স্কুলে ঢুকে ক্লার্ককে মারধর এবং জোর করে সাদা কাগজে তাঁর সই নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার স্বরূপনগরের নিমতলা বিকেপিপিটি হাইস্কুলের ঘটনা। শিক্ষাকর্মী সুরৎচন্দ্র রঞ্জিতকে গইপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্কুলটির পরিচালন সমিতি আগে তৃণমূলের দখলে ছিল। পরে ক্ষমতায় আসে সিপিএম। সম্প্রতি পরিচালন সমিতি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অলোক মণ্ডলের বিরুদ্ধে টাকা গরমিলের অভিযোগ তোলে। তার জেরে গত ১০ জুলাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরে দাঁড়ান অলোকবাবু। পরদিন, ১১ জুলাই, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বগ্রহণ করেন তারকনাথ মণ্ডল। স্কুল পরিচালন কমিটি গরমিলের অভিযোগে তৃণমূলের স্বরূপনগর-২ ব্লক সভাপতি অলোকবাবুকে শো-কজ করে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন অলোকবাবু বলেন, “পরিচালন সমিতিতে সিপিএম আসার পর থেকে আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে। মাত্র দু’দিন সময় দিয়ে হিসেব চাওয়া হয়েছিল। ক্লার্ক ইচ্ছে করে সেই সময় না আসায় ওই হিসেব করা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়।” অবৈধ ভাবে তাঁকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের পদ থেকে সরানো হয়েছে দাবি করে থানায় অভিযোগ করেন অলোকবাবু।
পুলিশ জানায়, গত বুধবার সকালে তারকবাবুর বাড়িতে চড়াও হন কয়েকজন। অভিযোগ, মারধরের হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে। তারকবাবুর কথায়, “তৃণমূলের কয়েকজন বাড়িতে এসে অলোকবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিতে বলে। তা না করলে আমায় মেরে হাড়গোড় ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।” বৃহস্পতিবার তারকবাবুর সমর্থনে স্কুল বন্ধ করে ছাত্রছাত্রীরা মিছিল করায় উত্তেজনা বাড়ে। অভিযোগ, কেন স্কুল বন্ধ করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে শুক্রবার কয়েকজন স্কুলে চড়াও হন। মারধর করা হয় ক্লার্ক সুরৎচন্দ্র রঞ্জিতকে। তিনি বলেন, “বেলা ১২টা নাগাদ হঠাৎ তৃণমূলের নেতৃত্বে একদল লোক স্কুলে ঢুকে স্কুল বন্ধ করার কারণ জানতে চায়। অলোকবাবুকে আমিই ফাঁসিয়েছি দাবি করে আমায় মারধর করে একটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়ে চলে যায়।” তৃণমূলের স্বরূপনগর-১ ব্লক সভাপতি রমেন সর্দার বলেন, “জনপ্রিয় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সিপিএমের এই নোংরা রাজনীতির জবাব দেবে মানুষ। কেন তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা হচ্ছে তা জানতে এ দিন অভিভাবকেরা স্কুলে গিয়েছিলেন। কাউকে মারধর করা হয়নি।” |