অপরাধীর খোঁজ মেলেনি এখনও, আতঙ্কিত ধর্ষিতা
ভিযুক্তকে গ্রেফতার করা দূরের কথা, হাওড়ার জগাছায় ধর্ষণের ঘটনার দেড় সপ্তাহ পরেও মূল অপরাধীকে চিহ্নিত পর্যন্ত করতে পারল না হাওড়া সিটি পুলিশ।
এ দিকে, ঘটনার এত দিন পরেও অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় দৃশ্যতই আতঙ্কিত ধর্ষিতা। সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি বলেন, “সব সময়ে ভয় করছে। কী করে কাজে যাব বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছে, আবার আমাকে আক্রমণ করতে পারে।” এর পরেও হাওড়া সিটি পুলিশের সাফাই, অপরাধী হয়তো বাইরে থেকে এসেছিল। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে। এক অফিসার বলেন, “বাইরের সব জেলাতেও অভিযুক্তের ছবি পাঠানো হয়েছে।” ঘটনার দু’দিন পরে হাওড়ায় গিয়ে পুলিশ কমিশনারের ঘরে বসে মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা বলেন, “পুলিশ যে এখনও যথেষ্ট মানবিক হতে পারেনি, সাঁতরাগাছির ঘটনাতেই তা স্পষ্ট।” যদিও পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে সে কথা অস্বীকার করে দাবি করেছেন, “মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন পুলিশকে কোনও রকম ভর্ৎসনা করেননি।”
সাঁতরাগাছি সেতু সংলগ্ন ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র
এ দিন তদন্তকারীরা ধর্ষিতাকে নিয়ে সাঁতরাগাছির সেতুর নীচে যান। গত ২৫ জুলাই ভোরে সেখানেই এক দুষ্কৃতী বছর আটত্রিশের ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তার আগে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে সেই দুষ্কৃতী। সে সময়ে বাঁকড়ার বাসিন্দা ওই মহিলা প্রতিদিনের মতো লোকের বাড়ি রান্নার কাজ করতে যাচ্ছিলেন। এর পরে প্রায় দেড় সপ্তাহ হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ধর্ষিতা ওই মহিলা।
এ দিন হাসপাতাল থেকে ওই মহিলাকে প্রথমে হাওড়া মহিলা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর সঙ্গে মহিলা পুলিশ অফিসারেরা কথাবার্তা বলেন। এর পরে দুপুর ১টা নাগাদ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনাস্থলে। সঙ্গে যান হাওড়ার প্রোটেকশন অফিসার সুপর্ণা চক্রবর্তী-সহ মহিলা থানার দুই তদন্তকারী অফিসার ও হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দুই পদস্থ অফিসার।
কোন পথে তাঁকে জোর করে টেনে-হিঁচড়ে সেতুর নীচে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা দেখান ওই মহিলা। এর পরে সেতুর নীচ দিয়ে সাঁতরাগাছি ঝিলের পাড়ে গিয়ে যে ঝোপঝাড়ের মধ্যে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছিল তাও পুলিশ অফিসারদের দেখান তিনি। এর পরে জানান, কী ভাবে তিনি সাহায্য চেয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী এবং সেতুর উপর দিয়ে যাওয়া গাড়িচালকদের কাছে। শেষে ওই মহিলাকে জগাছা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে তাঁর বাঁকড়ার বাড়িতে পৌঁছে দেন পুলিশ অফিসারেরা।
মহিলার অভিযোগ, ঘটনার পরে তিনি পথচলতি মানুষের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু কেউ তাঁকে সাহায্য করেননি। পরে তিনি সেতুর উপরে উঠে এক পুলিশকর্মীকেও ঘটনাটি বলেন। তবু সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ। এর পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তিন কিলোমিটার হেঁটে তিনি জগাছা থানায় যান। অভিযোগ, তখন থানার ডিউটি অফিসার তাঁর অভিযোগ ঠিক মতো নেননি। এমনকী তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে না পাঠিয়ে বাড়ি যেতে বলেন। এফআইআর নেওয়া হয়েছিল ঘটনার ৬ ঘণ্টা পরে। এই খবর ফাঁস হতেই অবশ্য হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তাদের টনক নড়ে। তড়িঘড়ি ওই ডিউটি অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়।
এই ঘটনার পরে রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ধর্ষিতা মহিলার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি অপরাধীকে অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পুলিশ এর পরে হাসপাতালে গিয়ে ওই মহিলাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের করে অভিযুক্তের মুখের ছবি আঁকায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.