ঝাড়খণ্ডে মাওবাদী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযানে এখন থেকে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা সমৃদ্ধ অ্যাম্বুল্যান্স প্রস্তুত থাকছে। জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে আহত জওয়ান এবং পুলিশকর্মীদের কাছে দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতেই এই ব্যবস্থা।
এ ছাড়াও, জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে আহত জওয়ানদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রাজ্যের মাওবাদী প্রভাবিত জেলাগুলির বিভিন্ন ব্লকের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকেও উন্নত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে আজ রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেমলাল মুর্মু বলেন, “জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযানে এখন থেকে স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করবে স্বাস্থ্য দফতরও।” হেমলাল মুর্মু জানিয়েছেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলাকালীন কাছাকাছি থাকবে ‘স্পেশাল ট্রমা-অ্যাম্বুল্যান্স’। এই অ্যাম্বুল্যান্সে ‘অন লাইন’ চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে। অ্যাম্বুলান্স থেকে সরাসরি যোগাযোগ থাকবে ‘হোম ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের’। সেখানে থাকবেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা। আপাতত, ২৭৪টি ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি পশ্চিম সিংভূম এবং খুঁটি জেলার সীমা লাগোয়া, রানিয়ার বোকোপ জঙ্গলে মাওবাদী জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে দুই জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে। দেখিয়ে দিয়েছে অভিযানের সার্বিক ব্যবস্থার ত্রুটিও। সরকারি সূত্রের খবর, বোকোপ জঙ্গল থেকে রাঁচি শহরের দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। গুলিবিদ্ধ সাত জওয়ানকে চিকিৎসার জন্য রাঁচির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। ১২০ কিলোমিটার পথ আসতে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে, কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা যান দুই জওয়ান। পুলিশের একাংশের ধারণা, বোকোপের আশপাশ এলাকায় প্রাথমিক চিকিৎসার সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকলে হয়তো এ ভাবে মরতে হত না ওই দুই জওয়ানকে।
পুলিশ জানিয়েছে, মাওবাদী প্রভাবিত জেলার প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা থেকে রাজধানীর দূরত্ব গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ কিলোমিটার। কোনও কোনও জেলার সঙ্গে রাজধানীর দূরত্ব আরও বেশি। সর্বত্র হেলিকপ্টার নামা-ওঠার সুবিধাও নেই। সড়ক পথই মূল ভরসা। সে ক্ষেত্রে জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে আহত জওয়ানদের রাজধানীর হাসপাতালে নিয়ে আসতে প্রচুর সময় চলে যায়। |