ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ-কাণ্ডেও ভর্ৎসিত পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বালিতে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের ঘটনাতেও পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করল রাজ্য মহিলা কমিশন।
সোমবার হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর, বালি থানা এবং জয়সোয়াল হাসপাতালে যান কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় এবং আরও এক সদস্য। সুনন্দাদেবী বলেন, “হাওড়া কমিশনারেটে কী শুরু হয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। এই ঘটনায় সব থেকে বড় অন্যায় করেছে পুলিশই।” একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে কোনও মহিলা এই প্রথম এ রকম প্রতিবাদ করেছেন। ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ রুখতে ১৯৯৪ সালে আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এ দেশে মহিলাদের মতের যে কোনও দাম নেই, তা ফের প্রকাশ্যে এল।” এ দিন কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলার কোনও পুলিশকর্তা দেখা না করতে আসার বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন সুনন্দাদেবীরা। |
হাওড়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য-আধিকারিকের দফতরে রাজ্য মহিলা
কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র |
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বাতী দত্ত-সহ স্বাস্থ্য দফতরের অন্য কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের দুই প্রতিনিধি। হাওড়ায় এ ধরনের কোনও ঘটনা আগে ঘটেছে কি না, তা জানতে চান সুনন্দাদেবীরা। হাওড়ায় আল্ট্রাসনোগ্রাফি সেন্টারগুলির উপরে স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারির প্রসঙ্গও ওঠে। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা স্বীকার করে নেন, বর্তমানে ওই সব সেন্টারে ‘স্টিং অপারেশন’ চালানোর মতো পরিকাঠামো তাঁদের নেই। স্বাস্থ্যকর্তাদের কমিশন নির্দেশ দিয়েছে, আইন থাকলেও কী কারণে পুলিশ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরকে ওই ঘটনার কথা জানায়নি, তা নিয়ে কমিশনারের জবাব চাইতে হবে।
এ বিষয়ে হাওড়া কমিশনারেটের কোনও কর্তা মন্তব্য করতে চাননি।
গত ২ অগস্ট রাতে জয়সোয়াল হাসপাতালে ওই মহিলাকে ভর্তি করানোর সময়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাঁর শরীরের আঘাত সংক্রান্ত যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন সেটিও কমিশনের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেন সুপার অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে মহিলার পেটে লাথি মারা এবং পিঠে কালসিটের দাগের কথা লেখা রয়েছে। চিকিৎসক এ-ও লিখেছিলেন যে, ওই মহিলা তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁর গর্ভস্থ শিশু নড়াচড়া করছে না।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর থেকে বালি থানায় যান কমিশনের দুই প্রতিনিধি। সেখানে তাঁদের থানার সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয়। পরে সুনন্দাদেবী জানান, ওই মহিলা যে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তদন্তকারী অফিসারের বয়ানেও অসঙ্গতি রয়েছে। কমিশনের প্রতিনিধিরা জানান, তদন্তকারী পুলিশ অফিসার তাঁদের জানিয়েছেন, ঘটনার দিন একটি উড়ো ফোন পেয়ে হাসপাতালে যান তিনি। থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি-ই তাঁকে সেখানে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
জয়সোয়াল হাসপাতালে গিয়ে এ বিষয়ে সুপারের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। সুপার জানান, এ নিয়ে পুলিশের তরফে তাঁর সঙ্গে কখনওই যোগাযোগ করা হয়নি। অন্য চিকিৎসকেরা জানান, পুলিশ ওই দিন হাসপাতালে গিয়েছিল কি না, তা নিয়ে তাঁদেরও সন্দেহ রয়েছে।
|