রাস্তা ভাঙতে শুরু করেছিল এক বছর আগে থেকে। এ বছর বর্ষা শুরু হতেই ১৮ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। খানা খন্দে ভরে গিয়েছে কিছু এলাকায়। কোথাও পিচের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেলেও বাকি রাস্তা ছোটখাটো ডোবায় পরিণত হয়েছে। ভারত-ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী পূর্ত দফতরের বীরপাড়া-গমটু ভুটানের পথের বেহাল দশায় এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা গত শুক্রবার সকাল থেকে ওই রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। সকাল নটা থেকে টানা অবরোধ চলার পর বিকালে মাদারিহাট-বীরপাড়ার বিডিও গিয়ে অবরোধকারীদের বোঝানোর পরে যান চলাচল শুরু হয়। |
জনকল্যাণ মঞ্চের নেতৃত্বে থাকা বিজেপি নেতা মনোজ টিগ্গা বলেন, “মানুষের চরম দুর্ভোগের মধ্যে রাস্তায় চলাফেরা করছেন। এ রাস্তায় চলাফেরা করার অযোগ্য। কোনও হেলদোল নেই প্রশাসনের। সন্ধ্যা পর্যন্ত অবরোধ চালানোর পর ফের বড় ধরনের আন্দোলনে নামব। বেহাল রাস্তার জন্য সাতটি চা বাগানের শ্রমিকদের রেশন পৌঁছানো এবং উৎপাদিত চা বাজারে আনতে সমস্যায় পড়ছেন কর্তৃপক্ষ। বীরপাড়া হাসপাতাল থেকে ভুটানের গমটু পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশায় বিরক্ত সকলে এলাকার আরএসপি বিধায়ক কুমারী কুজুর বলেন, “এক বছর ধরে রাস্তা খারাপ। প্রথম থেকে রকম মেরামতির দিকে নজর দেয়নি পূর্ত দফতর। মানুষ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা বার হচ্ছেন। এটা চলতে পারে না। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” মাদারিহাট বীরপাড়ার বিডিও পেমবা শেরপা বলেন, “বেহাল রাস্তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। টাকা না থাকায় তারা আগে রাস্তা মেরামতি করতে পারেনি। বর্ষার পরে রাস্তা মেরামতি হবে বলে পূর্ত দফতরের পক্ষে জানা গিয়েছে।” গয়েরকাটার পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার উৎপল কুমার মাইতি বলেন, “গর্ত বোজানোর কাজ শুরু হয়েছে। বর্ষার পর রাস্তাটির কাজ পূর্ণাঙ্গ রূপে শুরু হবে। আশা করি পুজোর মধ্যে রাস্তা সংস্কারের শেষ হবে।”
ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা অমিত চক্রবর্তী বলেন, “ভুটান যাওয়ার ওই রাস্তার পাশে বাগানগুলির অবস্থা করুণ। রাস্তার বেহাল দশার কারণে শ্রমিকদের রেশন পৌঁছে দেওয়া খুবই সমস্যার ব্যাপারে হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাগানের রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চরম সমস্যা হচ্ছে। রাস্তা কবে ঠিক হবে তা বুঝতে পারছি না।” বীরপাড়ার আরএসপি নেতা গোপাল প্রধানের কথায়, “রাস্তার হাল অত্যন্ত খারাপ। শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। দ্রুত মেরামত না হলে বড় ধরনের আন্দোলনে নামা হবে।”
ব্লক তৃণমূল সভাপতি পঙ্কজ দাস বলেন, “রাস্তার হাল অত্যন্ত খারাপ। যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। মেরামতির কাজ শুরু করার জন্য পূর্ত আধিকারিকদের বলেছি। বিষয়টি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে জানানো হবে।” কংগ্রেস নেতা মান্না জৈন বলেন, “হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মামলা করার পর ঘুম ভেঙেছে পূর্ত দফতরের। রাস্তা যখন ভাঙছিল সে সময় মেরামতি করার কথা চিন্তা করেনি তাঁরা। মামলা হতে তারা টেন্ডার দিয়েছে বলে শুনেছি।” |