‘অব্যবস্থা’র প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে সরব ট্রাক মালিকেরা
ধর্মঘটের প্রস্তুতি হুগলি জেলায়
রাজ্যে ট্রাক চলাচল নিয়ে ‘অব্যবস্থা’র শিকার হচ্ছেন ট্রাক মালিকরাএই অভিযোগে আগামী ২১ অগস্ট থেকে রাজ্য জুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রাক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ‘ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’। পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করছে তারা। জেলায় জেলায় ধর্মঘটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাক মালিকেরা।
হুগলির ট্রাক মালিকেরা গত শনিবার এ নিয়ে বৈঠকে বসেন। শ্রীরামপুরের মাহেশে ওই বৈঠকে জেলার ২২টি সংগঠনের সদস্যরা যোগ দেন। আরামবাগ, কামারপুকুর, তারকেশ্বর, চুঁচুড়া, চন্দননগর, মগরা, উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, রিষড়া-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গার শ’তিনেক ট্রাক মালিক বৈঠকে যোগ দেন।
ধর্মঘটের সিদ্ধান্তের পিছনে ট্রাক মালিকদের অভিযোগ ট্রাকে নিয়মের থেকে বেশি মালপত্র তুলছে (ওভারলোড) কারখানাগুলি। যদিও, এ জন্য পুলিশ ট্রাকগুলির থেকে জরিমানা আদায় করছে। এটা আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। ট্রাক মালিকদের বক্তব্য, চালকেরা অতিরিক্ত মালপত্র তুলতে বাধ্য হন। ‘ওভারলোডিং’ বন্ধে রাজ্য ব্যবস্থা নেয় না। কোনও কারখানাকে কিছু বলা হয় না। শুধু ট্রাকের জরিমানা করা হয়। জরিমানার অর্থ সরকারের কোষাগারে ঠিকঠাক পৌঁছয় কিনা, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন এই পরিবহণ-শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকজন।
ট্রাক মালিকদের আরও দাবি, পরিবহণ দফতরের নতুন নিয়ম-কানুনের ফলে গত কয়েক মাস ধরে পুরনো গাড়ি কেনাবেচায় নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁদের। সমস্যা হচ্ছে চালকদের লাইসেন্স নবীকরণের ক্ষেত্রেও। পরিবহণ দফতরের অফিসারদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও তুলছেন তাঁরা। পুলিশের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন। অভিযোগ, এ রাজ্যে পুলিশ ‘অন্যায় ভাবে উৎকোচ আদায়’ করে ট্রাক চালকদের কাছ থেকে। ‘ইউনাইটেড ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ হুগলি’র যুগ্ম আহ্বায়ক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশের চাহিদা মতো টাকা না দিলে ইচ্ছাকৃত ভাবে কেস দেয়।
কলকাতায় ট্রাক নিয়ে ঢুকতে গেলে ১০০ টাকার বিশেষ কুপন কাটতে হয় ট্রাক চালকদের। এটাও পুলিশের টাকা তোলার একটা মাধ্যম। হাওড়ার বিভিন্ন পানের দোকান, হোটেলে এই কুপন পাওয়া যায়। এই কুপন না থাকলে অবধারিত ভাবে কেস দেওয়া হয়।”
এ সবের পাশাপাশি রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা নিয়েও ক্ষুব্ধ ট্রাক মালিকেরা। তাঁদের বক্তব্য, অনেক জায়গাতেই রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা। বর্ষায় বহু রাস্তা পুকুরের চেহারা নেয়। ফলে, গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। মাহেশে এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ‘ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ মজুমদার। তিনি বলেন, “যাবতীয় অসুবিধার কথা রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রীকে জানিয়েছি। এখনও আলোচনার মাধ্যমেই সুষ্ঠু সমাধান চাই আমরা। কিন্তু তা না হলে আগামী ২১ তারিখ থেকে লাগাতার ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। রাজ্যের সব জায়গাতেই এ নিয়ে ট্রাক মালিকেরা বৈঠক করবেন।”
রাজ্য সরকার অবশ্য ট্রাক মালিকদের ঘাড়ে অনেকটা দোষ চাপিয়েছে। কয়েক দিন আগেই পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র জানিয়েছিলেন ট্রাকগুলিই অনুমোদনের অতিরিক্ত পণ্য বহন করে। এর ফলে রাস্তাঘাটের ক্ষতি হয়। ‘ওভারলোডিং’ নিয়ন্ত্রণ করতে রাজ্যে বেশ কিছু ‘ওয়েব্রিজ’ তৈরি করা হবে বলেও মদনবাবু জানিয়েছেন।

পণ্য-সহ ৬ চাকার গাড়ির ওজন ১৬ টন ২০০ কিলোর মধ্যে।

পণ্য-সহ ১০ চাকার গাড়ির ওজন হবে ২৫ টন।

১২ চাকার গাড়িতে মাল তোলা যাবে সর্বোচ্চ ২১ টন।

অভিযোগ, প্রায় দ্বিগুণ মাল তোলা হয় গাড়িতে।
এ ভাবে কর ফাঁকি দেওয়া হয় সরকারকে।

ট্রাক মালিকদের বক্তব্য, ওভারলোডিং হয় কারখানা থেকে। সে ক্ষেত্রে কারখানা মালিককে
জরিমানা না করে গাড়ির মালিককে জরিমানা দিতে হবে কেন? শুধু জরিমানা না করে
আইন মোতাবেক অতিরিক্ত পণ্য নামিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
তা হলেই কমবে ওভারলোডিংয়ের প্রবণতা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.