স্থানীয় কর্মীদের নিয়োগ নিয়ে আন্দোলনকারী গ্রামবাসীদের সঙ্গে বেসরকারি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা কর্তৃপক্ষের বিবাদ তুঙ্গে উঠল। অনশনে বসে ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ১৩ জন গ্রামবাসী। অন্য দিকে, ‘সমাজবিরোধীদের’ নেতৃত্বে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে দাবি করে পুলিশের কাছে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দাবি করলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
জামুড়িয়ার ধাসনা ও বিজয়নগর গ্রাম সংলগ্ন ওই স্পঞ্জ আয়রন কারখানার সামনে বৃহস্পতিবার থেকে স্থানীয়দের নিয়োগের দাবিতে এবং সাবমার্সিবল পাম্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল নেওয়া ও দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে অনশন শুরু করেন ৮০ জন গ্রামবাসী। রবিবার জামুড়িয়ার নিঘায় একটি সাংবাদিক বৈঠক করে কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, আন্দোলনকারীদের নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘সমাজবিরোধীরা’। কারখানা বাঁচাতে পুলিশ কমিশনারের কাছে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আবেদন জানান তাঁরা। তা না হলে কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন বলে দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষের। কারখানার তরফে সুমিত চক্রবর্তী জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁদের সাবমার্সিবল পাম্প দেওয়া হয়েছিল। তবে তা শুধু কারখানার গড়ার সময়ে প্রাথমিক চাহিদা মেটাতে। এখন তাঁরা বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে কারখানার প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। তাঁর দাবি, কারখানার মোট দক্ষ শ্রমিকদের মধ্যে ২২ শতাংশ এলাকার দশ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা বাসিন্দা। ৭০ শতাংশ অদক্ষ শ্রমিকের বাড়ি কারখানার ৫ কিলোমিটারের মধ্যে। সামাজিক উন্নয়নের কাজও নিয়মিত করা হয় বলে তাঁর দাবি। তাঁর অভিযোগ, “কিছু সমাজবিরোধী নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ঘেরাও-অবরোধ করছে। শনিবার রাতে আমাদের এক নিরাপত্তারক্ষীকে বিক্ষোভকারীরা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। তাই আমরা বাধ্য হয়ে প্রশাসনের কাছে কারখানা বাঁচানোর আবেদন জানিয়েছি।”
গ্রামবাসীদের তরফে অভিজিৎ চক্রবর্তীর পাল্টা অভিযোগ করেন, সাবমার্সিবল পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ জল টেনে নিচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। পুকুর ও কুয়োয় জল থাকছে না। দূষণ নিয়ন্ত্রণেও কর্তৃপক্ষ উদাসীন। ২২ মে দু’টি গ্রামের ৩০০ জনের চাকরির পরীক্ষা নেওয়া হলেও ফল ঘোষণা হয়নি। তৃণমূলের জামুড়িয়া ২ ব্লক সভাপতি তাপস চক্রবর্তীও অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষ অবৈধ ভাবে অসংখ্য সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার করে কারাখানা চালাচ্ছেন। ৮০ শতাংশ কর্মীই বহিরাগত। তাঁর কথায়, “আইনের হাত থেকে বাঁচতে বর্ষার জল সংরক্ষণ করে কারখানা চালানোর মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।”
অনশনে অসুস্থ বাসিন্দাদের এক জনকে আসানসোল মহকুমা হাসপাতাল এবং বাকিদের বাহাদুরপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, আইন শৃঙ্খলার বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে। |