মেঘালয়ের গারো জঙ্গি সংগঠন, জিএনএলএ-র কারাবন্দি চেয়ারম্যান চ্যাম্পিয়ন সাংমা শান্তি আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছেন। গত বছর থেকে বাংলাদেশে নজরবন্দি থাকা চ্যাম্পিয়নকে গত সপ্তাহেই সরকারি ভাবে ‘গ্রেফতার’ করেছে মেঘালয় পুলিশ। বন্দি চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে দেখা করার পর তার আইনজীবী জানান, শান্তি আলোচনার নিয়মকানুন সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন। তবে এখনও ভাবনাটি প্রাথমিক স্তরে রয়েছে।
গত দু’বছর ধরে রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনকে নাজেহাল করে রেখেছে জিএনএলএ। বিএসএফ, সিআরপিএফের কোবরা বাহিনী, পুলিশের সোয়াট কম্যান্ডো যৌথভাবে, দিনের পর দিন অভিযান চালিয়েও জিএনএলএ-র বিরুদ্ধে সফল হয়নি। জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে এসে বহু পুলিশ মারা গিয়েছে এই গারো জঙ্গি গোষ্ঠীর হাতে। এরই মধ্যে, গত নভেম্বরে বাংলাদেশের হাওলাঘাটে নজরবন্দি হন চ্যাম্পিয়ন।
তবে মেঘালয় পুলিশের প্রাক্তন ডিএসপি চ্যাম্পিয়ন সাংমা সংগঠন গড়লেও দল পরিচালনার ভার বহুদিন ধরেই সেনাধ্যক্ষ সোহন ডি শিরার হাতে রয়েছে। সোহনের নেতৃত্বেই গারো জঙ্গিরা একের পর এক নাশকতা, হত্যা, অপহরণ চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় চ্যাম্পিয়নের শান্তির ‘ভাবনা’ রাজ্য সরকারের কাছে সুখবর হলেও পুলিশের ধারণা, শান্তি আলোচনার সিদ্ধান্ত বন্দি চ্যাম্পিয়নের একার। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ, দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, অস্ত্র ব্যবহার, হত্যা, অপহরণ, পুলিশ অফিসার পদে থেকে পালিয়ে জঙ্গি সংগঠন তৈরি-সহ বহু অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বাঁচার পথ বন্ধ। সেই সঙ্গে, কার্যত ৯ মাস ধরে আটক থেকে ভেঙেও পড়েছে জিএনএলএ-র চেয়ারম্যান। ঘরের টানে কাতর চ্যাম্পিয়ন নিয়মিত ফেসবুক করার নেশাতেই বাংলাদেশ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের নজরে পড়ে যান। এখন শান্তির পথে হেঁটে শাস্তির হাত থেকে বাঁচা ও পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়াই চ্যাম্পিয়নের কাছে একমাত্র সম্মানজনক পথ। কিন্তু সোহনকে বারবার সরকারের তরফে শান্তির প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি তা মানেননি। সোহন কট্টর মানসিকতার সংগ্রামপন্থী নেতা। এই অবস্থায় চ্যাম্পিয়ন একা শান্তির জন্য এগোলেও জিএনএলএ-র সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত সরকারের স্বস্তির কোনও অবকাশই নেই। |