দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
নেই নজরদারি
হতশ্রী উদ্যান
পাঁচিলের রং মুছে গিয়েছে। বড় ঘাসে ভরা। আগাছা গজিয়েছে। খেলার সরঞ্জামগুলিরও খারাপ অবস্থা। এমনই অবস্থা রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকার অধিকাংশ পার্কের। বাসিন্দারা এ জন্য পুরসভার উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন। যদিও পুরসভা সূত্রে খবর, খুব শীঘ্রই পার্কগুলির সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর চারেক আগে এক বার পার্কগুলির সংস্কার হয়েছিল। কিন্তু তার পরে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা হয়নি। ফলে পার্কগুলি এখন ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা অমর সাহার কথায়: ‘‘অনেক খরচ করে পার্ক সংস্কার করা হয়। তার পরে ঠিকমতো যত্ন নেওয়া হয় না।”
পুরসভা সূত্রে খবর, রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকায় পুর-নিয়ন্ত্রিত ৪০টি পার্ক রয়েছে। অধিকাংশ পার্কের হাল খারাপ। কোথাও আগাছায় ভরে গিয়েছে। কোথাও বাচ্চাদের খেলার সরঞ্জাম ভেঙে গিয়েছে। কোথাও আবার পার্কের পাঁচিল ভেঙে পড়েছে। এমনকী, অনেকে পার্কে গরুও বেঁধে রাখেন বলে অভিযোগ।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার এক আধিকারিক জানান, পার্কগুলির সৌন্দর্যায়নের জন্য ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়নস গ্র্যান্ট ফান্ড (বিআরজিএফ) থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। প্রত্যেক কাউন্সিলরকে তাঁর ওয়ার্ডের পার্কের অবস্থা সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য পুরসভাকে জানাতেও বলা হয়েছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পার্কগুলির যত্ন নিয়ে পুরসভা বরাবর উদাসীন। ফলে অধিকাংশ পার্ক নির্মাণ বা সংস্কারের কয়েক বছরের মধ্যেই কার্যত পরিত্যক্ত জায়গায় পরিণত হয়। বাসিন্দাদের নানা অসুবিধা হয়। বার বার আবেদন করলেও ঠিকমতো যত্ন নেওয়া হয় না।
পুরসভার বিরোধী দলের কাউন্সিলর এবং প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের পুর এলাকার অধিকাংশ পার্ক এখন হতশ্রী চেহারায় রয়েছে। বাসিন্দারা এই নিয়ে বার বার অভিযোগ জানালেও পুরসভার তরফে কোনও উদ্যোগ আমাদের চোখে পড়েনি। এই ধরনের সমস্যার কথা উঠলেই পুরসভা বিআরজিএফ তহবিলের কথা বলে।”
পুরসভার একাধিক আধিকারিক জানান, পুর এলাকায় পার্ক নির্মাণ বা সংস্কারের পরে কোনও ‘মনিটরিং’ হয় না। ফলে অল্প দিনের মধ্যেই পার্কগুলির হাল করুণ হয়ে পড়ে। পুরনো বোর্ডের সময়েও যা ছিল নতুন বোর্ডের সময়েও তাই রয়েছে। উপযুক্ত ‘মনিটরিং’ না হলে এ ধরনের সমস্যার সমাধান হওয়া অত্যন্ত কঠিন।
সোনারপুর (দক্ষিণ) বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক এবং পুরসভার বর্তমান উপ-পুরপ্রধান তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম বলেন, ‘‘পার্কগুলির সংস্কারের কাজ আমরা শুরু করেছি। সংস্কার বা নির্মাণের পরে পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.