|
|
|
|
৮ই বেলপাহাড়িতে মমতা |
মুখ্যমন্ত্রীর সভা ভরাতে মরিয়া তৃণমূল নেতৃত্ব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
লালগড়ের ‘শিক্ষা’ নিয়ে বেলপাহাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক জনসভায় লোক ভরাতে উদ্যোগী হয়েছে শাসক-দল তৃণমূল। আগামী ৮ অগস্ট বেলপাহাড়িতে জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে গত ২৪ এপ্রিল লালগড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উল্লেখযোগ্য জনসমাগম না-হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছিল প্রশাসন ও শাসক-দল। এ বার বেলপাহাড়ির সভায় তাই কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। গত সোমবার ঝাড়গ্রামের লোধাশুলির একটি অতিথিশালায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের বর্ধিত সভায় জঙ্গলমহলের ১১টি ব্লকের নেতৃত্বকে ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যা’য় লোক নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার বাকি ১৮টি ব্লকের সভাপতিকে তাঁদের এলাকা থেকে ‘সাধ্যমতো’ লোকজন নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আবার জামবনি ও বেলপাহাড়ির ৬টি জায়গায় সাধারণ মানুষের হাতে রাখি পরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক জনসভায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তৃণমূলের জেলা নেতা নির্মল ঘোষ।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বার কয়েক জঙ্গলমহলে এসেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এই প্রথম বার বেলপাহাড়িতে আসছেন তিনি। ৮ অগস্ট দুপুরে বেলপাহাড়ির ব্লক-ময়দানে সভা হবে। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলের মতে, মাওবাদীদের একদা ধাত্রীভূমি বেলপাহাড়িতে গিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে জঙ্গলমহলে ‘শান্তি, উন্নয়ন ও সুশাসন’ ফেরানোর বার্তা দিতে চান মমতা। পাশাপাশি এলাকার দুর্বল দলীয় সংগঠনকে চাঙ্গা করে তোলা লক্ষ্য। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি জনসভায় প্রায় লক্ষাধিক জনসমাগমে উদ্যোগী হয়েছে জেলা তৃণমূল। |
|
মুখ্যমন্ত্রী যাবেন এই পথেই। দ্রুত রাস্তা সারাইয়ের কাজ চলছে
বিনপুরের আঁধারিয়ায়। দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি। |
সোমবারের বর্ধিত সভায় জেলার ২৯টি ব্লকের সভাপতিরা হাজির ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মৃগেন মাইতি, জেলা সভাপতি দীনেন রায়, তৃণমূল নেতা প্রদ্যোৎ ঘোষ, নির্মল ঘোষ, বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোরা। শুধু বর্ধিত সভা নয়, মঙ্গলবার থেকে জঙ্গলমহলের ১১টি ব্লক-সহ জেলার অন্যান্য ব্লকে বুথ-ভিত্তিক কর্মিসভা শুরু হয়েছে। বেলপাহাড়ির মতো যে সব ব্লকে দলীয় সংগঠন কিছুটা দুর্বল, সেখানে একাধিক বার কর্মিসভা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় মানুষজনকে নিয়ে আসার জন্য দলীয় কর্মীদের বুথে-বুথে গিয়ে জোরকদমে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির প্রচার করতে বলা হচ্ছে কর্মিসভায়। জোর দেওয়া হচ্ছে জঙ্গলমহলের ১১টি ব্লকের উপর। জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায়, জেলার দুই কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ ও নির্মল ঘোষেরা জঙ্গলমহলের কর্মিসভাগুলিতে উপস্থিত থেকে লোক ভরানোর নির্দেশ দিচ্ছেন। জঙ্গলমহলের এক ব্লক-তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “আমার ব্লকে ৮৪ টি বুথ। প্রতি বুথ থেকে একটি করে মোট ৮৪ টি গাড়িতে কমপক্ষে দশ হাজার লোকজনকে সভায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব।”
বুধবার বেলপাহাড়ি, জামবনি, বেলিয়াবেড়ার রান্টুয়া ও গোপীবল্লভপুরে কর্মিসভা করেছেন দীনেনবাবু, প্রদ্যোৎবাবুরা। বৃহস্পতিবার লালগড়ে ও শালবনির পিরাকাটায় কর্মিসভা হয়েছে। শনিবার ফের বেলপাহাড়িতে অঞ্চল-ভিত্তিক কর্মিসভা হবে। আগামী রবিবার, ৫ অগস্ট পর্যন্ত জঙ্গলমহলের বিভিন্ন ব্লকে বুথ ভিত্তিক কর্মিসভা করা হবে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য, “জনসংযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে জেলা জুড়েই কর্মিসভা করা হচ্ছে। গত এক বছরে জঙ্গলমহলের উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপ সম্পর্কে মানুষজনকে অবহিত করার পাশাপাশি, বেলপাহাড়ির সভায় লোকজনের যাওয়া-আসার সুবন্দোবস্ত করার জন্য কর্মিদের নির্দেশ
দেওয়া হচ্ছে।”
সাড়ে তিন মাস আগে লালগড়ের সভায় লোক সমাগম কম হওয়ার কারণ হিসেবে গ্রীষ্মের দাবদাহের যুক্তি দেওয়া গিয়েছিল। জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার সরস মন্তব্য, “এ বার ভরা শ্রাবণেও বৃষ্টি সেরকম হচ্ছে না। ফলে, বৃষ্টির অজুহাত ধোপে টিকবে না! তাই মাঠে নামতে হয়েছে।” |
|
|
|
|
|