মন্ত্রীর আশ্বাস মেলায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘জেহাদ’ আপাতত সরিয়ে রেখে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিলেন এ রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা।
দামে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে এ রাজ্যের আলু ভিন্ রাজ্যে পাঠানো যাবে না বলে সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাজ্য সরকার। গত কয়েক দিনে ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার আগে কিছু আলুভর্তি ট্রাক বিভিন্ন সীমানাবর্তী এলাকায় আটকে দেয় পুলিশ। এতে তাঁদের ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে রবিবার থেকে ধর্মঘট শুরু করে ‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি’। বুধবার পর্যন্ত ওই ধর্মঘট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার মহাকরণে কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন সমিতির নেতারা।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ প্রতিহার বলেন, “অরূপবাবু আশ্বস্ত করেছেন, রাজ্যের চাহিদা মিটিয়ে অন্য রাজ্যে আলু পাঠানোর বিষয়টি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বুঝিয়ে বলবেন। রাজ্যের সীমানায় পুলিশি ধড়পাকড়ের বিষয়টিও তিনি দেখবেন। সেই কারণে এবং সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি।” কৃষি বিপণনমন্ত্রী বলেন, “রাজ্যের মানুষের স্বার্থেই মুখ্যমন্ত্রী আলু নিয়ে ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। ব্যবসায়ীরা দুম করে ধর্মঘট ডেকেছিলেন। ওঁদের বলেছি, আপনাদের বক্তব্য লিখিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। উনি নিশ্চয়ই বিবেচনা করে দেখবেন।” |
ধর্মঘটের জেরে বন্ধ আলুর গুদাম। নিজস্ব চিত্র |
ধর্মঘটের ফলে এ দিন গোটা রাজ্যেই আলুর ব্যবসা থমকে ছিল। হিমঘরগুলিতে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। ধর্মঘটের জেরে চলতি মরসুমে আলুর দাম বাড়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়। ঘটনা হল, বেশ কয়েকটি মরসুম পরে এ বার রাজ্যের চাষিরা আলুর ভাল দাম পাচ্ছেন। তাঁরা অনেকটাই স্বস্তিতে। কিন্তু ওই সরকারি নিষেধাজ্ঞায় আতঙ্ক ছড়ায় আলু ব্যবসায়ী মহলে। তাঁদের বক্তব্য, অন্য রাজ্যে আলু পাঠানো না গেলে ব্যবসা মার খাবে। কেননা, ঝাড়খণ্ড-বিহারে যে প্রজাতির আলু (ক্যাট, কাটপিস, মাঝলা, ঠিকরে আলু) রফতানি হয়, তার চাহিদা এ রাজ্যে নেই। ওই আলু মূলত বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও বর্ধমানের একাংশে চাষ হয়। তাই, ওই সব আলু অন্যত্র পাঠালেও তার প্রভাব এ রাজ্যের বাজারে পড়ার কথা নয়। রাজ্য সরকার অযথা ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। ‘বর্ধমান জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতি’র সম্পাদক সাগর সরকার বলেন, “আলুর দাম নিয়ে কৃষক, ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ কারও কোনও অসুবিধা নেই।
কিন্তু, ঝাড়খণ্ড সীমানায় আলুভর্তি ট্রাক আটক করায় রফতানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আলু নষ্ট হচ্ছে।
রাজ্যের ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই ভিন্ রাজ্যে আলু রফতানির সুযোগ দেওয়া হোক।” |