‘স্বাধীন’ পঞ্চায়েত চেয়ে পুস্তিকা করছে কংগ্রেস
গামী ‘স্বাধীনতা দিবসে’র পর পঞ্চায়েতের ‘স্বাধীনতা’র দাবিতে আন্দোলনে নামবে কংগ্রেস। ‘স্বাধীনতা’ আমলাতন্ত্রের থেকে।
পঞ্চায়েতের ‘উন্নয়নে’ নজির গড়তে সরকারি আধিকারিকদের দিয়ে নজরদারির ‘মডেল’ তৈরি করার কাজ শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে জন্য বিডিও, এসডিও-দের নিয়ে ‘সমন্বয় কমিটি’ গড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাতে প্রথম থেকেই আপত্তি করেছে কংগ্রেস। গত নভেম্বরে কলকাতায় পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনে কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁদের ‘আপত্তি’র কথা প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন। তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় সম্মেলনে স্পষ্ট বলেছিলেন, “সরকারি আধিকারিকদের দিয়ে গণতান্ত্রিক কাঠামো মজবুত হয় না।” সম্মেলনে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশও বলেছিলেন, “পঞ্চায়েত মজবুত থাকলে গণতন্ত্রও শক্তিশালী হবে।”
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মমতা শেষপর্যন্ত প্রণববাবুকে সমর্থন করায় জোটের দুই শরিকের টানাপোড়েনে সাময়িক বিরতি হয়েছিল। কিন্তু ২১ জুলাই ধর্মতলার সমাবেশ থেকে মমতা পঞ্চায়েত ভোটে ‘একলা চলা’র কথা বলায় কংগ্রেসও পাল্টা আক্রমণ শানাতে প্রস্তুত হচ্ছে। পঞ্চায়েতকে আমলাতন্ত্রের কবল থেকে ‘মুক্ত’ করার জন্য কংগ্রেসের ডাক তারই অঙ্গ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “বাম সরকারের আমলে আমলাতন্ত্র যেমন পঞ্চায়েতগুলিকে গ্রাস করেছিল, এখনও তা-ই চলছে। আমরা পঞ্চায়েতকে আমলাতন্ত্রের হাত থেকে মুক্ত করার আন্দোলন করব। রাজীব গাঁধী যে পঞ্চায়েত রাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা তারই বাস্তবায়ন চাই।”
বস্তুত, পঞ্চায়েতের ঘাড়ে কী ভাবে আমলাতন্ত্র এই আমলেও চেপে বসছে, তা নিয়ে প্রদীপবাবুরা পুস্তিকা তৈরি করছেন। তৃণমূলের জোট শরিক হলেও সরকারের এক বছরের কাজের মূল্যায়ন ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যেই প্রদেশ কংগ্রেস দু’টি পুস্তিকা প্রকাশ করেছে। একই ভাবে পঞ্চায়েত নিয়েও পুস্তিকা প্রকাশ করে প্রচার শুরু করবে তারা। আগামী ১৫ অগস্টের পর ওই প্রচার শুরু হবে বুথ স্তর থেকে। লক্ষ্য পঞ্চায়েত ভোট।
কংগ্রেসের কর্মসূচির উদ্দেশ্য তৃণমূলের নেতাদের কাছে স্পষ্ট। তাঁদের মতে, “পঞ্চায়েত ভোটে একলা লড়তে একটা হাতিয়ার চাই। পঞ্চায়েতে আমলাতন্ত্রের অনুপ্রবেশ হচ্ছে বলে অভিযোগকে হাতিয়ার বানাতে চাইছে কংগ্রেস।” তাঁদের দাবি, “কংগ্রেসের অভিযোগ ধোপে টিকবে না। কারণ, সিপিএম আমলে পঞ্চায়েতে দলতন্ত্র রোধ করার পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের নেত্রী সরকারি আধিকারিকদের হাতে ক্ষমতা দিচ্ছেন।” যা নিয়ে কংগ্রেস নেতাদের পাল্টা বক্তব্য, “ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার ঘাড়ে আমলাতন্ত্র চেপে বসে থাকায় গ্রামোন্নয়নের কাজে জটিলতা হচ্ছে। রাস্তা নির্মাণ, বনসৃজনে স্থানীয় মানুষের মতামতের বদলে বিডিওদের সিদ্ধান্ত প্রাধান্য পাচ্ছে।”
ঘটনাচক্রে, কংগ্রেস রাজ্য মন্ত্রিসভায়ও রয়েছে। যে মন্ত্রিসভার শীর্ষ ব্যক্তিত্ব ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কংগ্রেসের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, “কোন দফতরের কাজে কী হয়েছে, তা আমার পক্ষে বলা অসমীচীন।” তবে সেচ, ক্ষুদ্র-কুটির ও বস্ত্রশিল্পের মন্ত্রী হিসাবে তিনি বলেন, “আমার দফতরের কোনও জায়গায় পঞ্চায়েতের অধিকার কেড়ে নিইনি। সেচের জন্য খাল কাটা বা নদী কাটার জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, সাংসদ, বিধায়ক থেকে শুরু করে জেলাশাসক, মহকুমা শাসক বা বিডিও সকলকে নিয়ে সমন্বয় কমিটি গড়ে কাজ করেছি।”
প্রত্যাশিতভাবেই কংগ্রেসের অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “আইনে নির্দিষ্ট আছে বিডিও-এসডিওদের সঙ্গে পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করা। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এই সমন্বয় ছিল না। সেটা এখন বাড়ানো হয়েছে। প্রদীপবাবুরা তাঁদের দলের মন্ত্রী রমেশকেই জিজ্ঞাসা করুন, আগের তুলনায় আমাদের সরকার গ্রামোন্নয়নে বেশি কাজ করছে কিনা? আগের চেয়ে স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ হচ্ছে কিনা?’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.