এক দিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে শস্যের ফলন মার খাচ্ছে বেশ কয়েকটি রাজ্যে। অন্য দিকে প্রবল বৃষ্টি আর ধসে বিপর্যস্ত চার রাজ্যের মানুষ থেকে তীর্থযাত্রীরা। উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টি, হড়পা বান ও ধসে আগেই প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩৪ জন। এ বার সেই তালিকায় জুড়ল কেরল, কর্নাটক আর মধ্যপ্রদেশের নাম। প্রবল বর্ষণে কোথাও প্রাণহানি হয়েছে, কোথাও থমকে গিয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। তবে বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রবল বর্ষণ কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে বৃষ্টির অভাবে ধুঁকতে থাকা কর্নাটককে।
মঙ্গলবারই বন্যা-বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান জানান, গত দু’দিনে সেখানে অন্তত ১১ জন মারা গিয়েছেন। তার মধ্যে সোমবার রাতেই কোলারে দেওয়াল চাপা পড়ে মারা যান ৪ জন, ভোপালেও ৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বন্যার জেরে গত সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছিল ৯ জনের। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা কুড়ির বেশিও হতে পারে, আশঙ্কা করছে প্রশাসন। আজ টানা বৃষ্টির জেরে ভোপালে বিশেষ সতর্কতা জারি হয়েছে, বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু রাজ্য সড়কও। সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার করে দুর্গত এলাকা থেকে মানুষজনকে সরানো হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। তবে তার মধ্যেই নতুন করে বন্যার আশঙ্কা বাড়িয়ে বিপদসীমা দিয়ে বইছে নর্মদা, বেতোয়া এবং তাওয়া নদী।
কেরলের কোঝিকোড়ে ধসে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। বৃষ্টি আর হড়পা বানের জেরে রাজ্যের কান্নুর জেলায় ইরিট্টি জনপদ পুরোপুরি জলের তলায়। এমনকী, নদী-জনপদ মিশে যাওয়ায় স্থানীয় পাজহাসি বাঁধের লকগেট পর্যন্ত খোলা সম্ভব হচ্ছে না। প্রশাসন জানিয়েছে, দুর্গতদের নিরাপদ এলাকায় সরানো হয়েছে, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন। এ ছাড়াও নৌ বাহিনীর উদ্ধারকারী দল কোঝিকোড় এবং ইরিট্টির উদ্দেশে রওনা হয়েছে। তবে মঙ্গলবারও কেরলের দুর্গত এলাকাগুলিতে টানা বৃষ্টি হওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছে।
কর্নাটকে প্রবল বর্ষণে ব্যাহত হয়েছে রেল ও সড়ক যোগাযোগ। ধসের জেরে বেঙ্গালুরু থেকে ম্যাঙ্গালোর রেল যোগাযোগ বিপর্যস্ত, বন্ধ রাখতে হয়েছে ম্যাঙ্গালোরগামী কয়েকটি রাজ্য সড়কও। উত্তর কন্নড় জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ সব থেকে বেশি। সম্প্রতি কর্নাটকের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, চার দশকের মধ্যে এ বছরই রাজ্যে সব থেকে কম বৃষ্টি হয়েছে, খরা পরিস্থিতিও ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। সেই অবস্থায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে রাজ্যে। জল জমে কয়েকশো একর জমিতে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, পানীয় জলের সঙ্কট হয়তো এড়ানো সম্ভব হবে। কারণ সোমবার থেকে টানা বৃষ্টিতে কুর্গ, শিমোগা, হাসান ও চিকমাগালুরের জলাধার ভর্তি হয়ে গিয়েছে। তবে উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। বার বার ধসের কবলে পড়ছে উত্তর কাশীও। |