জিটিএ-র শপথে চান নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে
মমতা নিজেই ফোন করলেন শিন্দেকে
তুন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নতুন সম্পর্কের সূচনা করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দার্জিলিঙে জিটিএ-র শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য নিজেই ফোন করলেন সুশীলকুমার শিন্দেকে।
মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই মনে করেন, পাহাড়ে শান্তি ফেরানো গেলে সেটা হবে একটা বড় সাফল্য। সেই সাফল্যকে সুনিশ্চিত করতে ও বৈধ চেহারা দিতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে জিটিএ চুক্তি সই, এবং তার পরেও কেন্দ্রকে পাশে নিয়েই চলেছেন তিনি। জিটিএ চুক্তি সইয়ের সময়ে তাঁরই আগ্রহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হাজির ছিলেন পি চিদম্বরম। অনেক বাধা-বিতর্ক পেরিয়ে যখন নির্বাচিত জিটিএ শপথ নিতে চলেছে, তখনও কেন্দ্রকে পাশে রাখতে চান মমতা। যে কারণে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে চিদম্বরমের তিক্ততা তৈরি হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শনিবারের শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছিলেন মমতা। ঘটনাচক্রে গত কালের রদবদলে চিদম্বরমের হাত থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব গিয়েছে শিন্দের হাতে। ফলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে নতুন করে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার এই সুযোগের পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করতে দেরি করেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি নিজেই তিনি আজ ফোন করেন শিন্দেকে।
রাষ্ট্রপতিকে শুভেচ্ছা নয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দের। ছবি: পিটিআই
কিন্তু জিটিএ-র শপথগ্রহণের দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজের লোকসভা কেন্দ্র সোলাপুরে পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান রয়েছে। শিন্দে তাই এ দিন কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রীকে। নিজের বদলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে পাঠানোর প্রস্তাব দেন তিনি। কিন্তু মমতা বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেন নিজেই যান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, শিন্দেও মমতার আমন্ত্রণ রক্ষা করতে আগ্রহী। এই পরিস্থিতিতে কোনও ভাবে সোলাপুরের অনুষ্ঠানের রদবদল করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে দার্জিলিঙে যাওয়া সম্ভব হয় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান শিন্দে-ঘনিষ্ঠরা।
খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চুক্তি সইয়ের সময় হাজির থাকা সত্ত্বেও জিটিএ-র অনুমোদনের ব্যাপারে চিদম্বরমের মন্ত্রকের গড়িমসিতে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দার্জিলিং সমস্যাকে যথেষ্ট গুরুত্বও দিয়ে এসেছেন চিদম্বরম। কখনও তিনি গোর্খা জনমুক্তির মোর্চার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে। আবার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নে বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরিরা বেঁকে বসলে, তাঁদের নির্বাচনে অংশ নিতে অনুরোধও জানান তিনি। সেই সূত্র ধরেই জিটিএ-র শপথগ্রহণে হাজির থাকার জন্য চিদম্বরমকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মমতা। অন্যান্য প্রসঙ্গে চিদম্বরমের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়া সত্ত্বেও।
কিন্তু তিক্ততা চরমে পৌঁছয় একেবারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মুখে। জুলাই মাসের শুরুতেই কলকাতায় গিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসার কড়া সমালোচনা করেন চিদম্বরম। তাতে ক্ষুব্ধ হন মমতা। চিদম্বরমের তথ্য ভুল বলে জানিয়ে তাঁকে চিঠিও লেখেন। তার আগে জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র (এনসিটিসি) নিয়েও চিদম্বরমের সঙ্গে রাজ্যগুলির সংঘাত বাঁধে। সেখানে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজ্যগুলিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মমতা। অথচ মুখ্যমন্ত্রী ভালই জানেন নকশাল দমন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রের সাহায্য প্রয়োজন হবে রাজ্যের। সে কারণেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে চিদম্বরম সরে যেতেই নতুন করে সম্পর্ক তৈরিতে তৎপর হয়েছেন মমতা।
শিন্দেও ইউপিএ-সরকারের প্রধান শরিক তৃণমূলের নেত্রী হিসেবে মমতার গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা মনে করছেন, শিন্দের আমলে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের আশঙ্কা কম। কারণ তিনি বিতর্ক এড়িয়ে চলার পক্ষপাতী। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব নেওয়ার পর, এনসিটিসি-র মতো বিষয়ে রাজ্যগুলির আপত্তি প্রসঙ্গে শিন্দে বলেন, “মন্ত্রিসভায় থাকার সুবাদে পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার সম্যক ধারণা রয়েছে। রাজ্যগুলির সঙ্গে সম্পর্ক সহজ ও মসৃণ হওয়া প্রয়োজন।”
শিন্দে-ঘনিষ্ঠদের মতে, সে কারণেও মমতার আমন্ত্রণ রক্ষা করতে আগ্রহী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.