স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন, স্বামী গ্রেফতার
পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে সন্তানদের সমানেই স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন স্বামী। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সালমা ওরফে পাপিয়া সর্দার (২৬)। স্বামী সফিকুল সর্দারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে একটি রক্তমাখা দা। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি থানার কোড়াকাটি পঞ্চায়েতের ধুনচেখালি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধুনচেখালি বাজারে মুদির দোকান রয়েছে সফিকুলের। তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী সাহানারা দেবীর কোনও সন্তান না হওয়ায় সাহানারা বিবিই উদ্যোগী হয়ে স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়েতে রাজি করান। এর পর বাদুড়িয়া থানার কাটিয়াহাট এলাকার বাসিন্দা সালমা ওরফে পাপিয়াকে বিয়ে করেন সফিকুল।
দ্বিতীয় বিয়ের পরে দুই স্ত্রীকে নিয়ে ভালই দিন কাটছিল সফিকুলের। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় পাপিয়ার প্রথম সন্তান হওয়ার পর। দুই স্ত্রীকে বশে রাখতে গিয়ে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে প্রায়ই সর্দার পরিবারে মারামারি বেধে যেত। প্রতিবেশীরা অনেক চেষ্টা করেও সেই অশান্তি মেটাতে সক্ষম হননি। এই অবস্থায় স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে চলে যান সাহানারা বিবি।
সাহানারা বিবি চলে যাওয়ার পরে পাপিয়াকে নিয়ে ভালই কাটছিল সফিকুলের। মাস তিনেক আগে সফিকুলের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাঁকে ফোন করেন সাহানারা। তারপর থেকে মাঝেমধ্যেই দু’জনের মধ্যে মোবাইল ফোনে কথা হত। এ কথা পাপিয়া জানার পরে ফের স্বামী-স্ত্রীতে অশান্তি, মারামারি শুরু হয়। বিবাহ-বিচ্ছেদের ‘নাটক’ করে আসলে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেই এমন করছেন সাহানারা বলে সন্দেহ হয় পাপিয়ার। স্ত্রীর এ হেন সন্দেহ যে অমূলক তা হাজার চেষ্টাতেও তাঁকে বোঝাতে পারেননি সফিকুল। এতে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। নিয়মিত দোকানেও যেতেন না। মাঝেমধ্যে বেরিয়ে গিয়ে এ দিক ওদিক ঘুরে বেড়াতেন।
সফিকুলের ছোট ভাই তরিকুল বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরেন দাদা। রাত ১২টা নাগাদ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ঘুম ভেঙে যায়। পাশেই দাদা-বৌদির ঘর। গিয়ে দেখি দরজা বন্ধ। বেড়ার ফাঁক দিয়ে দেখি বিছানার উপর বসে কাঁদছে দাদার দুই ছেলে বছর পাঁচেকের সাইফুল্লা ও বছর তিনেকের সাহানুর। তাদের সামনেই দাদা-বৌদি হাতে দা নিয়ে মারামারি করছে।” এ সব দেখে তিনি তড়িঘড়ি বাজারে পুলিশ চৌকির দিকে ছোটেন। সব শুনে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। গিয়ে দেখা যায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন পাপিয়া। আর শফিকুল গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সন্দেশখালি থানার ওসি পলাশ মুখোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে যান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সফিকুলকে আটক করা হয়। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বিকেলে সফিকুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক ভাবে জেরায় সফিকুল স্বীকার করেছে যে অশান্তি সহ্য করতে না পেরে রাগের মাথায় সে তার স্ত্রীকে খুন করেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.