স্ত্রী-ছেলেকে খুনের নালিশ, গ্রেফতার যুবক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুড়শুড়া |
স্ত্রী-সন্তানকে গলার নলি কেটে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল স্বামীকে। সোমবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয় পুড়শুড়ার ধাড়াপাড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিনই ভোরে উঠে কাজ সারতেন সুলেখা অধিকারী (২৮)। এ দিন তাঁকে দেখতে পাননি প্রতিবেশীরা। দরজার বাইরে থেকে শিকল তোলা ছিল। সন্দেহ হওয়ায় আশপাশের মানুষ দরজা খুলে দেখেন, ঘরের মেঝেতে পড়ে সুলেখার রক্তাক্ত দেহ। গলার প্রায় অর্ধেকটা কাটা। খাটে মশারির ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে তাঁর সাত বছরের ছেলে সুজয়ের রক্তাক্ত দেহ। তারও গলার নলি কাটা। স্থানীয় মানুষ খবর দেন পুলিশকে। দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বধূর বাপের বাড়ি খানাকুলের বালিপুরে। তাঁরা বেলা ১১টা নাগাদ সুলেখার স্বামী লক্ষ্মীকান্ত অধিকারীকে পুড়শুড়া মোড়ে দেখতে পেয়ে ধরে ফেলেন। আত্মীয়-প্রতিবেশীদের দাবি, ওই ব্যক্তিই খুন করেছেন স্ত্রী-ছেলেকে। এ ব্যাপারে সুলেখার মা শেফালি কোটাল নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করেন পুলিশের কাছে। লক্ষ্মীকান্তকেও তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত ব্যক্তি পেশায় লরি চালক। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশকে জানিয়েছেন, রাতে বাড়ি ছিলেন না। লরি নিয়ে অন্যত্র গিয়েছিলেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে ঘটনার খবর পেয়ে ফিরে আসেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বছর দ’শেক আগে বিয়ে হয়েছিল সুলেখা-লক্ষ্মীকান্তের। লরিচালক ওই যুবক কর্মসূত্রে প্রায়ই রাতে বাড়ির বাইরে থাকতেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, অধিকারী পরিবারে অশান্তি লেগেই ছিল। স্ত্রীকে নানা ভাবে সন্দেহ করতেন ওই যুবক। লক্ষ্মীকান্তর দাদা প্রদীপ অধিকারী বলেন, “ভাই অত্যন্ত রগচটা। সামান্য ঝগড়াঝাটি হলেও কাটারি নিয়ে খুনের হুমকি দিত। ওকে বাধা দিতে গিয়ে অনেক বার আমরাও আক্রান্ত হয়েছি। সংসারে পৃথক হয়ে ওর সঙ্গে আর কোনও সম্পর্কও রাখিনি। পৃথক হওয়ার পরেও আমাদের বোনকে এক বার কাটারি নিয়ে কাটতে গিয়েছিল। বউয়ের সঙ্গেও ওর ঝামেলা ছিল। তবে সত্যি সত্যি খুন করে বসবে, এটা ভাবতে পারছি না।” প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন ওই যুবক। যে জন্য মদ্যপ অবস্থায় অনেক সময় মারধরও করতেন। সুজয়কেও নিজের সন্তান বলে মানতে চাইতেন না।
শেফালিদেবী বলেন, “জামাই মেয়েকে মিথ্যা সন্দেহ করত। এই স্বভাবের জন্য মেয়েকে চলে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু মেয়ে বলত, ও ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তার আগেই এত বড় বিপর্যয় ঘটে গেল!” |