|
|
|
|
গ্রামছাড়া যুবক, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘উসকানি’র নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পাণ্ডুয়া |
পারিবারিক কোন্দলে তৃণমূলের ‘উসকানিতে’ একটি পরিবারকে এলাকা ছাড়া হতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই যুবকের বাড়ির বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ৮ মাসের ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকছেন। হুগলির পাণ্ডুয়ার জামনা পঞ্চায়েতের পীড়াগ্রামের বাসিন্দা অমিয়জীবন কুমার নামে ওই যুবক গোটা বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্বকেও। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে শীঘ্রই আলোচনায় বসা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে, পাণ্ডুয়ার বিডিও মধুরিমা সেনগুপ্ত বলেন, “অভিযোগ পেয়ে আমাদের দফতরের অফিসার সরেজমিনে তদন্তে গিয়েছিলেন। বিবদমান দু’পক্ষই উপস্থিত ছিল। বিষয়টি সম্পূর্ণ পারিবারিক কোন্দল। এর মধ্যে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। কেউ গ্রামছাড়া রয়েছেন, এমন অভিযোগ আমাদের কাছে নেই।”
পরিবারটির অভিযোগ, গ্রামের তৃণমূল নেতা গৌতম ঘোষ, সুচিস্মিত কুমার ওরফে বাবু, বিজয় কোলে, শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ ওরফে সোনা, সমীর পরামানিক ওরফে কচি-সহ গ্রামবাসীদের একাংশের ‘শাসানি’তে মাস দু’য়েক ধরে ঘরছাড়া হতে হয়েছে। রান্নাঘরের টালি, চালা ভেঙে দেয় হামলাকারীরা। অমিয়র বৃদ্ধা মা, গোপেশ্বরীদেবী একা বাড়িতে থাকছেন। বিদ্যুৎহীন অবস্থাতেই দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁকে। রাস্তার কল থেকে জল আনতে হচ্ছে।
গোলমালের সূত্রপাত অমিয়র সঙ্গে তাঁর বিধবা বৌদির বিবাদকে ঘিরে। অমিয়র দাবি, “বছর দশেক আগে বড়দার মৃত্যুর পরে বৌদি চিত্রা কুমার আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। বাবা আমার নামে যাবতীয় সম্পত্তি লিখে দেন। বৌদি মাকে মৃত দেখিয়ে অনেক টাকা হাতিয়ে নেন। এই প্রতারণার জন্য ডিস্ট্রিক্ট ডেলিগেট (দেওয়ানি বিচারক) নিজে বৌদির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাবা মারা যাওয়ার পরের দিন বৌদি লোকজন নিয়ে এসে জোর করে থাকতে শুরু করেন। হামলাকারীরা বৌদিকে হাতিয়ার করেছে। বলছে, তাঁকে অর্ধেক সম্পত্তি লিখে না দিলে আমাকে গ্রামে ফিরতে দেবে না।”
অমিয় বলেন, “বাবা কংগ্রেস করতেন গৌতম ঘোষদের সঙ্গে। ওদের কিছু অনৈতিক কাজের প্রতিবাদে বাবা দল ছেড়ে দেন। তাই বাবার উপর ওদের রাগ ছিল। গৌতমবাবুরা এখন তৃণমূল করেন। বাবার উপর প্রতিশোধ নিতেই পারিবারিক বিষয়কে অছিলা হিসেবে জড়িয়ে ওঁরা অত্যাচার করছেন।” গৌতমবাবুর অবশ্য বক্তব্য, “এটা গ্রামবাসীদের ব্যাপার। দলের কোনও যোগ নেই।” একই দাবি করেছেন তৃণমূলের পাণ্ডুয়া ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলাম।
চিত্রাদেবীর দাবি, “স্বামীর মৃত্যুর পরে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাড়িয়ে দেন। এখন গ্রামবাসীদের সাহায্যে থাকতে পারছি। ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ওকে নিয়ে কোথায় দাঁড়াব? শ্বশুরের ভিটের ভাগ আমার কি প্রাপ্য নয়? মাস দু’য়েক আগে অমিয় আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে চলে যায়।” দেওরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন চিত্রাও। শাশুড়িকে মৃত দেখিয়ে টাকা তোলার প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, “উকিল কী ভাবে মামলা সাজান, বলতে পারব না।” |
|
|
|
|
|