|
|
|
|
৮ই বেলপাহাড়িতে মমতা |
বেহাল পথে বাস বন্ধ, অবশেষে সংস্কারে অর্থ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম |
কোথাও এক মাসের উপরে বাস বন্ধ। কোথাও হেলে-দুলে যা হোক করে এগিয়ে চলছে গাড়ি। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। রাস্তার সংস্কার চেয়ে বার বার দাবি জানিয়েও ফল মেলেনি বলে বাস মালিকদের অভিযোগ। এত দিনে রাস্ত-সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ করেছে সরকার। বরাদ্দের পরেও অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে। বর্ষার সময় টাকা এলেই বা কী লাভ! কাজ তো হবে না। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, বর্ষার পরেই যাতে দ্রুত রাস্তা মেরামত শুরু করা যায়, সে জন্য পদক্ষেপ করা হবে। |
|
খড়্গপুরের সাহাচক-টাটা মেটালিকস্ রাস্তা বেহাল। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
বিনপুরের হাড়দা থেকে পাপটপুর। ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি ভেঙেচুরে একাকার। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার উপর জল জমে যায়। কোথায় কত বড় গর্ত চোখে দেখা যায় না। চালককে অনুমানের উপর ভরসা করেই গাড়ি চালাতে হয়। ফলে দুর্ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি। তার উপর রাস্তায় থাকা একটি কালভার্টও এক সময়ে ভেঙে পড়ে। বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বাধ্য হন বাস মালিকেরা। অথচ ওই রাস্তা দিয়েই বিনপুর, হাড়দা, মুরগী, বক্সী হয়ে বাঁকুড়া যাওয়া যায়। ৯টি বাস চলাচল করে ওই রাস্তায়। এর বাইরেও মালবহন করার জন্য লরি ও ছোট গাড়িও যাতায়াত করত। বেহাল রাস্তার কারণে এখন এ-সবই বন্ধ। বাঁকুড়াগামী বাসগুলি এখন শিলদা হয়ে চলছে। স্থানীয় বাস মালিক বরুণ ঘোষ বলেন, “রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে কহতব্য নয়। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েছে। এ বারও মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি দেব। দ্রুত রাস্তার সংস্কার ছাড়া বাস চালানো কঠিন।” ফলে এলাকার মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। আগে বাসে করে ওই এলাকার ১৫-২০টি গ্রামের মানুষ বিভিন্ন দিকে যাতায়াত করতেন। এখন ভরসা বলতে সাইকেল বা মোটর সাইকেল। সবার তো আর মোটর সাইকেল নেই। তাঁদের সমস্যা আরও গভীর। এ বার ওই রাস্তা সংস্কারে প্রায় ৩ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর। বর্ষার পরেই দ্রুত কাজ শুরুর আশ্বাসও দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু তাতেও অবশ্য খুশি নন বাস-মালিকেরা। তাঁদের দাবি, বিনপুর থেকে বক্সী পর্যন্ত পুরো রাস্তাটিই বেহাল। পুরো রাস্তারই সংস্কার প্রয়োজন। নতুবা বাস চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো থাকেই, তার বাইরেও গর্তে পড়ে বাসের ক্ষতিও হয়। তাতে বাস চালিয়ে লাভের আশা করা যায় না।
একই অবস্থা গোপীবল্লভপুরের আসুই থেকে নুড়িশোলের রাস্তা। ১৪ কিলোমিটার লম্বা রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরেই বেহাল। এ বার তার জন্যও ৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে সরকার। ওই রাস্তা দিয়ে ৫টি বাস চলাচল করে। একাধিক ট্রেকার চলে। ওড়িশা লাগোয়া নুড়িশোল দিয়ে ওড়িশা যান এলাকার মানুষ। বেহাল রাস্তার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। তাই দ্রুত রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন এলাকার মানুষ। খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার সাহাচক থেকে টাটা মেটালিকস পর্যন্ত রাস্তাটিরও বেহাল দশা। ওই এলাকাটি আবার শিল্পাঞ্চলের মধ্যে পড়ে। রাস্তাটি কে সারাবে? তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই নানা জটিলতা তৈরি হয়েছিল। পঞ্চায়েত জানিয়েছিল, তাদের পক্ষে রাস্তা সংস্কার সম্ভব নয়। কারণ, পঞ্চায়েতের অত টাকা থাকে না যে রাস্তা সংস্কার করতে পারবে। পঞ্চায়েত সমিতিও রাস্তা সংস্কারে রাজি হয়নি। পরে জেলাশাসক জেলার তহবিল থেকে ১২ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা দিয়ে আপাতত সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাতে রাস্তাটি চলাচলের খানিক যোগ্য হয়ে ওঠে। |
|
|
|
|
|