বৈদ্যুতিন গাড়িতে নতুন
ভর্তুকির পথে হাঁটছে কেন্দ্র
ব কিছু পরিকল্পনা মাফিক এগোলে, চলতি মাসেই বৈদ্যুতিন গাড়ির ব্যাটারিতে ভর্তুকি ঘোষণা করবে কেন্দ্র।
দেশে বৈদ্যুতিন গাড়ির বাজার বাড়াতে ২০১১ সালের মার্চে গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়াম-কে সঙ্গে নিয়ে ‘ন্যাশনাল হাইব্রিড/ইলেকট্রিক মোবিলিটি মিশন- ২০২০’ তৈরি করেছিল ভারী শিল্প মন্ত্রক। ওই মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব অম্বুজ শর্মা জানান, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলির জাতীয় পর্ষদের বৈঠক হওয়ার কথা ৭ অগস্ট। সেখানে ভর্তুকি-সহ নানা উৎসাহদানকারী নীতি চূড়ান্ত হলে, এ মাসেই তা ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
আগে বৈদ্যুতিন গাড়িতে ভর্তুকি দেওয়া হলেও, এই প্রথম দেশে ওই গাড়ির বাজার বাড়াতে পুরোদস্তুর কোমর বেঁধে নামছে কেন্দ্র। বিশেষত পেট্রোল ও ডিজেলের দাম নিয়ে নাজেহাল হওয়ার পর পরিবহণ ব্যবস্থায় বিকল্প জ্বালানির উপর আরও জোর দিচ্ছে তারা। তাই শুধু আর্থিক সুবিধা দেওয়ায় আটকে না-থেকে বৈদ্যুতিন গাড়ি তৈরি ও তা ব্যবহারের পরিকাঠামো নির্মাণে জোর দিতে চায় কেন্দ্র। চূড়ান্ত করতে চায় এ সংক্রান্ত নীতিও।
শুধু তা-ই নয়। বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার নিয়ে গাড়ি শিল্পের পাশাপাশি সরকারকেও আরও ভাবাচ্ছে গুজরাত হাইকোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশ। এক বছরের মধ্যে সেখানকার সব গাড়িতে সিএনজি ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে তারা। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, সারা দেশেই এমন বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার বাধ্যতামূলক হলে, কী ভাবে তা কার্যকর করবে কেন্দ্র? দ্রুত তার উপযুক্ত পরিকাঠামোই বা তৈরি হবে কী ভাবে?
এর আগে বৈদ্যুতিন গাড়ির জন্য ভর্তুকি দিত অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রক। যার সময়সীমা শেষ হয় গত মার্চে। কিন্তু অনেকেরই মতে, উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে ওই আর্থিক উৎসাহ তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। বিশেষত পেট্রোল বা ডিজেল-চালিত গাড়ির তুলনায় চড়া দাম এবং চার্জ দেওয়ার সুবিধা না-থাকা বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈদ্যুতিন গাড়ির সামনে। একই সমস্যা হাইব্রিড গাড়িরও (যেখানে প্রথাগত জ্বালানির পাশাপাশি ব্যাটারিতেও গাড়ি চালানো যায়)। সে কারণেই বৈদ্যুতিন গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে হোন্ডা, মারুতি-সুজুকি, মহীন্দ্রা ইত্যাদি সংস্থা আগ্রহ দেখালেও, বাধা হয়েছে সহায়ক পরিবেশের অভাব।
এ দেশে বৈদ্যুতিন গাড়ি জনপ্রিয় হওয়ার পথে দাম ও পরিকাঠামোর অভাব এত বড় বাধা কেন?
সংশ্লিষ্ট শিল্পের মতে, এই গাড়ির প্রযুক্তি এখনও আমদানি করতে হয়। বিশেষত তার ব্যাটারি। যা গাড়ি তৈরির খরচের অন্তত ৩০%। ফলে দেশজ প্রযুক্তি না-এলে এই গাড়ির দাম কমা শক্ত। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ছোট চার-চাকার হাইব্রিড গাড়ির জন্য ১.৫-২ লক্ষ টাকা বাড়তি দিতে হয় ক্রেতাকে। দু’চাকায় তা ২৫-৩০ হাজার। আর এই বাড়তি দামের জন্যই এই গাড়ির বাজার প্রসারিত হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ‘দুষ্ট চক্র’। কারণ, দাম বেশি বলে ভারতে এর ক্রেতার সংখ্যা নামমাত্র। আবার বাজার নেই বলেই এখানে লগ্নি করতে চায় না অধিকাংশ সংস্থা। তাই এই চক্র ভেঙে বাজার তৈরির লক্ষ্যে আপাতত বাড়তি খরচের কিছুটা ভর্তুকি দিতে চায় ভারী শিল্প মন্ত্রক। দেওয়া হতে পারে অন্য সুবিধাও।
তবে শুধু ভর্তুকিতে যে চিড়ে ভিজবে না, তা বিলক্ষণ জানে কেন্দ্র। কারণ, ওই গাড়ি কেনার পর ব্যাটারি ‘চার্জ’ করার জায়গা খুঁজবেনই তার মালিক। যে পরিকাঠামো এখন সীমিত। ভারী শিল্প মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই সমস্যা মেটাতে পার্কিংয়ে চার্জ করার পরিকাঠামো রাখা বাধ্যতামূলক করা হতে পারে বিল্ডিং-প্ল্যানে। এই সুবিধা থাকবে পেট্রোল পাম্প, শপিং মল ইত্যাদিতেও। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি ৫ কিলোমিটারে চার্জ করার সুবিধা থাকা জরুরি। সিয়াম ও উপদেষ্টা সংস্থা বুজের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২০-এর মধ্যে দেশে ৫০-৭০ লক্ষ হাইব্রিড বা বৈদ্যুতিন গাড়ি বিক্রির সম্ভাবনা আছে।
সিয়ামের সিনিয়র ডিরেক্টর সুগত সেন জানান, কেন্দ্রের নয়া নীতি চূড়ান্ত হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তাঁরা। তা চূড়ান্ত হলে বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে এ দেশে লগ্নি করবে বলেই তাঁর বিশ্বাস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.