সিপিএম অফিস ভাঙচুর
মহিলা সমবায়ের নির্বাচন নিয়ে ধুন্ধুমার দুর্গাপুরে
মবায় ভোটে অশান্তি অব্যাহত দুর্গাপুরে।
শহরের মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির মোট ৪৬টি আসনের ৩৭টিতে প্রার্থী দিতে পারেনি তৃণমূল। বাকি ৯টি আসনের ভোট ছিল রবিবার। আর সেই ভোট ঘিরেই কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল শহরের সিটি সেন্টারে বিদ্যাসাগর মডেল হাইস্কুল (ভোটগ্রহণকেন্দ্র)।
বহিরাগতদের হটাতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ। জখম হন কোকওভেন থানার ওসি অরূপ সরকার-সহ ৬ পুলিশকর্মী। পুলিশের পাল্টা লাঠিতে জখম হন বেশ কয়েকজন। গ্রেফতার করা হয় ১০ জনকে। ভোটগ্রহণকেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে সিপিএমের জোনাল অফিসে ঢুকে চেয়ার-টেবিল তছনছ ও সাংসদ সাইদুল হককে ধাক্কাধাক্কি করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিকেলে ফল বেরোতে দেখা যায়, ৯টি আসনের ৭টিতে বামেরা ও দু’টিতে তৃণমল প্রার্থীরা জিতেছেন। ভোটে গণ্ডগোল সম্পর্কে তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা দুর্গাপুরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “কয়েকজনের অপরিণত আচরণে এমন ঘটেছে।” সিপিএম অফিসে ‘হামলা’য় জড়িতেরা তাঁদের সমর্থক কি না, সে প্রশ্নে তাঁর বক্তব্য, “এখন তো সবাই সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলের শিবিরে। কী হয়েছে, খোঁজ নিতে হবে।” মহিলা সমবায়ে হারের ব্যাপারে তাঁর দাবি, “পিপল্স কো-অপারেটিভের ভোট মিটতে না মিটতেই এই ভোট এসে পড়ায় প্রস্তুতির সময় পাওয়া যায়নি।”
মহিলা সমবায়ের ভোটে বহিরাগতদের বার করতে আসরে পুলিশ।
গত ১৫ এপ্রিল বহিরাগতদের তাণ্ডবে ভেস্তে যায় ডিএসপি-র এমপ্লয়িজ কো-অপারেটিভ সোসাইটির পরিচালন পর্ষদের ভোট। ১ জুলাই দুর্গাপুর স্টিল পিপল্স কো-অপারেটিভের ভোটেও সিটু এবং আইএনটিটিইউসি-র মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ১৯৯৭ সালে গড়ে ওঠা মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতি প্রথম থেকেই বামেদের দখলে রয়েছে। বর্তমানে এই ব্যাঙ্কের দু’টি শাখা। অংশীদার ৪,৬০৬ জন।
মোট সম্পত্তি ১০ কোটি টাকারও বেশি। এ বার ৩৬টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন বাম প্রার্থীরা। মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় একটিতে কোনও প্রার্থী ছিল না। ভোট সংক্রান্ত খবরাখবর ঠিক সময়ে না পাওয়াতেই অনেক আসনে প্রার্থী দেওয়া যায়নি বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত নির্বিঘ্নেই ভোট হয়। তার পরেই কিছু বহিরাগত ভোটগ্রহণকেন্দ্রের বাইরে ভিড় জমায়। সিপিএমের অভিযোগ, তাদের ভোটারদের বাধা দিতে থাকে তৃণমূলের লোকেরা। পুলিশ জানায়, বহিরাগতদের কেন্দ্র ছাড়ার কথা বলতেই ইট-পাটকেল ছোড়া শুরু হয়।
ভাঙচুর হওয়া সিপিএম পার্টি অফিস।
এরই মধ্যে দুপুর ২টো নাগাদ এক কিলোমিটার দূরে সিপিএমের জোনাল অফিসে ‘চড়াও’ হয় কয়েকজন। বর্ধমান-দুর্গাপুরের সিপিএম সাংসদ সাইদুল হকের অভিযোগ, “তৃণমূলের জনা কুড়ি এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে চেয়ার-টেবিল উল্টোতে থাকে। পুলিশ আসার আগেই অবশ্য তারা পালিয়ে যায়।”
দুপুর আড়াইটে নাগাদ ভোটকেন্দ্রে যান আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব। তিনি মাইকে ভোটার বাদে বাকিদের চলে যেতে বলেন। কিন্তু জনতার একাংশ সেই নির্দেশ না মানায় পুলিশ ধরপাকড় শুরু করে। গণ্ডগোল বাধায় লাঠি চালায় পুলিশ। এডিসিপি বলেন, “ভোটে যারা অশান্তি পাকিয়েছে, তারাই একটি পার্টি অফিসে হামলায় যুক্ত বলে আমাদের ধারণা।”
পার্টি অফিসে ‘হামলা’র প্রতিবাদে দুপুরে সিটি সেন্টারে মিছিল করে সিপিএম। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য রথীন রায়ের দাবি, “গণতন্ত্রের উপরে এমন আঘাত দুর্গাপুরে আগে কখনও হয়নি।” সিপিএমের অভিযোগ, শহরের তৃণমূল কাউন্সিলর চন্দন সাহার নেতৃত্বেই পার্টি অফিসে হামলা হয়েছে। অভিযোগ উড়িয়ে চন্দনবাবুর পাল্টা দাবি, “ওই সময়ে এলাকাতেই ছিলাম না। পরে খবর পেয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছই।” তাঁর অভিযোগ, “ভোট বানচাল করতে সিপিএম-ই অশান্তি পাকায়। পুলিশ উল্টে আমাদের কর্মীদের মারধর করল!”

—নিজস্ব চিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.