|
|
|
|
শিক্ষার প্রসারই মূল মন্ত্র, পরামর্শ ইয়েচুরি-শ্যামলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সারা দেশের সব ঘরের ছেলেমেয়েরা এখনও উচ্চ শিক্ষার আঙিনায় পা রাখতে পারে না। শিক্ষার অধিকার প্রসারের লক্ষ্যে লড়াই-ই ছাত্র রাজনীতির গোড়ার কথা হতে পারে। একুশ শতকের ভারতেও। ছাত্র আন্দোলনের নতুন প্রজন্মকে এমন পরামর্শই দিলেন সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের দুই প্রাক্তন নেতা সীতারাম ইয়েচুরি এবং শ্যামল চক্রবর্তী। পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের আর এক নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর তৃতীয় প্রয়াণ বার্ষিকীতে।
ইয়েচুরি এবং শ্যামলবাবু দু’জনেই এখন রাজ্যসভায় সিপিএমের সাংসদ। প্রথম জন দলের পলিটব্যুরো এবং দ্বিতীয় জন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। সুভাষ-স্মরণে ‘খাদ্য ও গণসংগ্রামে ছাত্র আন্দোলন: অতীত ও অভিমুখ’ শীর্ষক বক্তৃতায় দু’জনেই ফিরলেন অতীতে। রবীন্দ্র সদনে শুক্রবার ‘সুভাষ চক্রবর্তী ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত স্মরণ-অনুষ্ঠানে ইয়েচুরি বলেছেন, সত্তরের দশকে তিনি যখন ছাত্র রাজনীতিতে, তখন গোটা দেশের প্রায় ৪ শতাংশ ছেলেমেয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেত। এখন কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাবে ওই হার ১৭%, সিপিএমের হিসাবে ১১%। গড় ধরলে ১৩-১৪%-এর বেশি ছেলেমেয়ে এখনও কলেজ পর্যন্ত পৌঁছয় না।
ইয়েচুরির আরও আক্ষেপ, তিন বছর আগে সংসদে শিক্ষার অধিকার বিল পাশ হলেও ঘরে ঘরে এখনও সে অধিকার পৌঁছয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাব, সব শিশুকে স্কুলে পাঠাতে পরিকাঠামো এবং শিক্ষক নিয়োগ-সহ পাঁচ বছরে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। সে দেশেই টু-জি কেলেঙ্কারিতে নষ্ট হয়েছে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা! ইয়েচুরির বক্তব্য, “কত জন শিশু স্কুলে যাবে, সেটা নির্ধারণ করার ভার যে হেতু রাজনীতির হাতে আছে, ছাত্রছাত্রীদেরও তাই রাজনীতির উপরে দখল রাখতে হবে।” শ্যামলবাবু মেনেছেন, তাঁরা ছাত্র আন্দোলনে থাকাকালীন সারা বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশে সমাজতন্ত্র ছিল। এখন তা নেই। কিন্তু গোটা দেশের প্রেক্ষিতে হিমাচল প্রদেশ থেকে তামিলনাড়ু পর্যন্ত ‘প্রগতিশীল’ ছাত্র আন্দোলনের ‘অগ্রগতি’কে ‘সাফল্য’ই বলতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রসারিত শিক্ষাকে এখন সঙ্কুচিত করার চেষ্টা হচ্ছে। বামপন্থী ছাত্র আন্দোলন আটকাতে তাদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না!” এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যেপাধ্যায় বোঝানোর চেষ্টা করেন, ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপট কী ভাবে বদলেছে। তাঁর কথায়, “এক মুঠো অন্ন, এক পোয়া কেরোসিনের জন্য এ রাজ্যে নুরুল ইসলাম, আনন্দ হাইতদের প্রাণ দিতে হয়েছে। শিক্ষার অধিকার বাম আমলেই প্রসারিত হয়েছে।” আর ইয়েচুরি শেষ করেন সদ্যপ্রয়াত রাজেশ খন্নার সংলাপ দিয়ে “জিন্দেগী লম্বি নহী, বঢ়ী হোনি চাহিয়ে! সুভাষদা’র জীবন ঠিক তেমন ছিল!” |
|
|
|
|
|