|
|
|
|
ধর্ষণে অভিযুক্ত তৃণমূলকর্মী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বন্ধুর কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক তৃণমূলকর্মীর বিরুদ্ধে।
ঈশান মাণ্ডি নামে বছর চল্লিশের ওই ব্যক্তি পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানার বাড়ঝিকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। দলীয় গোষ্ঠীসংঘর্ষে আহত বন্ধুকে গত বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যান তিনি। বন্ধুর মেয়েও ছিল সঙ্গে। হাসপাতালে বন্ধুকে ভর্তি করানোর পরে রাতে ওষুধ কেনার নাম করে বন্ধুকন্যাকে নিয়ে বেরিয়ে যান ঈশান। এরপর তিনি শহরেরই একটি লজে নিয়ে গিয়ে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় বন্ধুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান ধর্ষিতার বাবা। সোমবার দুপুরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ওই নাবালিকার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরি বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
অভিযোগকারী নিজে তৃণমূল সমর্থক। বাড়ি ডেবরা থানার আলোককেন্দ্রের চকাশ্রব এলাকায়। মাস কয়েক আগে ডেবরায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়েছিল। জখম হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। নাবালিকার বাবা তাঁদেরই এক জন। সংঘর্ষের সময় তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। মাথার যন্ত্রণা নিয়েই মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হন তিনি। অভিযোগ, ওই রাতে ওষুধ কিনতে যাওয়ার নাম করে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে পড়েন ঈশান। পরে তাকে মেদিনীপুরের একটি লজে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার সকালে ওই ছাত্রীকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেন। বাড়ি গিয়ে ঘটনার কথা মাকে জানায় ছাত্রীটি। বিষয়টি জানতে পেরে শনিবার হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরেন চকাশ্রবের ওই বাসিন্দা। তাঁর কথায়, “ওষুধ কিনতে যাবে বলে আমার মেয়েকে নিয়ে ও বেরিয়েছিল। রাতে আর ফিরে আসেনি। পরে ঘটনার কথা জানতে পারি।” এরপর ডেবরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে যান ওই ব্যক্তি। কিন্তু থানা থেকে জানানো হয়, ঘটনাটি মেদিনীপুরের। তাই মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় গিয়েই অভিযোগ জানাতে হবে।
শেষমেশ রবিবার রাতে কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনাটি অঞ্চলের এক তৃণমূল নেতাকে বলেছিলেন নাবালিকার বাবা। ওই নেতা তাঁকে মীমাংসা করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দেন। পরে অবশ্য পিছু হঠেন। ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। সিপিএমের ডেবরা জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “সম্প্রতি নারী নির্যাতন বেড়েছে। মহিলারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কাগজ খুললেই ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির খবর চোখে পড়ছে। বিষয়টি মারাত্মক পর্যায়ে চলে গিয়েছে।” বিড়ম্বনায় পড়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। দলের ডেবরা ব্লক সভাপতি রতন দে বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”
বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই নাবালিকার বাবা। তিনি বলেন, “আমার নাবালিকা মেয়েকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে আমারই বন্ধু। ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার মেয়ের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তা যেন অন্য কারও সঙ্গে না-ঘটে।” |
|
|
|
|
|