর। ২০১০ সালের নির্বাচনে বিন্যাস ছিল তৃণমূল ১৫, কংগ্রেস ১২, সিপিএম ৩, সিপিআই ৩, বিজেপি ১, নির্দল ১। পরে এই সমীকরন পাল্টেছে। দুই সিপিএম কাউন্সিলর কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসের দখলে এখন ১৪টি ওর্য়াড। ফলে, কংগ্রেস অনাস্থা এলে তৃণমূলের পক্ষে বোর্ড ধরে রাখা সহজ হবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যে পুরসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গেও দেখা করেছেন দলীয় কাউন্সিলররা।
কংগ্রেস-শিবিরের দাবি, নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থন তাদের দিকে রয়েছে। পুরপ্রধানকে যে লিখিত ‘চরমপত্র’ দেওয়া হয়েছে, সেখানে একমাত্র নির্দল কাউন্সিলর সত্যদেও শর্মার সই রয়েছে। খড়্গপুরে আবার তৃণমূলেও ‘দ্বন্দ্ব’ রয়েছে। একদিকে জহরলাল পালের অনুগামীরা। অন্যদিকে যুবনেতা দেবাশিস চৌধুরীর অনুগামীরা। গত ১৮ জুন পুরবোর্ডের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানেও ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে আসে। দলের ১৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে পুরপ্রধান জহরলাল পাল-সহ ৭ জন অনুষ্ঠানে হাজির হন। উপ-পুরপ্রধান তুষার চৌধুরী-সহ বাকি ৮ জন আসেননি। অনাস্থা আনলে এই পরিস্থিতিরও সুযোগ নিতে চাইবে কংগ্রেস।
ঠিক কী কী অভিযোগ তুলছে কংগ্রেস? দলীয় নেতৃত্বের মতে, পুরসভার কাজে স্বচ্ছতা নেই। টেন্ডার ছাড়াই একের পর এক কাজ হচ্ছে। বিভিন্ন ফর্মের দাম বাড়ানো হয়েছে। পুরকর বাড়ানো হচ্ছে। শহরবাসীর উপর ‘বোঝা’ চাপছে। শহরে জলকষ্ট দূর করতে রাজ্য সরকার ‘স্পেশাল ফান্ডে’ ১ কোটি ৮৪ লক্ষ ৩ হাজার ২৯৮ টাকা দিয়েছিল। বরাদ্দ অর্থে টেন্ডার ছাড়াই ১৬টি গভীর নলকূপ তৈরি হয়েছে। কয়েক মাস আগে ৫ লক্ষ টাকার ইলেক্টট্রিক সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। অথচ, এই সরঞ্জামে কী হল, তা কেউ জানে না। কংগ্রেস কাউন্সিলর পারমিতা ঘোষ বলেন, “দুর্নীতি-স্বজনপোষণ হলে প্রতিবাদ হবেই।” একধাপ এগিয়ে শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাসের বক্তব্য, ‘‘খড়্গপুরের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। পুরসভা কাজ করছে না। এ ব্যাপারে আমরা বেশ কয়েকবার পুর-কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। পরিস্থিতি পাল্টায়নি।”
রেলশহরে দুই জোট শরিকে চাপানউতোর চলছেই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.