প্রতিশ্রুতিই সার, হয়নি বাঁধ-সংস্কার
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মন্ত্রী। তা সত্ত্বেও শুরু হয়নি দাসপুরের নিয়ামতপুরে কংসাবতী নদীর বাঁধ-সংস্কারের কাজ। বাঁধ দখল করে বেআইনি নির্মাণও রয়েছে আগের মতোই।
ঘাটাল মহকুমায় বন্যা ফি বছরের ঘটনা। বছরখানেক আগেই বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয়েছিল দাসপুর ১ ও ২ ব্লকের শতাধিক গ্রাম। জলের তলায় চলে গিয়েছিল ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কও। তখনই সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ঘাটাল মহকুমায় সেচ-দফতরের অধীনে থাকা সব বাঁধ দ্রুত সংস্কার করা হবে এবং দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বাঁধ দখল করে থাকা বেআইনি নির্মাণগুলি ভেঙে ফেলা হবে। কিন্তু কোনও কাজই শুরু হয়নি। মহকুমা সেচ-আধিকারিক নমিত সরকারের স্বীকারোক্তি, “বিভিন্ন নদী-বাঁধের অবস্থা খুব খারাপ। যা অবস্থা এ বারও নদীতে জল বাড়লে যে কোনও জায়গায় বাঁধ ভাঙতে পারে। বিষয়টি দফতরের উপরতলার আধিকারিকদের জানানো হয়েছে।” সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া অবশ্য এখনও দ্রুত কাজ শুরুর আশ্বাসই দিয়ে চলেছেন।
ঘাটাল মহকুমায় শিলাবতী, কংসাবতী ও রূপনারায়ণ মিলে সেচ-দফতরের অধীনে ১৫৩ কিলোমিটার নদী-বাঁধ রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে জমিদারি-বাঁধ। জমিদারি বাঁধগুলি কে রক্ষণাবেক্ষণ করবে তা নিয়ে টানাপোড়েন আছে। ফলে স্থানীয় ভাবে এই বাঁধগুলি ‘বেওয়ারিশ’ বলেই চিহ্নিত। তবে মাঝেমধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ এই বাঁধগুলি সংস্কার করে। কেঠে, ঝুমি, শিলাবতী ও কংসাবতীর কিছু অংশে এই বাঁধ রয়েছে।
ঘাটাল মহকুমার বেশিরভাগ এলাকাতেই বাঁধ ভেঙে বন্যা-পরিস্থিতি তৈরি হয়। জমিদারি বাঁধগুলি সংস্কার না হওয়ায় চন্দ্রকোনা, ঘাটালের বেশ কিছু গ্রাম, চাষজমি ইতিপূর্বেই চলে গিয়েছে নদীগর্ভে। সামান্য বৃষ্টিতেই গ্রামগুলি প্লাবিত হয়। সেচ দফতরের নদী-বাঁধ উঁচু। তবে, নদীর অন্য পাড়ে বাঁধ না থাকায় ঘাটাল শহরের ১২টি ওয়ার্ড-সহ ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০টি পঞ্চায়েত এলাকা, দাসপুর ও চন্দ্রকোনার বেশ কিছু এলাকা ফি-বছরই প্লাবিত হয়। এই নদী-বাঁধগুলি দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। বাঁধের উপরেই হয়েছে রাস্তা। তাতে ট্রেকার, অটোও চলছে! বাঁধের আশি ভাগই দখল হয়ে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে বাড়ি, দোকান। তার উপর সংস্কার না হওয়ায় বাঁধগুলির জীর্ণ-দশা। ২০০৭ সালে ঘাটালে বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। গত বছর দাসপুরের নিয়ামতপুরে কংসাবতীর বাঁধ ভেঙেও প্লাবিত হয়েছিল গ্রামের পর গ্রাম। তার পরেও সেচ-দফতরের কোনও হুঁশ নেই। বন্যার আগে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধের ফাটল মেরামত করেই দায় সারছে তারা। নদী-বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র বলেন, “নদীবাঁধগুলি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করা দরকার। নদী সব সময় বেশি জায়গা চায়। বাঁধের সামান্য অংশে ত্রুটি থাকলেই জলের তোড়ে তা ভেঙে যাবে।” ঘাটালের মানুষ চান, জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় কথায় নয়, কাজে তৎপর হোক সেচ দফতর।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.