মা-শিশুকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্বাস্থ্যকর্মীরা
বাড়ি কোথায় জানা নেই। নাম? তাও বলেছেন অনেক সাধ্য-সাধনার পরে। এমনই এক তরুণীর সদ্যোজাত ছেলেকে পালন করার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অনেকেই নিয়ে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করায় বিপাকে পড়েছেন মানবাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও নার্সেরা।
ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে খবর, মানবাজারের জিতুঝুড়ি গ্রামে গত ২৮ জুন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে ঘুরতে দেখে বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা মানবাজার থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে উদ্ধার করে তাঁকে মানবাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানেও তিনি নিজের পরিচয় চিকিৎসক ও নার্সদের জানাতে পারেননি। সেই থেকে বছর পঁচিশের ওই মহিলা সেখানেই রয়ে গিয়েছেন। ৩১ জুলাই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই ওই তরুণী একটি ছেলের জন্ম দেন। একে ওই তরুণীকে বাড়ি পাঠাতে না পেরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রাখায় কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিয়ে কিছুটা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। তার উপর নতুন করে তাঁদের উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দিয়েছে ওই তরুণীর ফুটফুটে সন্তান।
মানবাজারের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজিৎ সিং হাঁসদা বলেন, “ওই তরুণীর ছেলেটিকে অনেকেই নিতে চাইছেন। মা থাকতে আমরা ওই শিশুকে অন্যের হাতে তুলে দিতে পারি না। এ দিকে ওই তরুণী নিজের কাজ বা শিশুর দেখাশোনাও ঠিকমতো করতে পারছেন না। এখানে নিরাপত্তা রক্ষী নেই। ফলে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের নজর এড়িয়ে বহিরাগত কেউ শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে পালাতে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।” এই সমস্যার কথা জানিয়ে শুক্রবার তিনি পুরুলিয়া জেলা শিশু কল্যাণ কমিটির পরামর্শ চেয়েছেন।
—নিজস্ব চিত্র।
ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবায় তরুণী আগের থেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কয়েকদিন আগে তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের জানিয়েছেন, তাঁর নাম শকুন্তলা মাঝি। বাড়ি মানবাজারেরই পুটকাটাড় গ্রামে। ওই গ্রামে পুলিশ ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা খোঁজ চালিয়েও ওই তরুণীর পরিচিত কারোওর সন্ধান পাননি। এ দিকে ওই ছোট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁকে বেশিদিন রাখতেও স্বাস্থ্যকর্মীরা ভরসা পাচ্ছেন না। এখানকার নার্স লক্ষ্মী মাহাতো জানিয়েছেন, শিশুর নোংরা কাপড় পরিষ্কার করতেও উনি পারতেন না। সব শিখিয়ে দিচ্ছি।”
মহকুমা শাসক (সদর) শঙ্কর নস্কর বলেন, “ওই তরুণীকে নিয়ে সমস্যার কথা শুনেছি। তবে এই ধরনের বিষয় জেলার শিশু কল্যাণ সমিতি দেখে। ওই তরুণী ও তাঁর সদ্যোজাতকে কোথায় পাঠানো যায় ভেবে দেখা হচ্ছে।” শিশু কল্যাণ সমিতির সদস্য অনিতা পাণ্ডা বলেন, “আমরা মানবাজার স্বাস্থ্য আধিকারিকের চিঠি পেয়েছি। অত ছোট শিশুকে তো হোমে রাখা যাবে না। তাই শিশুটি একটু বড় না হওয়া পর্যন্ত আপাতত তাকে মায়ের সঙ্গে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে এসে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.