রেণুদেবীকে খুন করে কে বা কারা ডাকাতি করে পালিয়েছে বলে ঘটনার দিন চিৎকার করে উঠেছিল অভিযুক্ত উজ্জ্বল তপাদার। বোলপুর ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক সোমেশপ্রসাদ সিংহের এজলাসে রেণু সরকার হত্যা-মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পর্বের পঞ্চম দিন, সোমবার এমনই দাবি করলেন নিহতের প্রতিবেশী বিজনকুমার মণ্ডল। উজ্জ্বলের ওই চিৎকার তিনিও শুনেছিলেন বলে সাক্ষ্যে জানান রেণুদেবীর ভাড়াটে চুমকি চৌধুরী। সরকার পক্ষের আইনজীবী তপনকুমার দে বলেন, “ওই দুই সাক্ষী তাঁদের সাক্ষ্যে জানিয়েছেন, বাড়ির কেয়ারটেকার উজ্জ্বলের চিৎকার শুনে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। খাটের উপরে রেণুদেবীর দেহ পড়ে থাকতে দেখে ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রতিবেশীরা নিহতের বাড়ির লোকজন ও পুলিশকে খবর দেওয়ার কথা বলেন।” গত ১৩ জানুয়ারি রাতে শান্তিনিকেতনে বাগানপাড়ার বাড়ির দোতলার ঘরে খুন হন রেণুদেবী। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ উজ্জ্বল, মঙ্গল সাহানি ও পিন্টু দাসকে ধরে।
সরকারি আইনজীবী সাক্ষীদের বয়ান নেওয়ার পর জেরা শুরু করেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা। এ দিনও ধৃত মঙ্গল সাহানির আইনজীবী ভাস্কর ঘোষ ও পিন্টু দাসের আইনজীবী দিলীপ নায়েকের পক্ষ থেকে সাক্ষীদের জেরা করেন আইনজীবী জয়শ্রী হাটি। তিনি বিজনবাবুকে প্রশ্ন করেন, পুলিশ পৌঁছনো অবধি তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন কি না, থাকলে কতক্ষণ ছিলেন। উত্তরে বিজনবাবু জানান, পুলিশ না আসা পর্যন্ত তিনি ঘটনাস্থলেই ছিলেন। তবে ঠিক কতক্ষণ ছিলেন, তা জানাতে পারেননি।
অন্য সাক্ষী চুমকিদেবীকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ঘটনা জেনে ওই দোতলার ঘরে কারা কারা গিয়েছিলেন। চুমকিদেবী কয়েক জনের নাম জানান। খুন হওয়ার আগে কখনও রেণুদেবীর দোতলার ঘরে গিয়েছিলেন কি না, জয়শ্রীদেবীর এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, তার আগে কোনও দিনই ওই ঘরে যাননি।
এর পরেই উজ্জ্বলের আইনজীবী সৈয়দ শাহিদুল আরেফিন ওই দিন ঠিক কী ঘটেছিল, তা বিজনবাবুর কাছে জানতে চান। অন্য সাক্ষীদের মতো তিনিও জানিয়েছেন, রেণুদেবীকে খুন করে বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে, উজ্জ্বলের এই চিৎকার শুনে অন্য পড়শিদের মতো তিনিও ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন। ঘটনার রাতে রেণুদেবীর বাড়ির একতলায় কারা কারা ছিলেন, তা চুমকিদেবীর কাছে জানতে চান সৈয়দ শাহিদুল। চুমকিদেবী জানান, সেদিন তিনি নিজে, তাঁর দিদি ও মাকে নিয়ে মোট চার জন ছিলেন ওই একতলায়। পরের প্রশ্ন ছিল, সকালে ঘুম থেকে উঠে উজ্জ্বল কী করত? উত্তরে, বাড়ির সীমার মধ্যে চারপাশে উজ্জ্বলকে ঘুরতে দেখেছেন বলে আদালতকে জানান চুমকিদেবী।
আজ, মঙ্গলবার রেণু-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেবেন নিহতের ভাড়াটে ডালিয়া চৌধুরী ও তাঁর মা। |