চাকরি দেওয়ার নাম করে এক মহিলার কাছ থেকে বেশ কয়েক হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়ার বকজুড়ি পঞ্চায়েতে। ধৃত কল্যাণী মণ্ডল নিজেকে হাড়োয়া ব্লক মহিলা তৃণমূল নেত্রী বলে দাবি করেন। পুলিশ জানিয়েছে, মরিয়ম বিবি নামে এক মহিলা লিখিত অভিযোগ করেছেন, তাঁকে আইসিডিএস প্রকল্পে চাকরি দেওয়া হবে বলে তাঁর কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা নেন জয়কৃষ্ণ মণ্ডল ও কল্যাণী মণ্ডল। অভিযোগ পেয়ে ওই দু’জনকে রবিবার গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১০ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। কল্যাণীদেবী অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, দলেরই এক গোষ্ঠীর চক্রান্তের শিকার হয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব কল্যাণীদেবীকে দলের একজন কর্মী বলে মানলেও তাঁদের বত্তব্য, কেউ প্রতারণা করলে পুলিশ তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিক। এ বিষয়ে তাঁদের কিছু বলার নেই। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি আইসিডিএস কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে মহকুমার বিভিন্ন ব্লক থেকে স্বজনপোষণ, দুর্নীতি-সহ নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করে। এমনকী টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। হাড়োয়ার বকজুড়ি পঞ্চায়েতের আকন্দবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মরিয়ম বিবি আইসিডিএস প্রকল্পে নিজের চাকরির জন্য নানাজনের কাছে দরবার করছিলেন। সেই সূত্রে রাখালপল্লির বাসিন্দা কল্যাণী মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। কল্যাণীদেবীর স্বামী জয়কৃষ্ণবাবুর হাড়োয়া বাজারে সারের দোকান রয়েছে। মরিয়ম বিবির অভিযোগ, টাকা দিলে আইসিডিএস-এ চাকরি করে দেবেন বলায় তিনি-সহ আরও কয়েকজন কল্যাণী মণ্ডলকে টাকা দেন। কল্যাণীদেবী তাঁর চাকরির জন্য কয়েকজনকে টাকা দিতে হবে বলে ৬৫ হাজার টাকা নেন বলে জানান মরিয়ম বিবি। কিন্তু পরীক্ষার পরে প্রকাশিত নামের তালিকায় নাম না দেখে কল্যাণীদেবীর কাছে টাকা ফেরত চাইতে গেলে তিনি টালবাহানা করতে থাকেন। পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় ফের ভাইপো আর্শাদ মোল্লাকে নিয়ে মরিয়ম বিবি কল্যাণীদেবীর কাছে গিয়ে টাকা ফেরত চান। তা নিয়ে দু’পক্ষে বচসা বাধে। পরে কল্যাণীদেবী কয়েক হাজার টাকা মরিয়মকে দেন। কিন্তু তিনি পুরো টাকা ফেরত চাইলে তাঁদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হল বলে মরিয়ম বিবির অভিযোগ। এর পর তিনি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে ঘটনার কথা জানিয়ে কল্যাণীদেবী ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জু বিশ্বাস বলেন, “কল্যাণী মণ্ডল আমাদের দলের একজন সাধারণ কর্মী। সেই সুযোগ নিয়ে তিনি বিধায়ক ও আমার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন শুনেছি। তবে আমাদের দলে দুর্নীতির কোনও আশ্রয় নেই। পুলিশ এ ব্যাপারে যা আইনি ব্যবস্থা নেবে তাতে আমাদের সমর্থন থাকবে।” |