দল ছেড়ে মোদীকে দানব বললেন কেশুভাই
নিজের রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগেই শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন নরেন্দ্র মোদী। চ্যালেঞ্জটা ছুড়ে দিলেন আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেশুভাই পটেল। আজ বিজেপি থেকে ইস্তফা দিয়ে কেশুভাই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নতুন দল গড়বেন। সে ক্ষেত্রে বিধানসভা নির্বাচনে ভোট-ভাগাভাগির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজেপি নেতারা।
গাঁধীনগরে আজ সাংবাদিক বৈঠকে সরাসরি মোদীর বিরুদ্ধে কুশাসনের অভিযোগ এনে দল ছাড়ার ঘোষণা করেন কেশুভাই। তাঁর সঙ্গেই আজ দল ছেড়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কাঁসিরাম রাণা। এ দিন কেশুভাইদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আর এক প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী সুরেশ মেটা, মোদী সরকারের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গোর্ধন জাপাদিয়াও। মোদীর সঙ্গে বিবাদের জেরে পাঁচ বছর আগে বিজেপি ছেড়ে নিজের দল গড়েছিলেন জাপাদিয়া। আজ তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দল ‘মহাগুজরাত জনতা পার্টি’ কেশুভাইয়ের দলে মিশে যাবে। দু-এক দিনের মধ্যেই কেশুভাই নিজের দল গড়ার ঘোষণা করবেন।
আজ চাঁচাছোলা ভাষায় মোদীকে আক্রমণ করে কেশুভাই বলেন, “মোদী একজন দানব। তাঁর নেতৃত্বে গুজরাতে এখন স্বৈরাচারী শাসন চলছে।” মোদীর ‘একনায়কসুলভ’ মনোভাবের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দুর্বলতাকেই দায়ী করেন তিনি। বলেন, “কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মোদীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব রয়েছে।”
নরেন্দ্র মোদী কেশুভাই পটেল
কেশুভাইয়ের দলত্যাগ ও নতুন দল গড়ার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি মুখপাত্র রাজীবপ্রতাপ রুডি বলেছেন, “উনি চাইলে এটা করতেই পারেন।” তবে মোদী শিবিরের আসল চিন্তা অন্য জায়গায়। এই নেতারা ভাবছেন, কেশুভাই হয়তো বিধানসভায় বিপুল ভোটে জিতে আসবেন না, কিন্তু তাঁর প্রভাবে ভোটের আগে দলীয় ঐক্য নষ্ট হতে পারে। সৌরাষ্ট্র এলাকায় পটেল ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে কেশুভাইয়ের প্রভাব এখনও রয়েছে। মোদী চান ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে দেখতে। কিন্তু তার আগে বিধানসভায় জেতাটাও জরুরি। এই অবস্থায় কেশুভাই নতুন দল গড়ে ভোটের অনেক হিসেব উল্টে দিতে পারেন।
দলের একাংশ বলছে, মোদীর বিরুদ্ধে ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়ে কেশুভাই চাইছিলেন তাঁকে দল-বিরোধী কাজকর্মের জন্য বহিষ্কার করা হোক। এতে সঞ্জয় জোশীর মতোই নির্বাচনে সহানুভূতি পেতে পারতেন কেশুভাই। কিন্তু সেই ফাঁদে দল পা না দেওয়ায় আজ নিজে থেকেই ইস্তফা দেন তিনি। তবে আগামী দিনে তিনি যে মোদীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণে যেতে চলেছেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন আজই। কেশুভাই বলেছেন, “রূপকথা বলে, দানবের প্রাণ থাকে ছোট পাখিতে। আর মোদীর মতো দানবের প্রাণপাখি হল ভোটব্যাঙ্ক। মোদীকে এখন ভোটব্যাঙ্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করাই হবে আমাদের লক্ষ্য।”
দুই নেতার মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ২০০১ সালে। সে সময়ে কেশুভাইকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হন মোদী। আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির বিশ্লেষণ, গুজরাতের শহর এলাকায় মোদীর আধিপত্য থাকলেও গ্রামীণ ও আদিবাসী এলাকায় তাঁর ভোটব্যাঙ্কে ক্ষয় ধরেছে। কয়েক মাস আগে পটেল অধ্যুষিত একটি এলাকার উপনির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে আসন খোয়ানো তারই প্রতিফলন বলে মনে করছে দল। দলের বক্তব্য, সুকৌশলে কেশুভাইকে উস্কানি দেওয়ার কাজটি নিয়মিত ভাবে করে আসছিল কংগ্রেস শিবির। এক নেতার কথায়, “আমাদের অনুমান, কংগ্রেসের সমর্থনের জোর থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেশুভাই।” তবে যে ভাবে মোদী নিজেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরছেন, তা পছন্দ নয় দলীয় নেতৃত্বেরই একাংশের। তাই মোদীর অস্বস্তি বাড়িয়েও তাঁর বিরোধী শিবিরকে আজ কতকটা স্বস্তিই দিয়েছেন কেশুভাই পটেল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.