|
|
|
|
ডেবরা কলেজে অভিযুক্ত টিএমসিপি |
অনার্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা আদায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অনার্সে ভর্তি করে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল টিএমসিপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। এক ছাত্রের থেকে ১৪ হাজার টাকা ও এক ছাত্রীর থেকে দেড় হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অধ্যক্ষের স্ট্যাম্প-সহ (স্বাক্ষর নেই) রসিদও দেওয়া হয়েছে ওই ছাত্রকে।
ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা কলেজের। এই কলেজের ছাত্র সংসদে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। ওই দু’ই পড়ুয়ার অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছেন কর্তৃপক্ষ। আজ, মঙ্গলবার কলেজ পরিচালন সমিতির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা বলেন, অধ্যক্ষ বলেন, “ঠিক কী হয়েছে দেখতে হবে। তবে কলেজের স্ট্যাম্প নকল করা হয়েছে। আমার কাছে দু’জন ছাত্রছাত্রী অভিযোগ করেছিল। একজন অভিযোগ প্রত্যাহার করেছে। কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠকে পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।” ঘটনাটির নিন্দা করলেও তার ‘দায়’ নিতে চাননি টিএমসিপি’র ডেবরা ব্লক সভাপতি প্রদীপ কর। তিনি বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। তবে ওই ছাত্র সংসদের মেয়াদ এখন ফুরিয়েছে। ওই প্রতিনিধির সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ নেই। কেউ অন্যায় করলে তার দায়িত্ব কী সংগঠন নেবে? এটা কলেজের ব্যাপার। কর্তৃপক্ষই উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন।” |
|
এই সেই রসিদ। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
ডেবরা কলেজে প্রথম বর্ষে বিএ পাস কোর্সে ভর্তি হয়েছেন অসীম জানা ও কৃষ্ণা দোলই। অভিযোগ, অনার্স ‘পাইয়ে দেব’ বলে অসীমের কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা নেন ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি প্রশান্ত নায়েক। তাঁকে রশিদও দেওয়া হয়, যাতে অধ্যক্ষের স্ট্যাম্প ছিল। অসীম নিশ্চিত হন, তিনি বাংলা অনার্সে ভর্তি গিয়েছেন। পরে ক্লাসে গিয়ে তাঁর ‘ভুল’ ভাঙে। তারপরই অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র।
অভিযোগপত্রে অসীম লিখেছিলেন, ‘আমি অনার্স নেওয়ার জন্য ছাত্র সংসদের একজন প্রতিনিধির কাছে গিয়েছিলাম। সে আমাকে ভূগোল অনার্সে ভর্তি করে দেবে বলেছিল। আমি রোল নম্বর জানতে ক্লাসে গিয়েছিলাম। তখন শিক্ষক জানান, অনার্সে আমার নাম নেই। পরে ওই প্রতিনিধি আমাকে বাংলা অনার্সে ভর্তি করে দেবে বলে জানায়। কিন্তু তা-ও হয়নি। আমি অতিরিক্ত টাকাও ফেরত পাইনি।’ বিষয়টি জানতে পেরে ওই ছাত্রকে টিএমসিপি কর্মীরা অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেন বলে অভিযোগ। সোমবার কলেজে এসে অভিযোগ প্রত্যাহারও করে নিয়েছেন অসীম। এ দিন যোগাযোগ করা হলে অসীম বলেন, “একটা সমস্যা হয়েছিল। তবে তা মিটে গিয়েছে। আর আমার কিছু বলার নেই।” একই একই ভাবে ইংরেজি অনার্স পাইয়ে দেবে বলে টিএমসিপি সূর্যকান্ত হোড় কৃষ্ণার কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীর মাসতুতো দাদা পাঁশকুড়া বনমালী কলেজের ছাত্র তাপস পাল বলেন, “প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাদের হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে। টিএমসিপি’র ওই কর্মী লোকজন এনে আমাকে মারধরও করেন।”
চেষ্টা করেও অভিযুক্ত দুই ছাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে অন্য ছাত্র সংগঠনগুলি। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পন্ডা বলেন, “বিভিন্ন কলেজেই এমন ঘটনা ঘটছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি উচিত।” একই মত ডিএসও’র জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মিঠুন সামন্তের।” ঘটনার নিন্দা করেছেন ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুলও। |
|
|
|
|
|