সম্পাদক সমীপেষু...
নিন্দা-প্রশংসা সবই পেয়েছেন
অশোক মিত্র মহাশয় আত্মঘাতী বাঙালি প্রসঙ্গে আলোচনায় রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে বলেছেন, ‘তিনি যত দিন বিদেশিদের ওই মহার্ঘ শিলমোহরটি না পেয়েছিলেন, তাঁর সমালোচকের অভাব ছিল না’ (১২-৭)।
এই প্রসঙ্গে বলার কথা, ১৯১৩ সালে নোবেল বিজয়ীর শিলমোহর লাভের আগে শুধু মাত্র রবীন্দ্র-সমালোচনা নয় কবি-প্রশস্তিও লক্ষণীয়। ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় সম্পাদিত ইংরেজি সাপ্তাহিক ‘সোফিয়া’-র ১ সেপ্টেম্বর সংখ্যায় তাঁরই লিখিত ‘দ্য ওয়ার্ল্ড পোয়েট অব বেঙ্গল’ রচনাটি স্মর্তব্য। তিনিই প্রথম রবীন্দ্রনাথকে ‘বিশ্বকবি’ আখ্যা দেন। প্রবন্ধের শেষ স্তবকে ব্রহ্মবান্ধব লিখেছিলেন, ‘ইফ এভার দ্য বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ ইজ স্টাডিড বাই ফরেনার্স ইট উইল বি ফর দ্য সেক অব রবীন্দ্রনাথ। হি ইজ আ ওয়ার্ল্ড-পোয়েট’।
নোবেল লাভের প্রায় দু’বছর আগে ১৯১২-র ২৮ জানুয়ারি টাউন হলে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে কবির জন্মদিনের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অভিনন্দন সভা হয়। অভিনন্দনপত্র পাঠ করেন রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী। পরে ওই বছরের ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি আরও দুটি সভায় কবিকে অভিনন্দিত করা হয়। এই সভাগুলিতে জগদীশচন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত প্রমুখ সুধিজন উপস্থিত ছিলেন।
অন্য দিকে, ‘সুরেশচন্দ্র সমাজপতি সম্প্রদায়’ এবং দ্বিজেন্দ্রলাল শুধু নন, নোবেল লাভের পরেও ১৯৪৯-এ হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এক ছাত্রসভায় রামমোহন থেকে রবীন্দ্রনাথ যে সংস্কৃতির প্রতিভূ তার নিন্দা করেন। পরে একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করা হয়, রামমোহন বিবেকানন্দকে ‘ব্রিটিশের এজেন্ট’ বলা হয়। তাঁর কথা দিয়েই বলা যায়, ‘সে সমালোচনা যুক্তিহীন, তথ্যপ্রমাণ লঘু, নিন্দার জন্যই নিন্দাবর্ষণ।’
দ্বিজেন্দ্রলাল যেমন রবীন্দ্রনাথের ‘সোনার তরী’, ‘নিরুদ্দেশ যাত্রা’ কবিতা এবং চিত্রাঙ্গদা-র বিরূপ সমালোচনা করেছেন, ‘আনন্দ বিদায়’ প্যারডিতে রবীন্দ্রনাথকে অশালীন আক্রমণ করেছেন, অপর দিকে ‘দুই বিঘা জমি’, ‘পুরাতন ভৃত্য’, ‘যেতে নাহি দিব’ কবিতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করেছেন। সুখ্যাতি করেছেন কয়েকটি ছোট গল্পের। ‘গোরা’ উপন্যাসের প্রশংসাসূচক আলোচনা করে প্রবন্ধ লিখেছেন। ‘বিরহ’ প্রহসন কবিকে উৎসর্গ করেছেন। রবীন্দ্রনাথও তাঁর আর্যগাথা, মন্দ্র, আষাঢ়ে কাব্যগ্রন্থের অনুকূল আলোচনা করেছেন। এ সম্পর্কে কবি মনোরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক চিঠিতে লিখেছেন: ‘দ্বিজেন্দ্রবাবু আমাকে কিছু বলে নিয়েছেন, আমিও তাঁকে কিছু বলে নিয়েছি।’
সাহিত্যে এমন একাধিক ঘটনা আছে। তাঁকে ধন্যবাদ এই কারণে যে, তিরাশি বছর বয়সে এসে তাঁর আলোচনাটি অনেক পুরনো কথা মনে করিয়ে দিল।
অবাক জলপান
হাওড়া স্টেশনে (পূর্ব) ‘বিশুদ্ধ শীতল জল’-এর কলের সামনে তৃষাতুর মানুষের দাঁড়িয়ে থাকা দেখলে ভিন্ন এক ‘অবাক জলপান’-এর দৃশ্য বলে মনে হয়। পনেরোটি প্ল্যাটফর্মে পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও ‘বিশুদ্ধ শীতল’ জল কেবল মেলে ৪ নং প্ল্যাটফর্মের সামনে ৪টি কলে। স্বভাবতই সেই কলগুলিকে ঘিরে তৃষিত মানুষের লাইন দীর্ঘায়িত হয়। পিপাসা মেটানোর সঙ্গে আছে ট্রেন ধরার তাড়া। তাই অপেক্ষারত যাত্রীদের মধ্যে জলকে ঘিরে অনেক সময়েই রীতিমতো কলহ বেধে যায়।
এই পরিস্থিতিতে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত প্রশ্ন, যেখানে লক্ষাধিক লোকের নিত্য যাতায়াত, সেখানে ‘বিশুদ্ধ শীতল জল’ জোগানোর জন্য শুধু মাত্র চারটি কল কি যথেষ্ট?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.