এক কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু সেই টাকায় শিশুদের স্কুলের রান্নাঘর আদৌ তৈরি করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশাসনের কাছে কোনও তথ্য মেলেনি। মানবাজারের বিডিও-র কাছে তথ্য জানার অধিকার আইনে ব্লক এলাকার শিশুশিক্ষা কেন্দ্র ও প্রাইমারি স্কুলগুলিতে রান্নাঘর তৈরি করা সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়ে এক ব্যক্তি আবেদন করার পরেই এই ঘটনা নজরে এসেছে। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএম পরিচালিত মানবাজার পঞ্চায়েত সমিতি রান্নাঘর তৈরি করা নিয়ে দুর্নীতি করেছে। সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ মানতে চায়নি।
মানবাজারের বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী পেলারাম মুর্মু সম্প্রতি তথ্য জানার আইনি অধিকার বলে বিডিওর কাছে এক লিখিত আবেদনে মানবাজার ব্লক এলাকায় কতগুলি প্রাইমারি ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে এবং তার মধ্যে কতগুলিতে ‘কিচেন শেড’ নির্মাণ করা হয়েছে তার বিশদ তথ্য জানতে চান। মানবাজারের বিডিও তথা পাবলিক ইনফর্মেশন অফিসার সায়ক দেব লিখিত ভাবে তাঁকে জানিয়েছেন, এই ব্লক এলাকায় ৭৪টি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র ও ১২৩টি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। তার মধ্যে ক’টি স্কুলে রান্নাঘর নির্মিত হয়েছে, ক’টি অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে কিংবা আদৌ কোনও কাজ হয়েছে কি না-- এ সম্পর্কে কোনও তথ্য ব্লক অফিসে নেই। পরে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিডিও বলেন, “বিভিন্ন ফাইলপত্র দেখে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালের গোড়ায় স্কুলগুলিতে রান্নাঘর তৈরি করার জন্য পূর্বতন পঞ্চায়েত সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে এ জন্য এক কোটি টাকার বেশি পঞ্চায়েত সমিতি বরাদ্দ করে। যদিও এই কাজের জন্য টেন্ডার করা হয়েছিল কি না পরিষ্কার নয়। টেন্ডার করার কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে টেন্ডার করে কাজ দেওয়ার নিয়ম।” প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১০ এর ৮ জুন ব্লক অফিস থেকে কাজগুলি শেষ করার জন্য নোটিশ জারি করা হয়।
তৃণমূলের মানবাজার ব্লক যুব সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তীর অভিযোগ, “সিপিএমের নেতারা তাঁদের পেটোয়া ঠিকাদারদের বিনা টেন্ডারে এই কাজ দিয়ে ওই টাকা লুটেপুটে খেয়েছে। এখন আমরা ওই দুর্নীতির তদন্ত দাবি করছি।” পেলারামবাবু বলেন, “জেলাশাসকের কাছে এ বার তদন্তের জন্য আর্জি জানাব।” মানবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের নীলিমা মাণ্ডির দাবি, “আগের পঞ্চায়েত সমিতি এই কাজের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাই এ ব্যাপারে আমি তেমন কিছু জানি না।” মানবাজার পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সিপিএমের সুধারানি সিংহ এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা কমিটির সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ চৌধুরী বলেন, “আমাদের দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে বিধিভঙ্গ হয়ে থাকলে প্রশাসন তদন্ত করুক।” বিডিও জানান, এ ব্যাপারে তাঁর অনুসন্ধান শুরু করেছেন। |