পশ্চিমে ডিওয়াইএফের সম্মেলন
জেলা সম্পাদকের দৌড়ে দীপক-পুত্র
ডিওয়াইএফের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকের পদ থেকে সম্ভবত সরে যাচ্ছেন কমল পলমল। নতুন সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। দৌড়ে রয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের পুত্র সুদীপ্ত সরকার। তিনি এখন সিপিএমের যুব সংগঠনের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। এই জল্পনা নিয়ে অবশ্য সরাসরি মন্তব্য করেননি কমল। তিনি বলেন, “যা হবে সম্মেলনের মধ্যে দিয়েই হবে।”
আগামী ১১ অগস্ট থেকে মেদিনীপুরে শুরু হবে ডিওয়াইএফের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলন। প্রায় পাঁচশো প্রতিনিধি যোগ দেবেন। যার মধ্যে ৬০ জন যুবতী। সম্মেলন শুরুর দিনই শহরের কলেজ মোড়ে প্রকাশ্য সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। উপস্থিত থাকবেন মহম্মদ সেলিম, আভাস রায়চৌধুরী। ইতিমধ্যে সভার সমর্থনে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানে বক্তা হিসেবে নাম রয়েছে দীপক-পুত্রের। তাঁকে সভার সভাপতি করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে যুব সংগঠনের জেলা সম্পাদকের নাম। তবে জেলা সভাপতি জয়ন্ত কয়োড়ীর নাম নেই। পোস্টারে দীপক-পুত্রের নাম থাকায় তিনিই নতুন জেলা সম্পাদক হবে বলে মনে করছেন অনেকে। সাধারণত, সম্মেলন শেষে প্রকাশ্য সমাবেশ হয়। এ বার প্রথম দিনেই তা হচ্ছে। ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক-পুত্র সুদীপ্তর মতে, “কেউ শুরুতে করে। কেউ শেষে। সংগঠনের মধ্যে আলোচনার প্রেক্ষিতেই সম্মেলনের শুরুর দিন প্রকাশ্য সমাবেশের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
রাজ্যে পালাবদলের আগে জেলা একাধিকপত্য ছিল সিপিএমের। এখন কমবেশি সর্বত্রই তৃণমূলের প্রভাব বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে লোকাল ও জোনাল স্তরের সম্মেলন করতে গিয়ে হোঁচট খেতে হয়েছে ডিওয়াইএফের জেলা নেতৃত্বকে। পরিস্থিতি ‘প্রতিকূল’ থাকায় বিভিন্ন জোনাল কমিটির সম্মেলন ‘গোপনে’ মেদিনীপুরে করতে হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে কমল পলমল ও সুদীপ্ত সরকার।
সমস্যার কথা মেনে জেলা সম্পাদক বলেন, “আক্রমণ ছিল। নজরদারি ছিল। তার মধ্যেই ১৭৩টি লোকাল কমিটির সম্মেলন, ৩৩ টি জোনাল কমিটির সম্মেলন হয়েছে। শত আক্রমণ, হুমকি, মিথ্যা মামলার পাহাড় ডিঙিয়ে কমরেডরা এগিয়ে যাবেন।” এখন ডিওয়াইএফের জেলা কমিটির সদস্য সংখ্যা ৯৩। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সংখ্যা ১৮। সবমিলিয়ে সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ লক্ষ। তবে এ বার সদস্য সংখ্যা কিছুটা কমতে পারে। দলীয় সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ হয়েছে।
২০০৬ সালে সাঁকরাইলের কুলটিকরি সম্মেলন থেকে ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক হয়েছিলেন কমল। ২০০৮ সালে চন্দ্রকোনা টাউনের সম্মেলনেও তাঁকে সম্পাদক করা হয়। তবে এ বার সম্ভবত তিনি এই পদ থেকে সরে যাচ্ছেন। এখন তিনি সিপিএমের খড়্গপুর গ্রামীণ ১ জোনাল কমিটির সম্পাদকও। যুব নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, কমল পলমলকে জোনাল সম্পাদক করে তাঁর জায়গায় জেলা সম্পাদকের পুত্রকে বসানোর ‘পরিকল্পনা’ আগেই শুরু হয়েছে। জোনাল সম্পাদক সহজে হননি কমল। দীপক সরকারই তাঁকে ‘সাহায্য’ করেন। খড়্গপুর গ্রামীণ ১ জোনাল সম্মেলনে এ বার ভোটাভুটি হয়েছে। সম্মেলনের শুরুতে দলের ‘অফিসিয়াল প্যানেল’ জমা দেওয়া হয়েছিল আগের সম্পাদক মিহির পাহাড়িকে সম্পাদক রেখে। পরে কয়েকজন পাল্টা প্যানেল দেন কমলকে সম্পাদক করে। দীপকবাবুর উপস্থিতিতে ভোটাভুটির সিদ্ধান্ত হয়। ৯২ জন ভোট দেন। মাত্র ২টি ভোটে জয়ী হয়ে কমলের প্যানেল।
এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। দলেরই একাংশের মতে, যে সব স্তর পেরিয়ে জেলা কমিটির শীর্ষে পৌঁছতে হয়, দীপক-পুত্রকে তা পেরোতে হয়নি। আবার অনেকের বক্তব্য, যুব সংগঠনের সঙ্গে দীপকবাবুদের সরাসরি সম্পর্ক নেই। দীপক-পুত্রের এই ‘উত্তরণ’ স্বাভাবিক ভাবেই হয়েছে। ডিওয়াইএফের জেলা সম্মেলন নিয়ে মঙ্গলবার সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক হয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এখানেও কমল পলমলের পাশে ছিলেন সুদীপ্ত সরকার। তবে জেলা সম্পাদকের দৌড়ে জয়ন্ত মজুমদার-সহ আরও কয়েকজন যুব নেতার নাম রয়েছে। এক যুব নেতার বক্তব্য, “সিদ্ধান্ত শেষ মুহূর্তেও বদলাতে পারে। ২০০৬-র সম্মেলনে সমর মুখোপাধ্যায়ের জায়গায় গোপাল প্রামাণিক জেলা সম্পাদক পদের দাবিদার ছিলেন। সে বার কমল পলমলকে সম্পাদক করা হয়। এ বার কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা থাকছেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.