দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
আঁধার পথ
...আছে মাঝখানে
রাস্তায় আলো বলতে গাড়ির ‘হেডলাইট’ বা পথের পাশের দোকান থেকে ছিটকে আসা আলো। কলকাতা ও ডায়মন্ড হারবার পুর-এলাকার মধ্যবর্তী ডায়মন্ড হারবার রোডের প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় রাস্তার পাশে আজও কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই।
ফলে এলাকার কয়েক লক্ষ বাসিন্দাকে সন্ধের পরে অন্ধকারে বিপজ্জনক ভাবেই যাতায়াত করতে হয়।
পৈলান, কুনচৌকি, ভাষা, চৌদ্দনম্বর ভাষা, খড়িবেড়িয়া, বাগিরহাট, ধানকল, বিষ্ণুপুর, আমতলা, কৃপারামপুর, প্রতিভানগর, রাজারহাট, শিরাকোল, হাসিমনগর, শিবানীপুর, দোস্তিপুর, সরিষা, বুনোরহাট, কপাটেরহাট এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, সন্ধের পরে ডায়মন্ড হারবার রোডের পাশ দিয়ে যেতে ভয় লাগে। রাস্তার পাশে আলো নেই। প্রচণ্ড গতিতে একের পর এক গাড়ি ছুটে চলেছে।
রাজ্য পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার রোড সম্প্রতি রাজ্য সড়ক থেকে জাতীয় সড়কের মর্যাদা পেয়েছে। এখন এই সড়ক দেখভালের দায়িত্ব রাজ্য পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক শাখার। সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার রোডে সারা দিন যানবাহনের চাপ থাকে। অবিলম্বে ওই রাস্তা চার লেনের করা প্রয়োজন। কিন্তু কয়েকটি এলাকায় দখলদারির সমস্যা এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর রাস্তার পাশে আলোর ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় প্রশাসনের।
কপাটেরহাট এলাকার পর থেকে ডায়মন্ড হারবার পুর এলাকা শুরু হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে কপাটেরহাট থেকে জোকা পর্যন্ত এলাকায় রাস্তার দু’পাশে এখনও পর্যন্ত আলো নেই। অথচ এই অংশ দিয়েই প্রতি দিন এলাকার বাসিন্দারা কলকাতার বিভিন্ন এলাকা বা ডায়মন্ড হারবার-সংলগ্ন এলাকায় যাতায়াত করেন। কিন্তু ডায়মন্ড হারবার পুর এলাকার মধ্য দিয়ে ডায়মন্ড হারবার রোডের যে অংশ গিয়েছে তার দু’পাশে আলো রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
পৈলান এলাকার বাসিন্দা পলাশ মৈত্রের কথায়: “রাতে এমন গতিতে গাড়ি ছোটে যে এ রাস্তা দিয়ে যাওয়া আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অন্ধকারে কিছু দেখা যায় না। সন্ধের পর থেকে এই সব এলাকায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা রোজকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।” বিষ্ণুপুর বিধানসভার বিধায়ক তৃণমূলের দিলীপ মণ্ডল বলেন, “পৈলান থেকে আমতলা পর্যন্ত এলাকাই আমার বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় পড়ে। তবু ওই মধ্যবর্তী এলাকার পুরোটাতেই যাতে আলোর ব্যবস্থা হয় সে জন্য সকলের সঙ্গে আলোচনা করে পরিকল্পনা করব।”
গত কয়েক দশকে এই সব এলাকায় জনবসতির চাপও বেড়েছে কয়েক গুণ। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, বেহালায় মেট্রো চললে এই সব এলাকায় জনসংখ্যার চাপ আরও বাড়বে। তখনও আলোর ব্যবস্থা না হলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াবে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার দু’পাশ অন্ধকার থাকায় এ সব এলাকায় অসামাজিক কাজকর্ম লেগেই আছে। তাঁরা জানান, ডায়মন্ড হারবার রোডের দু’পাশে আলোর ব্যবস্থা করার জন্য বিভিন্ন মহলে বার বার আবেদন করেও লাভ হয়নি।
রাজ্য পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক শাখার এক নম্বর বিভাগের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক চন্দন সেন বলেন, “আমি সবে দায়িত্ব পেয়েছি। সবিস্তার খোঁজ নিয়ে সমাধানের জন্য যা করা দরকার করব।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.