অপরাধ রুখতে ঝাড়খণ্ড সীমানায় যৌথ নজরদারি
শ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের সীমানা দিয়ে অবাধে দুই রাজ্যে ঢুকছে দুষ্কৃতীরা-এমনই দাবি দুই রাজ্যের পুলিশের। তাঁরা জানান, সংলগ্ন এলাকায় অপরাধ ঘটিয়ে ফের নিজেদের গোপন ডেরায় গা ঢাকা দিচ্ছে এরা। আর এই সীমানা পেরিয়ে আসা দুষ্কৃতীদের বাগে আনতে হিমসিম খাচ্ছে দুই রাজ্যের পুলিশ। এ অবস্থায় অপরাধ রুখতে দুই রাজ্যের সীমানা এলাকার থানাগুলি যাতে একত্রে কাজ করে তা নিয়ে শনিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন দুই রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকেরা।
কুলটিতে আয়োজিত এই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের তরফে ছিলেন আসানসোল দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ ও ঝাড়খণ্ডের তরফে ছিলেন ডিআইজি (বোকারো) লক্ষ্মণপ্রসাদ সিংহ ও ডিআইজি (দুমকা) দদনজী শর্মা। এছাড়া হাজির ছিলেন আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি, এডিসিপি, ঝাড়খণ্ডের সীমানা লাগোয়া জেলাগুলির পুলিশ সুপার ও দুই রাজ্যের সীমানা এলাকার থানা আধিকারিকেরা। আসানসোল দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ বলেন, “রাজ্যের সীমানা এলাকায় অপরাধ ঘটিয়ে অবাধে দুষ্কৃতীরা যেন সীমানা পেরিয়ে গা ডাকা দিতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর তা রূপায়ণ করতেই এই বৈঠক।” ডিআইজি (বোকারো) লক্ষ্মণপ্রসাদ সিংহ বলেন, “সীমানা লাগোয়া অঞ্চলের অপরাধ ঠেকাতে আমরা দুই রাজ্যের থানাগুলিকেই যৌথভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছি।” বৈঠকের শেষে দুই পুলিশ আধিকারিকেরই আশা যে সীমানা লাগোয়া অঞ্চলে অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে থানাগুলি অতীতে যে অসুবিধায় পড়েছে এই বৈঠকের পরে আর তেমন কোনও সমস্যায় তাদের পড়তে হবে না।
কিন্তু সীমানা এলাকাতে দুষ্কৃতীদের গতিবিধি এত অবাধ হওয়ার কারণ কী? আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানান, দুই রাজ্যের সীমানা এলাকাতেই গোপন ডেরা বানিয়ে দুষ্কৃতীরা বাস করছে।
ছবি: শৈলেন সরকার।
এরা কখনও নিজের রাজ্যের সীমানা লাগোয়া অঞ্চলে অপরাধ ঘটিয়ে ভিন্ রাজ্যে ঢুকে গা ঢাকা দেয়। আবার কখনও আগেই সীমানা পেরিয়ে অন্য রাজ্যে ঢুকে অপরাধ করে ফের নিজের ডেরায় ফিরে আসে। আর তাতে দুই তরফের দুষ্কৃতীদেরই ধরতে হিমসিম খায় পুলিশ। কারণ এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গিয়ে দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করে আনার ক্ষেত্রে উভয় রাজ্য পুলিশকেই কিছু প্রথাগত নিয়ম ও জটিলতায় পড়তে হয়। আর এই সুযোগেই দুষ্কৃতীরা নিজেদের গোপন ডেরায় লুকিয়ে পড়ার সময় পেয়ে যায়। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা মনে করছেন, সীমানা এলাকার থানাগুলির মধ্যে যদি সমন্বয় ঘটানো যায় তবে প্রথাগত নিয়ম ও জটিলতার উর্ধ্বে উঠে অপরাধ দমন অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
আসানসোল দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে রাজ্যের সীমানা এলাকায় দুই রাজ্যের পুলিশ যৌথভাবে নজরদারি চালাবে ও একে অপরের দুষ্কৃতী তালিকা নিয়ে এলাকাগুলিতে যৌথ তল্লাশি চালাবে। ঝাড়খণ্ডের ডিআইজি (বোকারো) লক্ষ্মণপ্রসাদ সিংহ জানান, পশ্চিমবঙ্গ ঝাড়খণ্ড সীমানায় কয়লাখনি সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ কয়লা মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। তাঁর আশা, যৌথ পুলিশি নজরদারি শুরু হলে কয়লা মাফিয়াদের এই দৌরাত্ম্যে লাগাম টানা যাবে। আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তা জানান, দুই রাজ্যের সীমানা লাগোয়া রূপনারায়ণপুর, চিত্তরঞ্জন এলাকায় একটি মোটরসাইকেল চুরির চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে ঝাড়খণ্ডে চলে যাচ্ছে। যৌথ নজরদারি শুরু হলে এ ধরনের অপরাধ ঠেকানো সহজ হবে। আসানসোল দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, প্রাথমিকভাবে দুই রাজ্যের যৌথ পুলিশি অভিযানের কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে প্রতিমাসে একটি জরুরি বৈঠক করা হবে। পরবর্তী বৈঠক সেপ্টেম্বরে হবে বলেও জানান তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.