নিজস্ব সংবাদদাতা • সিউড়ি |
শিক্ষা এবং শিষ্টাচার। স্কুলে দুই-ই শেখান শিক্ষিকারা। কিন্তু সে কারণে কোনও ছাত্রীকে শাসন করা হলে যদি ‘মিথ্যা বদনাম’ দেওয়া হয়, তাঁরা পড়ানোর বাইরে আর কোনও দিকে নজর দেবেন না।
সিউড়ির কালীগতি স্মৃতি নারী শিক্ষানিকেতনের শিক্ষিকারা রবিবার অভিভাবকদের ডেকে এ কথা বলেছেন। শুক্রবার এই স্কুলের এক ছাত্রীর টাকা চুরির ঘটনায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলের টিচার্স রুমের মধ্যে অন্য শিক্ষিকাদের সামনে দুই শিক্ষিকা নগ্ন করে তল্লাশি চালান বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীটি দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছিল। শনিবার সকালে ওই দুই শিক্ষিকাকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছিল। পরে তাঁরা জামিন পেয়েছেন।
স্কুল কর্তৃপক্ষ এই দিন অভিভাবকদের জানিয়েছেন, ছাত্রীদের তাঁরা শুধু পড়ান না, শিষ্টাচারও শেখান। কিন্তু ভুল কাজ করার পরে কোনও ছাত্রীকে শাসন করা হলে যদি শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে বদনাম করা হয়, তাহলে তাঁরা পড়ানো ছাড়া আর কোনও ব্যাপারে নজর দেবেন না। তবে অভিভাবকদের অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা শিক্ষিকাদের সঙ্গে সহমত। অভিভাবক গৌতম দাস বলেন, “শনিবারের ঘটনার পরে শিক্ষিকারা পড়ানো ছাড়া আর কোনও দায়িত্ব নিতে চাইছিলেন না। আমরা তাঁদের অনুরোধ জানিয়েছি, এ রকম কাজ করবেন না। অভিভাবক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, হুমায়ুন ইসলামরা জানান, তাঁরা শিক্ষিকাদের পাশে রয়েছেন। তাঁরা জানান, পুলিশ সুপারের কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কল্পনা রায় বলেন, “ওই ছাত্রীটিকে শাসন করা হয়েছিল। কিন্তু সে মিথ্যা বদনাম দিয়েছে দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।” স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশ অবশ্য অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকার পাশে আগেই দাঁড়িয়েছিলেন। মিথ্যা অভিযোগে তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে দাবি করে শনিবার ছাত্রীদের একাংশ আদালত চত্বরে মিছিলও করে। ছাত্রীর বাবা অবশ্য বলেছেন, “মেয়ের সম্মান নিয়ে স্কুলে ছেলেখেলা করা হয়েছে। তার বিহিত না হওয়া পর্যন্ত ওকে স্কুলে পাঠাব না।” তাঁর প্রশ্ন, এ দিন স্কুলে অন্য অভিভাবকদের ডাকা হলেও তাঁকে ডেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ মতামত জানতে চাননি কেন?
প্রধান শিক্ষিকা কল্পনাদেবী এ দিন অন্য অভিভাবকদের বলেন, “ছাত্রীটির আচরণে আমরা আহত হলেও তাকে বহিষ্কার করছি না। স্কুলে ডেকে ওর ত্রুটি সংশোধনের চেষ্টা করা হবে।” পাশাপাশি, নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলের শিক্ষিকারাও আজ সোমবার এসপির কাছে স্মারকলিপি দিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। |