রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লার জোগানে অসামঞ্জস্য একটা বড় সমস্যা। তাই এ বার বিদ্যুৎকেন্দ্রে আরও বেশি করে কয়লা মজুত করে রাখতে উদ্যোগী হয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। চাহিদার সময় কয়লার অভাবে যাতে বিদ্যুতের উৎপাদন কোনও ভাবেই ব্যাহত না-হয়, সেই জন্যই এই পরিকল্পনা বলে জানান রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত।
কয়লার মজুত কতটা বাড়াতে চায় সরকার?
বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের এক কর্তা জানান, প্রতিটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সারা বছরই কমপক্ষে এক সপ্তাহের কয়লা মজুত রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে, কোনও কারণে কোল ইন্ডিয়া সাত দিন কয়লা সরবরাহ না-করলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন চালিয়ে যাওয়া যায়। ওই কর্তা বলেন, “সব ক’টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র মিলিয়ে এখন গড়ে সাড়ে তিন লক্ষ টনের মতো কয়লা মজুত রয়েছে। তা বাড়িয়ে কমপক্ষে সাড়ে চার লক্ষ টনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে।”
কয়লার দখল নিয়ে এখন রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে দেশের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলির মধ্যে। কিছু দিন আগে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকও আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছিল, বহু তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেই তিন-চার দিনের বেশি কয়লা মজুত নেই। কোল ইন্ডিয়া চাহিদা অনুযায়ী কয়লা সরবরাহ করতে না-পারার কারণেই বিদ্যুৎ শিল্পে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে মন্ত্রকের তরফে মন্তব্য করা হয়েছিল। বিদ্যুৎকর্তাদের অভিযোগ, গত দু’তিন বছরে কয়লার উৎপাদন তেমন ভাবে না-বাড়ার কারণে কোল ইন্ডিয়াও খানিকটা বেকায়দায় পড়ে গিয়েছে। তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলির চাহিদা মেটাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ওই সংস্থাকে।
এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা তুলনামূলক ভাবে একটু ভাল বলেই নিগমকর্তারা জানান। বক্রেশ্বর বা ব্যান্ডেলে মাত্র দিন তিনেকের কয়লা মজুত থাকলেও কোলাঘাট, সাঁওতালডিহি, সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে অনেক বেশি দিনের কয়লা মজুত রয়েছে। তা সত্ত্বেও ঝুঁকি না-নিয়ে বেশি কয়লা মজুত করে রেখে দিতে চাইছে নিগম। |