সম্পাদকীয় ২...
শুভ সূচনা
গোর‌্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসনের (জিটিএ) নির্বাচিত ৪৫ জন সদস্য এবং মনোনীত পাঁচ জন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল সিন্ধে এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শপথ লইয়াছেন। বহু কাল পরে পার্বত্য দার্জিলিঙে আবার একটি নির্বাচিত প্রশাসন ক্ষমতাসীন হইল। ইহা ওই এলাকা এবং সমগ্র রাজ্যের পক্ষেই সুসমাচার। প্রত্যাশিত ভাবেই নির্বাচিত এই প্রশাসনের চেয়ারম্যান হইয়াছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। সেই সঙ্গে তাঁহার দায়িত্বও রাতারাতি বাড়িয়া গেল। এখন আর তিনি গোর্খা আন্দোলনের নেতা নন, বন্ধ-ধর্মঘট-অবরোধ চাপাইয়া দিবার জঙ্গি প্রবক্তা নন, গোর্খাদের সুশাসন দিবার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক। অতঃপর পার্বত্য দার্জিলিঙে যদি অপশাসন কায়েম হয়, সুবাস ঘিসিংয়ের সময়ের মতো দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের পঙ্কিল আবর্তে এই স্বশাসিত সংস্থা নিমজ্জিত হইয়া পড়ে, তবে তাহার সার্বিক দায় কিন্তু বিমল গুরুঙ্গের উপরেই বর্তাইবে, সে জন্য তিনি কেন্দ্রকে কিংবা মহাকরণের সরকারকে দোষ দিতে পারিবেন না।
সম্ভবত গুরুঙ্গ নিজেও সে কথা বিলক্ষণ জানেন। জানেন ডুয়ার্স ও তরাইয়ের যে সব মৌজা গোর্খা-অধ্যুষিত, সেগুলির বাসিন্দারাও আঞ্চলিক প্রশাসনের ক্রিয়াকলাপের উপর নজর রাখিবে। শেষ পর্যন্ত গুরুঙ্গ হয়তো ডুয়ার্স হইতেও তাঁহার দলের লোকদেরই মনোনীত করিবেন। তবু সেটিও এক ধরনের প্রতিনিধিত্বের মর্যাদা দিবে। অন্য দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ এক পরিতৃপ্ত জননেত্রী। তিনি পাহাড়ে শান্তি ও সম্প্রীতি ফিরাইবার প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন। আজ তিনি বহুলাংশে সফল। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা যে তাঁহার উপর ভরসা রাখে, কলিকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের একুশে জুলাইয়ের সভামঞ্চ হইতে মোর্চা নেতা হরকা বাহাদুর ছেত্রীর একটি মন্তব্যই তাহার প্রমাণ। যত দিন রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী, তত দিন গোর্খারা পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলিবে না এই ঘোষণা পার্বত্য দার্জিলিঙে স্থায়ী শান্তি আনিতে যথেষ্ট নয়। কিন্তু সেখানে শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য ফিরাইয়া আনিতে, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের উপযুক্ত পরিবেশ রচনা করিতে এবং পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করিতে ইহা সফল হইয়াছে।
সমতলের কাছে, অবশিষ্ট রাজ্যের কাছেও কি ইহার গুরুত্ব কম? দার্জিলিঙের সমস্যা মূলত উন্নয়নহীনতার সমস্যা, পাহাড়ের পাশাপাশি ডুয়ার্স ও তরাই-সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গই যাহার শিকার। মুখ্যমন্ত্রী তাই প্রথমাবধি দার্জিলিঙের উন্নয়নকে উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে জড়াইয়া লইয়াছেন এবং এ ব্যাপারে আলাদা করিয়া নজর দিতে একজন পূর্ণাঙ্গ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী এবং স্বতন্ত্র একটি সচিবালয় নিয়োগের উদ্যোগও লইয়াছেন। উত্তরবঙ্গে কলিকাতা হাইকোর্টের একটি সার্কিট বেঞ্চ-এর উদ্বোধনের পরিকল্পনাও সেই লক্ষ্যেই নিয়োজিত। ভূতপূর্ব বামফ্রন্ট সরকারকে কিন্তু এ ধরনের কোনও উদ্যোগ লইতে দেখা যায় নাই। প্রধানত মমতার পীড়াপীড়িতেই নবনির্বাচিত আঞ্চলিক প্রশাসনের আর্থিক তহবিল ও ক্ষমতার এক্তিয়ার বাড়ানো হইয়াছে। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিটিএ-র জন্য ২০০ কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করিয়াছেন, ভবিষ্যতে আরও অর্থ মঞ্জুরের আশ্বাসও দিয়াছেন। রাজ্য সরকারের শুভেচ্ছা লইয়া পার্বত্য দার্জিলিং নূতন করিয়া উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করিতেছে। রাজ্যবাসীর শুভেচ্ছাও তাঁহাদের সঙ্গে থাকিল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.