|
|
|
|
ইন্দিরা আবাস প্রকল্প |
বাড়ি তৈরি না-হওয়ায় টাকা ফেরতের নির্দেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
বছর দু’য়েক আগে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পাওয়া সত্ত্বেও বাড়ি তৈরি না করায় আরামবাগের বাতানল পঞ্চায়েত এলাকার ১৭ জন উপভোক্তাকে সেই টাকা ফেরতের নির্দেশ দিল প্রশাসন।
আরামবাগের বিডিও মৃণালকান্তি গুঁই বলেন, “হয় তাঁরা বাড়ি তৈরি করবেন, নয় তো টাকা ফেরত দিতে হবে এমনটা জানিয়ে গত ১৭ জুলাই শুনানিতে ১৭ জন উপভোক্তাকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে তাঁরা আসেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
খেলাপি উপভোক্তাদের এই নির্দেশে দিশাহারা। তাঁদের বক্তব্য, ওই টাকায় পাকা বাড়ি করা যাচ্ছে না। তাঁরা মাটির বাড়ি করার অনুমতি চাইছেন। পক্ষান্তরে, যদি পাকা বাড়ি করতেই হয় তা হলে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যাঙ্ক-ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থার দাবিও তুলেছেন তাঁরা।
কেন্দ্রের ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে বর্তমানে নতুন বাড়ি তৈরির জন্য ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। দুই কিস্তিতে ওই টাকা দেওয়া হয়। প্রথম কিস্তির টাকা ব্যবহারের শংসাপত্র দেওয়ার পর তদন্ত করে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হয়। প্রকল্পের উপভোক্তা হতে হলে সংশ্লিষ্ট পরিবারকে বিপিএল তালিকাভুক্ত হতে হবে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাতানল পঞ্চায়েতের ১৭ জন উপভোক্তা বছর দু’য়েক আগে ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা বাড়ি করেননি বলে তদন্তে জানা যায়। গত দেড় বছরে তাঁদের বাড়ি তৈরি করে সরকারি টাকার সদ্ব্যবহারের জন্য বারবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কিছুই করেননি। তাই দ্বিতীয় দফার টাকা আটকে তাদের প্রথম কিস্তির টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
চকহাজি গ্রামের খেলাপি উপভোক্তা আলেয়া বেগম, বাতানল গ্রামের বিজলি মালিক বা বেঙ্গা গ্রামের আদুরি দাসের বক্তব্য, “ইট-সিমেন্টের দাম সম্পর্কে সরকারের কোনও ধারণা নেই। এই পঞ্চায়েত এলাকা বন্যাপ্রবণ। পিলার না দিলে বাড়ি টিকবে না। ওই টাকায় কি পিলার দেওয়া বাড়ি হয়!” আলেয়া বেগমের কথায়, “শুনেছি সরকারের ওই টাকার পর ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যাঙ্ক-ঋণ মিলবে। কিন্তু সে ব্যাপারে ব্লক ও পঞ্চায়েত উদ্যোগী হচ্ছে না।” একই ভাবে ঋণের দাবি জানিয়েছেন অন্য খেলাপি উপভোক্তারাও। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যাঙ্ক-ঋণ পাওয়া যায়। পঞ্চায়েতকেই তার ‘গ্যারান্টার’ হতে হবে বলে নির্দেশিকায় আছে। কিন্তু ওই ঋণ শোধ হবে না, এই আশঙ্কায় ব্যাঙ্ক ঋণ দিতে রাজি নয়। পঞ্চায়েতও ‘গ্যারান্টার’ হতে রাজি না।
বাতানল পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের বনলতা পাত্র বলেন, “এই পঞ্চায়েতে ওই টাকায় আরও অনেক লোক বাড়ি করেছেন। পিলার ছাড়া সেই বাড়িগুলি টিকেও রয়েছে। ওই উপভোক্তাদের এই অজুহাত মানা যায় না। টাকা পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বাড়ির কাজ শুরু করার কথা। অথচ, গত দু’বছরে তাঁরা সেই কাজ করতেই পারেননি।” |
|
|
|
|
|