ফের চিরাঙে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়াল নামনি অসমের শরণার্থী শিবিরগুলিতে। ফলে ১৫ অগস্টের মধ্যেই শরণার্থীরা তাঁদের ঘরে ফিরে যাবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ যে আশা প্রকাশ করেছিলেন, তাও চলে গেল বিশ বাঁও জলে। দুই গোষ্ঠীরই বক্তব্য, গ্রামে পুলিশ ও আধা-সেনার পাকাপাকি পাহারার ব্যবস্থা না হলে ফেরা সম্ভব নয়। |
গত কালই মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ জানান, গত এক সপ্তাহের মধ্যে চার জেলায় কোনও হাঙ্গামা হয়নি। দিনের বেলা কার্ফু শিথিল করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘরে ফেরা শুরু করেছেন অনেকেই। পুলিশ ও প্রশাসন, ১৫ অগস্টের মধ্যেই সকলকে ত্রাণ শিবির থেকে নিজ নিজ গ্রামে ফেরত পাঠাতে পারবে। সরকারি হিসেবে কোকরাঝাড়, চিরাং, বঙ্গাইগাঁও ও ধুবুরি জেলার ২৭৮টি ত্রাণ শিবিরে চার লক্ষ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বড়ো সংগঠনগুলির দাবি, ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদেরই কেবল পুনর্বাসন দেওয়া যাবে। কেন্দ্রের ঘোষণা করা ৩০ হাজার টাকার পুনর্বাসন প্যাকেজেও উপজাতিরা রাজি নন। তাঁরা পুনর্বাসন বাবদ যুক্তিসঙ্গত, সম্মানজনক অর্থ দাবি করেছেন। বহিরাগতদের হাতে জমি চলে যাওয়ার আশঙ্কা নস্যাৎ করে রাজ্য সরকার অবশ্য জানায়, আশ্রয় শিবিরে থাকা প্রকৃত শরণার্থী ছাড়া কাউকেই পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া হবে না। এ দিকে, ধুবুরিতে শতাধিক ত্রাণ শিবিরে মাথা গোঁজা শরণার্থীকে পাহারা দিচ্ছেন আধা-সেনা ও পুলিশ বাহিনী। তাঁরা এখনই শিবির ছেড়ে গ্রামে ফিরতে মোটেই রাজি নন। সকলেই বলছেন, এখানে কষ্ট করে থাকতে হলেও নিরাপত্তা তো রয়েছে। এক বার গ্রামে ফিরলে ২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তা থাকবে না। আক্রমণ হলে প্রাণ হারাতে হবে। চিরাং জেলার বিজনির চৌরাবাড়িতে গত কাল দু’টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। চলেছে লুঠপাঠও। কাজলগাঁও থেকেও লুঠপাঠের খবর আসায় ঘরমুখো শরণার্থীরা ফের পিছিয়ে এসেছেন।
গগৈ আশ্বাস দিয়েছেন, “গ্রামে ফিরে গেলেও গ্রামবাসীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সরকার নজর রাখবে। বিভিন্ন জায়গায়, ইতিমধ্যে ১০টি পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। আরও ১৯টি আজই বসানো হবে। আমরা মোট ১০৪টি পুলিশ পিকেট বসাবার পরিকল্পনা করেছি। কেন্দ্র আশ্বাস দিয়েছে, সংঘর্ষ থামাতে পাঠানো ৬৫ কোম্পানি আধা সেনাকে প্রয়োজনমতো রেখে দিতে পারব।” কিন্তু সেই আশ্বাসেও বিশেষ ভরসা রাখছেন না ঘরপোড়া, গ্রামছাড়া মানুষগুলি। |