বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া পুত্রের খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে আমরণ অনশনে বসছেন পিতা। করিমগঞ্জ জেলার রিঙ্কু মালাকার মুখ্যমন্ত্রীকে চরমপত্র পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, ১৪ অগস্ট তিনি জেলাশাসকের অফিসের সামনে অনশন শুরু করবেন। তবে পুলিশের দাবি, মামলার তদন্ত চলছে। এক ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে আরও গ্রেফতার হতে পারে।
রিঙ্কুবাবু জানান, তাঁর ছেলে রত্নদীপ আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগে পড়ত। গত বছরের ১৭ অগস্ট তাঁর সেমেস্টার পরীক্ষা ছিল। হল থেকে বেরোতেই সে ছাত্রদের গোষ্ঠীসংঘর্ষের শিকার হয়। তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের ছেলেরা তাকে বেদম পেটায়। এক মাস শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও গুয়াহাটির এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। ১৯ সেপ্টেম্বর সে মারা যায়। কিন্তু ওই এক মাসে পুলিশ হামলার ঘটনার তদন্তেই নামেনি বলে রিঙ্কুুবাবুর অভিযোগ। তাঁর কথায়, ১৮ অগস্ট তিনি থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু রত্নদীপের মৃত্যুর পর ছাত্রছাত্রী ও জনতার চাপে মাত্র একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনকী, কারা তাকে প্রচণ্ড পিটিয়েছে, মারা যাওয়ার আগে একটি কাগজে তা লিখে যায় রত্নদীপ। পুলিশকে সে কাগজ দেওয়া হলেও তাদের একবারের জন্যও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি, বলেন রিঙ্কুুবাবু। তাঁর আরও অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় নিযুক্ত তদন্ত কমিটি এই ঘটনায় দশ জনকে দোষী বলে চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করলেও বাকি ন’জনকে থানায় পর্যন্ত ডেকে পাঠায়নি।
পরে তিনি মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার বরাক উপত্যকার তিন প্রতিনিধিকে পুত্রের খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে স্মারকপত্র পাঠান। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে ১৪ অগস্ট থেকে করিমগঞ্জ জেলাশাসকের অফিসের সামনে তাঁর আমরণ অনশনে বসার সিদ্ধান্ত। রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা হারিয়ে তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি জানান।
এ দিকে, কাছাড়ের পুলিশ সুপার দিগন্ত বরা জানান, পুলিশ যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটির তদন্ত করছে। প্রথমে একজন এএসআই-কে তদন্তকারী অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করা হলেও পরে একজন সাব-ইন্সপেক্টরকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। রত্নদীপের লেখা চিরকুট এবং তাঁর হাতের লেখা অন্যান্য কাগজ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এখনও এসে পৌঁছয়নি। |