এলঅ্যান্ডটি-র বিদ্যুৎ প্রকল্প
পছন্দের জমি কিনতে হবে সংস্থাকেই, সাফ কথা পার্থর
রাজ্যে ‘পছন্দসই’ জমিতে প্রকল্প গড়তে হলে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোকে (এলঅ্যান্ডটি) নিজেদেরই তা জোগাড় করে নিতে হবে বলে ইঙ্গিত দিলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
গত ডিসেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ১১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার প্রস্তাব দেয় এলঅ্যান্ডটি। তবে একই সঙ্গে তারা জানিয়ে দেয়, এ জন্য এক লপ্তে ১২০০ একর জমি, জল ও কয়লা জোগানের ব্যবস্থা রাজ্যকেই করতে হবে। সংস্থার অন্যতম কর্তা শৈলেন্দ্র নাথ দাবি করেন, পঞ্জাবের রাজপুরায় তাঁদের অন্য একটি প্রকল্পের জন্য এই সব জিনিসের সংস্থান সেখানকার সরকারই করে দিয়েছে। এর পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এলঅ্যান্ডটি কর্তৃপক্ষকে বেশ কিছু জায়গায় জমি দেখানো হয়। সেই সব জমি ইতিমধ্যেই সরকারের হাতে রয়েছে। কিন্তু কোনও জমিই প্রকল্প গড়ার উপযুক্ত বলে সংস্থার মনে হয়নি। এই পরিস্থিতিতে গোটা প্রকল্পটিই কার্যত ভেস্তে যাওয়ার পথে।
প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ার খবর তাঁর জানা নেই বলে দাবি করলেও পার্থবাবু সোমবার স্পষ্টই বলেন যে, সরকারের কাছে জমি চাইলে পছন্দসই এলাকায় তা না-ও মিলতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংস্থাকে নিজেদেরই জমি কেনার ব্যবস্থা করে নিতে হবে। কারণ, শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ না করাই তৃণমূল পরিচালিত সরকারের ঘোষিত নীতি। তবে সরকারি জমিতে প্রকল্প গড়ার ক্ষেত্রে কী অসুবিধা রয়েছে তা জানালে, সেগুলি সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাসও এ দিন শিল্পমন্ত্রী দিয়েছেন। পার্থবাবুর কথায়, “এ রাজ্যে এলঅ্যান্ডটি-র অনেক লগ্নি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ওঁরা হয়তো ওঁদের পছন্দ মতো জমি চেয়েছিলেন। কিন্তু যেখানে আমাদের জমি আছে সেখানে পরিকাঠামোগত বা অন্য কী সুবিধা ওঁরা চান, তা জানান। আমরা অবশ্যই সেটা দেখব।” এলঅ্যান্ডটি এই আর্জিতে সাড়া দেবে বলেই পার্থবাবুর আশা।
শিল্পের জন্য এক ছটাকও জমি অধিগ্রহণ না করার নীতি নিয়ে দেশ জুড়ে এখন বিতর্ক চলছে। শিল্প ও বণিক মহলের অনেকেই মনে করেন, পুরোটা না হলেও কিছু জমি জোগাড় করে দেওয়া বা জমি পেতে লগ্নিকারীদের সাহায্য করার দায় সরকার একেবারে ঝেড়ে ফেলতে পারে না। রবিবার কলকাতায় এসে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিংহ হুডাও জানিয়েছিলেন যে, নীতিগত ভাবে তাঁরাও চান শিল্প নিজেই জমি জোগাড় করুক। তবে পুরো জমি পেতে সমস্যা হলে তাঁরা সংস্থাকে সাহায্য করেন। শিল্পমহলের দাবি, বড় শিল্পের ক্ষেত্রে সরকারি মধ্যস্থতা ছাড়া বিপুল পরিমাণ জমি পাওয়া সম্ভব নয়। আবার সরকরি জমি সব সময়েই প্রকল্পের উপযুক্ত হবে, এমনটাও বলা যায় না।
পার্থবাবুর অবশ্য বক্তব্য, জমির সমস্যা নিয়ে অহেতুক বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে। রাজ্যে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে এটা কোনও সমস্যাই নয়। তাঁর দাবি, একলপ্তে হাজার একর বা তার চেয়ে বেশি জমি রাজ্য সরকারের হাতে রয়েছে। ফলে বড় শিল্প গড়তে সমস্যা হবে না। পার্থবাবুর কথায়, “অনেকেই জমি নিয়ে ফেলে রাখছেন। অথচ বলা হচ্ছে শিল্পের জন্য নাকি জমি মিলছে না!” কোনও কারণ ছাড়াই যাঁরা জমি নিয়ে ফেলে রেখেছেন, ফের তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন শিল্পমন্ত্রী।
সোমবার শিল্প দফতরের যে নয়া ওয়েবসাইটের উদ্বোধন হল, সেখানে রাজ্যের হাতে থাকা জমির খতিয়ান দেওয়া হবে বলেও জানান পার্থবাবু। কোন কোন শিল্পের ক্ষেত্রে জমি সমস্যার সমাধান হয়েছে, তা-ও ওয়েবসাইটে উল্লেখ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই ওয়েবসাইটটি তৈরির কাজ বাম আমলেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু ভোট এসে পড়ায় তা থমকে যায়। এ দিন সেই ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করে পার্থবাবু জানান, এর মাধ্যমে শিল্পমহলের সঙ্গে যোগসূত্র আরও দৃঢ় করাই রাজ্যের লক্ষ্য। শিল্পমহলের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেবে তাঁর দফতর। এ ছাড়া, যে সব সংস্থা নিগম থেকে ঋণ নিয়ে এখনও ফেরত দেয়নি, তারা সন্তোষজনক কারণ ব্যাখ্যা না করতে পারলে ভবিষ্যতে ওয়েবসাইটে তাদের নাম প্রকাশ করে দেওয়া হবে। নিগমের অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ এখন প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.