সব্জির দাম নিয়ে চাষি-ফড়ে বিবাদের জেরে সম্প্রতি দু’বার উত্তেজনা ছড়ায় উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর ব্লকে। রাস্তা অবরোধ, মারামারি, বিক্ষোভ কিছুই বাদ যায়নি। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার স্বরূপনগরে এসে বাজারে ফড়েদের ‘ভূমিকা’ নিয়ন্ত্রণে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
চারঘাট মিলন মন্দির বিদ্যাপীঠে একটি অনুষ্ঠানে এসে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী ফড়েদের উদ্দেশে বলেন, “মনে রাখবেন, দুর্নীতিকে আমরা ক্ষমা করব না। কৃষকেরা কষ্ট করে যে সব্জি ফলান, তা ২ টাকা কেজি দরে কিনে ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা সহ্য করব না। কেউ অন্যায় বা দুর্নীতি করলে তার জায়গা হবে ফাটকে।” কৃষক-স্বার্থে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে এক ছাতার তলায় কিষাণ-মান্ডি, চালকল, গুদাম এবং হিমঘর তৈরিরও আশ্বাস দেন খাদ্যমন্ত্রী।
গত ৩ জুলাই রামচন্দ্রপুরে এবং ২৬ জুলাই চারঘাট বাজারে সব্জির দাম নিয়ে চাষি এবং ফড়েদের মধ্যে বিবাদ বাধে। চারঘাট বাজারে দু’পক্ষের হাতাহাতিও হয়। বহু সব্জি নষ্ট হয়। পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কমিটি গড়ে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে চারঘাট বাজার থেকে সব্জি কেনা বন্ধ করে দেন ফড়েরা। অন্য হাটগুলিতেও সব্জি বিক্রি কমে যায়। চারঘাট বাজারে গত শনিবার রাজ্য সরকারের তৈরি করা টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে এসে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। এর পরে রবিবার আংশিক হাট বসে। |
স্বরূপনগরের গোলমালের পিছনে নাম না করে সিপিএমের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। তিনি বলেন, “চাষিদের খেপিয়ে তুলে কেউ কেউ মনে করছেন, এ ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফাঁপড়ে ফেলা যাবে। পঞ্চায়েত ভোট এসে পড়ায় গ্রামে গ্রামে ওরা কৃষকদের খেপিয়ে ভয়ঙ্কর খেলায় নেমেছে। আমরা কৃষকদের পিছনে আছি এবং থাকব।” নাম না করে সিপিএমের সমালোচনায় সরব হন অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসও। স্বরূপনগরের গোলমালের ঘটনায় জ্যোতিপ্রিয়বাবুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম। সিপিএমের স্বরূপনগর জোনাল কমিটির সদস্য হামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, “সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। পঞ্চায়েত ভোটেরল আগে চাষিদের আমাদের বিরুদ্ধে তাতানোর জন্য এ সব কথা বলা হচ্ছে।”
চাষিদের পক্ষ থেকে এ দিন চারঘাট এলাকায় একটি থানা, একটি হিমঘর এবং একটি কিষাণ-মান্ডি নির্মাণের পাশাপাশি ২৬ জুলাইয়ের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয় তিন মন্ত্রীর কাছে। |