লন্ডন আসার পর থেকে আমাকে দু’টো প্রশ্ন বারবার করা হচ্ছিল। অলিম্পিক মশাল কে জ্বালাচ্ছে? আর পুরুষদের একশো মিটার দৌড়ের ফাইনালটা কে জিতবে? সাত তরুণ অ্যাথলিটদের দিয়ে মশাল জ্বালানো হল। লন্ডনের ঐতিহ্য মেনেই যাদের নির্বাচন করা হয়। এই রবিবার দেখতে পাব, এই দুনিয়ার দ্রুততম লোক কে? এটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, দুনিয়ার দ্রুততম মানুষের নাম উসেইন বোল্ট কি না।
অনেককে দেখছি আবার বোল্টের জামাইকান সতীর্থ ইওহান ব্লেককেও ধরছেন। বলাবলি হচ্ছে, একশো মিটার দৌড়ে এই মুহূর্তে বিশ্বসেরা ব্লেক অলিম্পিকেও জিতবেন। মনে হয় ব্লেকের উপর বাজি ধরার কারণ ও হালফিলে জামাইকার অলিম্পিক ট্রায়ালে দু’বার বোল্টকে হারিয়েছে। তা ছাড়া ও নতুনও। কিন্তু বোল্টকে হারানো এখনও কঠিন। |
বোল্ট ও ব্লেক: সতীর্থ, প্রতিদ্বন্দ্বী। |
চলতি বছরে ছোটখাটো চোট ভুগিয়েছে বোল্টকে। কিন্তু তবু ও জামাইকার ট্রায়ালে দ্বিতীয় হয়েছিল। বোল্টের সময় ছিল ৯.৮৬ সেকেন্ড। বোল্টের শুরুটা কিন্তু জঘন্য হয়েছিল। আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে ব্লেক আবার হারায় বোল্টকে। এ বার দু’শো মিটারে। এক সেকেন্ডের তিনশো ভাগের এক ভাগ যা দাঁড়ায়, সেই সময়ের ব্যবধানে।
কিন্তু লন্ডনে একশো মিটার দৌড়ে নামার আগে বোল্ট প্রায় এক মাস সময় পেয়েছে প্রস্তুতির জন্য। শনিবার যার হিটে বোল্ট নামল এবং হালকা চালে দৌড়ে ১০.০৯ সেকেন্ডে শেষ করল। ব্লেকের সেখানে ১০ সেকেন্ড। বোল্টের সেরা সময় ছিল ৯.৫৮ সেকেন্ড। ব্লেকের সেরা সময়ের চেয়ে যা কম। আর বোল্ট প্রস্তুতির জন্য যা সময় পেয়েছিল সেটা বিচার্য হলে ওকে হারানো কঠিন। জামাইকার ট্রায়ালে ওর পারফরম্যান্স কিন্তু বুঝিয়ে দিল, বোল্ট সেই জায়গা থেকে বেশি দূরে নেই যেখানে ওর থাকা উচিত। |
বোল্টের সমস্যা হচ্ছে ও নিজেই। ও নিজের মান এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে যেখানে লোকে ধরেই নেয় যে, বোল্ট নামছে মানে ও-ই জিতবে। আর সেই জয়টাও আসবে বাকিদের চেয়ে অনেক বড় ব্যবধানে। বাকি প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে নিশানা হয়ে দাঁড়িয়েছে বোল্ট। স্বাভাবিক ভাবেই, বাকিরা মনস্তাত্বিক সুবিধাটাও ওর বিরুদ্ধে পায়। এমনকী ব্লেক যদি বোল্টের পিছনে দ্বিতীয় হয়েও শেষ করে, কেউ ওকে প্রশ্ন করবে না। সমালোচনা করবে না। কারণ, ১০০ মিটারের সর্বকালের সেরা স্প্রিন্টারের কাছেই ও হেরেছে।
আর ঠিক এই কারণেই ব্লেক মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই অলিম্পিকেই আমরা দেখেছি, সাঁতারে মাইকেল ফেল্পসের কী অবস্থা হল। সবাই ভেবেছিল চারশো মিটার মেডলিতে ফেল্পস সোনা পাবে। ওকে কিন্তু খালি হাতেই ফিরতে হল। তাই বোল্ট যে একশো মিটারে নিজের সেরা ফর্মে নেই, এটাই কিন্তু ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়াতে পারে। আমি এতটুকু অবাক হব না যদি দেখি প্রথম ষাট মিটার ঠিকঠাক দৌড়ে পরের চল্লিশ মিটারে ঝড় তুলে বাকিদের উড়িয়ে দিচ্ছে বোল্ট। ঠিক চার বছর আগের বেজিংয়ের মতো।
|
আজ বোল্টকে দেখুন |
১০০ মিটার সেমিফাইনাল রাত ১২-১৫।
ফাইনাল রাত ২-২০। |
|